Strand Road Fire- যথাযথ ছিল না অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থা, স্বীকার রেলকর্মীদের- মেলেনি বিল্ডিং-র ম্যাপ মানলেন জেনারেল ম্যানেজার

দ্য কোয়ারি ওয়েবেডেস্কঃ স্ট্র্যান্ড রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন মোট ৯ জন। তাদের মধ্যে চারজন দমকলকর্মী, দুজন আরপিএফ, একজন এএসআই ও একজন রেলের আধিকারিক ও এক কর্মী। পোস্টমর্টেম রিপোর্ট সূত্রে জানা যাচ্ছে সাতজন অগ্নিকাণ্ডে ঝলসে গিয়েছেন। বাকি দুজনের শরীরে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার ফলে মৃত্যু হয়েছে।

স্ট্র্যান্ড রোডের বহুতলে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে। আজ ভোর চারটে পনেরো মিনিট নাগাদ নিয়ন্ত্রণে আসে আগুন। অর্থাৎ প্রায় ১০ ঘণ্টা দমকল কর্মীদের নিরলস চেষ্টায় নিয়ন্ত্রনে আসে আগুন।

আজ ঘটনাস্থলে যাবে ফরেনসিক দল। রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিঙের ১৩ তলায় বিপজ্জনক ভাবে ছড়িয়ে রয়েছে তারের কুণ্ডলী,ফলস সিলিং, প্লাইউডের কিউবিকল। যার কারণেই আগুন আরও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলে দমকল আধিকারিকরা জানাচ্ছেন।

দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু জানিয়েছেন, ওই বহুতলের অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না। ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ সহ একটি করে সরকারি চাকরির কথা ঘোষণা করেছেন।

কোকেনকাণ্ডে আরও এক মহিলাকে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটের মাধ্যমে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন। একইসঙ্গে টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, যাদের মৃত্যু হয়েছে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিপর্যয় তহবিল থেকে তাদের পরিবার পিছু ২ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। গুরুতর আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।

কপাল জোড়ে বেঁচে গিয়েছে নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের ১৩ তলার বেশ কয়েকজন রেলকর্মী। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই বিল্ডিং থেকে বেরিয়ে আসেন তারা। তারাও স্বীকার করে নিয়েছেন ১৩ তলায় অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ছিল নামেই। আদতে কোনও কাজ সেই যন্ত্র করত না।

প্রসঙ্গত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিলেন। তিনি জানান, এই বহুতলের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দমকলকর্মীরা কাজের সুবিধার্থে রেলের থেকে বাড়িটির ম্যাপ চেয়েছিল। তবে সেই ম্যাপ দেওয়া হয়নি। এদিন সে কথা স্বীকার করে নেন পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশী।

পূর্ব রেলের অফিসে এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করেছে হেয়ার স্ট্রেট থানার পুলিশ। 304(A) অর্থাৎ গাফিলতির কারণে মৃত্যু ও দমকল আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, সোমবার সন্ধ্যে বেলা ৬.১০ নাগাদ স্ট্র্যান্ড রোডে পূর্ব রেলের নিউ কয়লাঘাট বিল্ডিংয়ের ১৩ তলায় সিগন্যাল এন্ড টেলিকমিউনিকেশন সেকশনে আগুন লাগে। দ্রুত সে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ১২ তলাতেও। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়দমকলের পঁচিশটি ইঞ্জিন।

আগুনের উৎস স্থল খুঁজতে সেইসময় লিফটে করে ১২ তলায় পৌঁছন ৭ জন। যাদের মধ্যে চারজন দমকল কর্মী এবং রেল আধিকারিক সহ ছিলেন হেয়ার স্ট্রিট থানার এএসআই। সেখানেই আগুনে ঝলসে মৃত্যু হয় তাদের।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দায় কার? কেনই বা অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ ছিল না? তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। সেই সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে।

সম্পর্কিত পোস্ট