অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার প্রতিষেধক না রাজনীতির হাতিয়ার, বাজেটে কী কী থাকতে পারে দেখুন
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: হালুয়ার তৈরীর বদলে এবার অর্থমন্ত্রক ও সংসদের কর্মীদের মিষ্টির প্যাকেট পাঠিয়ে কেন্দ্রীয় বাজেট তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে। যদিও এবারের বাজেট হবে পেপারলেস। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন গত বারের মতো এবারেও ট্যাব দেখে বাজেট পাঠ করবেন সংসদে।
নির্দিষ্ট একটি অ্যাপে কেন্দ্রের বাজেট পুরোপুরি দেখা যাবে। সরকারের দাবি করোনা সংক্রমনের কথা মাথায় রেখেই বাজেটকে পেপারলেস করা হয়েছে। যদিও বিরোধী শিবির এই সিদ্ধান্তে খুশি নয়। তাদের একাংশের দাবি বিরোধীদের ধোঁকা দিতেই এইসব কৌশল করছে সরকার।
বাজেট ডিজিটাল হওয়া নিয়ে বিতর্ক থাকলেও তা ততটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। বরং দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মোদি সরকার নতুন কোনও দিশা দেখাতে পারে কিনা সেই দিকেই তাকিয়ে আছে সকলে। বিশেষ করে দেশের কর্মসংস্থানের যে করুণ চিত্র একাধিক সমীক্ষায় সামনে উঠে এসেছে তার প্রতিষেধক বাজেটে থাকে কিনা সেদিকে অধীর আগ্রহে তাকিয়ে আছে দেশের যুব সমাজ।
সেই সঙ্গে ব্রিটিশ সংস্থা অক্সফ্যামের রিপোর্টে স্পষ্ট হয়েছে দেশের আর্থিক বৈষম্যের ভয়াবহ ছবি। এই অবস্থায় আম-জনতার বিপুল প্রত্যাশা সরকারের উপর।
অর্থনীতিবিদদের একটা বড় অংশ চাইছে কেন্দ্র এবারের বাজেটে একেবারে তলানিতে থাকা ৪০ কোটি মানুষের জন্য নির্দিষ্ট করে কিছু ভাবুক। সেই সঙ্গে দেশের অর্থনীতির ঝিমিয়ে পড়া ভাব কাটিয়ে তাকে চাঙ্গা করতে পরিকাঠামো খাতে সরকারের আরও ব্যয়বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে বিভিন্ন মহল থেকে।
এছাড়া অতি ধনীদের উপর করের বোঝা বাড়িয়ে অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়ের দাবি তুলেছে অনেক বিরোধী দল। যদিও অতি ধনীদের উপর নীতিগত কারণেই করের বোঝা বাড়াবে না বলেই ধারণা।
এদিকে দেশের আমজনতা থেকে চিকিৎসক মহলে, সকলেই চাইছেন করোনার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সরকারি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করুক সরকার। বস্তুত স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের ঝোঁক কাটিয়ে সরকারি উদ্যোগ আরও বাড়ানোর দাবি উঠেছে।
বামপন্থীদের দাবি বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা ব্যয়ে বিপুল কাটছাঁট করে জনকল্যাণমূলক খাতে বেশি অর্থ খরচ করা হোক। তবে সব সময় চিন ও পাকিস্তানের জুজু দেখিয়ে চলা বিজেপি সরকার প্রতিরক্ষা ব্যয় কমবে না বলেই অনুমান।
এদিকে উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচ রাজ্যের ভোটের কথা মাথায় রেখে সেখানে বিশেষ কিছু প্রকল্প ঘোষণা করা হতে পারে। এই নিয়ে অবশ্য কংগ্রেসের নেতৃত্বে ওই রাজ্যগুলির বিরোধী দলেরা আগেই দাবি জানিয়েছিল যে বাজেট পেশ পিছিয়ে দেওয়া হোক।
এদিকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণেই দেশের কৃষকদের জন্য কিছু চমক থাকতে পারে বাজেটে। কারণ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্র কৃষকদের পাশে টানার চেষ্টা করতে পারে। তবে এতো সব কিছুর মধ্যে অর্থনীতিবিদদের চিন্তায় ফেলছে দেশের আর্থিক ঘাটতি। অনেকেরই অনুমান রাজনৈতিক স্বার্থের কথা মাথায় রাখতে গিয়ে আর্থিক ঘাটতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না সরকার।