ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে: এবিটিএ

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: চলতি কোভিড পরিস্থিতিতে মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া কি উচিত হবে? এ বিষয়ে সাধারণ জনতার মতামত জানতে চেয়েছে রাজ্য সরকার। ইমেল মারফত এবিষয়ে ছাত্র-ছাত্রী, অভিভাবক-সহ রাজ্যের যে কোনও নাগরিক মতামত জানাতে চেয়েছে শিক্ষা দফতর।

জনতার মত চাওয়া হলেও কেন শিক্ষকদের মতামচত চাওয়া হল না? শিক্ষা দফতরের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকদের একাংশ।এ দিকে, সিবিএসই এবং আইসিএসসির দেখানো পথে বাংলায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল করার চেষ্টা হচ্ছে।আর এই প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হলে আদতে ক্ষতির মুখে পড়বে বাংলার ছাত্র-ছাত্রীরা।

সোমবার এমনই আভিযোগ করেছে বাম সমর্থিত শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ।এর পাশাপাশি মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক নিয়ে সরকারী অবস্থানের সমালোচনা করেছে সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই।

ইতিমধ্যেই এবিটিএর তরফে এই নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবসুকে চিঠি দিয়েছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, সর্বভারতীয় বোর্ডগুলির সামগ্রিক ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা রাজ্যের তুলনায় অনেক কম। একইভাবে ওই স্কুলগুলির সামগ্রিক পরিকাঠামো রাজ্যের থেকে ভালো তাই এই অবস্থায় রাজ্যের ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়বে।

এদিন এবিটিএর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন জানিয়েছেন, পরীক্ষা যদি বাতিল করে দেওয়া হয় তাহলে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যতের ক্ষতি হবে। এরজন্য রাজ্য সরকার দায়ী থাকবে। তিনি আরও বলেন, রাজ্য সরকার চাইলে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে পারত। তা না করে অহেতুক পরীক্ষা বাতিলের জন্য তাড়াহুড়ো করা হচ্ছে।

শুধু এবিটিএ নয়, এ বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, মাধ্যমিক-উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষা দফতরের তরফে একটি নোটিস জারি করে ইমেল মারফত মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে।

আমরা বিস্মিত, মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার বিষয়ে জনগণ, অভিভাবক, ছাত্র-ছাত্রী সহ অন্যান্যদের মতামত চাওয়া হলেও যাঁরা বিদ্যালয়গুলিতে এইসব ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিয়ত পরিচর্যা করে চলেন, সেই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কোন মতামত চাওয়া হয়নি।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কি মতামতের কোন মূল্য নেই? এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক। রাজ্য সরকারের এই ভূমিকাকে তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি।

একইভাবে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, ”মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার ভবিষ্যত্ নিয়ে ছাত্র, অভিভাবক, সাধারণ জনগণের মতামত জানতে চাওয়া হলেও শিক্ষকদের বা স্বীকৃত শিক্ষক সংগঠনগুলির মতামতের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এছাড়া মাত্র ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে সকলের মতামত জানাতে বলা হয়েছে। ‘যশ’ প্রভাবিত সুন্দরবন-সহ রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকাগুলি থেকে এত তাড়াতাড়ি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে সকলের মতামত জানানো অসম্ভব। সাধারণ ছাত্র-অভিভাবকদের কাছে ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও এতটা সাবলীল নয়।

ফলে, শিক্ষা দফতরের কাছে এই মতামত জানতে চাওয়ার সময়সীমা বাড়িয়ে দেওয়ার আবেদন করছি। আমরা চাই, হোম সেন্টারে, প্রশ্নপত্রের পূর্ণমান ৫০ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া সহ কিছুটা শিথিলতা আনা হলেও জুলাই এর শেষ বা আগস্টের প্রথমে পরীক্ষা হোক।

বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হোক পরিবহণ ব্যবস্থা ও চিকিত্সকদের পরামর্শ মতো কোভিড বিধি পালনের উপর। প্রয়োজনে পরীক্ষা ক’দিন অন্যান্য অফিস-আদালত ও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা হোক।”

সম্পর্কিত পোস্ট