ঘূর্ণিঝড় বিধ্বস্ত বাংলা, ২৬মে পর্যন্ত স্পেশাল ট্রেনের যাতায়াত স্থগিত রাখার অনুরোধ রাজ্যের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: ঘূর্ণিঝড় আমফানের আঘাতে বিপর্যস্ত অবস্থা রাজ্যের। বহু মানুষ গৃহহীন।বহু মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রয়েছেন খোলা আকাশের নিচে।
রাজ্য সরকারের তরফে এই বিপর্যস্ত মানুষদের উদ্ধার ও তাদের ত্রাণের কাজকেই প্রাথমিক দায়িত্ব হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
তাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করতে দিবা রাত্র পরিশ্রম করছে রাজ্যের হাজার কর্মী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্য তথা রাজ্যের নেতা-মন্ত্রীরা।
এই অবস্থায় ভিন রাজ্য থেকে ফিরতে চাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের চাপ রাজ্য সরকারের পক্ষে নেওয়া সম্ভব নয়। আর সে কারণেই শনিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিল আপাতত রাজ্যে স্পেশাল ট্রেনের চলাচল বন্ধ রাখা হোক।
আগামী ২৬ তারিখ পর্যন্ত কোনও স্পেশাল ট্রেন রাজ্যে আসুক চাইছেনা নবান্ন।
এদিন রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বলা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের অবস্থা নিয়ে রাজ্য সরকার সহানুভূতিশীল হলেও এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তাদের রাজ্যে ফেরাতে অপারক।
কারণ এই মুহূর্তে রাজ্য সরকারকে ত্রাণ এবং পূনর্বাসনের কাজে অনেক বেশি করে মনোনিবেশ করতে হচ্ছে। রাজ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে। তাই তাদের পরিষেবা দেওয়াটাই এই মুহূর্তে প্রাথমিক কর্তব্য বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। এই কদিন একটু পরিস্থিতি সামলে উঠলে আবার পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।
মুখ্যসচিবের এও বলেছেন,পরিযায়ী শ্রমিকরাও নিশ্চয়ই এই মুহূর্তে রাজ্যবাসীর দুর্ভোগের কথা বুঝবেন। সেই জন্য তাদের কাছেও কিছুটা সময় চেয়েছেন মুখ্য সচিব।
উল্লেখ্য, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই এবং আমফানের উদ্ধারকাজ দুটি বিপরীতমুখী লড়াই। এই মুহূর্তে এই দুই কাজই রাজ্য সরকারকে সুনিপুণ দক্ষতার সঙ্গে করতে হচ্ছে।
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও রাজ্য সরকারের এই লড়াইকে কুর্নিশ করেছেন। এই অবস্থায় তাই কেন্দ্রের সহযোগিতা চাইছে রাজ্য।
আসলেই পরিযায়ী শ্রমিকদের শুধু রাজ্যে ফেরানোই নয়, এর সঙ্গে জড়িত তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কোয়ারেন্টাইন সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।কোথাও সামান্যতম অসাবধানতা রাজ্যবাসীর জন্য বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। আর সে কারণেই দুই কাজ সতর্কতার সঙ্গে করতে চায় রাজ্য সরকার।
যদিও এই অবস্থায় বিরোধীরা কি প্রতিক্রিয়া দেবে সে বিষয়ে এখনও কিছু জানা যায়নি। আমফান এবং করোনা এই যৌথ সংকটে বিরোধীদের সঙ্গ চাইছে রাজ্য সরকার। কারণ এই লড়াই আসলে বাংলার মানুষের লড়াই।
রাজ্য সরকার মনে করছে এটা কোনও রাজনৈতিক যুদ্ধের সময় নয়, বরং এটা মিলিতভাবে কাজ করার সময়।
মুখ্যসচিবের চিঠির পর এবার রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে আপাতত ২৬ তারিখ পর্যন্ত কোনও শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন রাজ্যে পাঠানো হবে না।