কলকাতা শহরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের দায় পুরসভার নয়, সিইএসসির শোভনের সমালোচনার জবাব ফিরহাদের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: তারই প্রাক্তনী শোভন চট্টোপাধ্যায় আমফান পরবর্তী পরিস্থিতিতে কলকাতার অবস্থা নিয়ে নাম না করে প্রশাসক বোর্ডকে দুষেছিলেন।
তার মতে, সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই ভুগতে হচ্ছে কলকাতাবাসীকে। যদিও রবিবার নাম না করে তাঁর যাবতীয় অভিযোগ খণ্ডন করেছেন কলকাতা পুর নিগমের মুখ্য প্রশাসক তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
তার মতে, আমফানের মত এত বড় বিপর্যয় একদিনে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তিনি এও বলেছেন, এটা রাজনীতি করার সময় নয়। তবুও যারা এখন দোষ ধরতে নেমেছেন, তারা আদতে রাজনীতি করছেন। ঘোলা জলে মাছ ধরছেন।
এদিন কলকাতাবাসীর ভোগান্তির জন্য দায় সিইএসসির উপরে চাপিয়ে দিয়েছেন তিনি। ফিরহাদের কথায়, সিইএসসি জন্য মানুষের অসুবিধা।
গাছ কাটার জন্য লাইন ফেরাতে দেরি হয়নি বরং কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল, সিইএসসি না আসা পর্যন্ত তাই গাছ কাটা সম্ভব হয়নি। তিনি এও বলেছেন, সিইএসসি আমাদের যে লিস্ট দিয়েছে সেই মতই কাজ করছি আমরা। গাছ কাটার জন্য বিদ্যুৎ দেওয়া যায়নি এমন কথা সত্যি নয়।
ফিরহাদ হাকিম আরও বলেন, কলকাতা পুরসভায় গাছ কাটার জন্য আরও লোক নিয়োগ হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে গাছ কাটার জন্য 360 জন অতিরিক্ত লোক নিয়োগ করছে পুরসভা।
বিদ্যুৎ নিয়ে মানুষের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এদিন ফিরহাদ বলেন, সিইএসসি রাজ্য সরকারের আন্ডারে নয় বা কলকাতা পুরসভার আন্ডারেও নয়।
কাজেই সিইএসসির ব্যর্থতার দায় সরকারের হতে পারে না। তাও মানুষের সুবিধার্থে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সিইএসসি দপ্তরে গিয়েছিলেন। তারা কথা দিয়েছেন সমস্ত জায়গায় লাইন চলে আসবে কিছুদিনের মধ্যেই। আজকে নবান্নতে সিইএসসি জানিয়েছে, ইতিমধ্যে 50% জায়গায় লাইন চলে এসেছে।
ফিরহাদের অভিযোগ, ঝড়ের পর কিছু কিছু জায়গায় আমাদের লোক গিয়েও লাইন বন্ধ করতে পারেননি। খবর দেওয়ার দুদিন পর সিইএসসি গিয়ে সেখানে লাইন বন্ধ করেছে। গাছ কাটার তালিকা দেয়নি সিইএসসি। মানুষের অসুবিধা হয়েছে তার জন্য আমরা ক্ষমাপ্রার্থী। শুধুই গাছ কাটা হয়নি বলে সমস্যা এমন নয়।
তিনি আরও বলেন, সিইএসসি আমাদের জানিয়েছে তাদের লোকের অভাব ছিল। দোষারোপ করার সময় এটা নয় । আগাম পরিকল্পনা থাকলেও গাছ কাটতে সময় লাগে।
এদিন কলকাতার রাস্তায় সেনা নামায় দ্রুত পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে মেনে নিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাবাহিনীর কাছে সাহায্য চাওয়ার সিদ্ধান্তের সমর্থন করে তিনি বলেন, সেনার সাহায্য যথেষ্ট কাজে লেগেছে।
দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর সঙ্গে সেনা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি আমরা। মুখ্য সচিব আজ সিইএসসি সঙ্গে কথা বলেছে। সব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় যান চলাচল করছে। এদিনও ফিরহাদ হাকিম সাধারণ মানুষকে আরো কিছুটা ধৈর্যশীল হতে বলেছেন।
দ্রুত স্বাভাবিকতার পথে ফিরছে কলকাতা। তবে শহরের জনজীবন সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
একইসঙ্গে এদিন সমালোচকদের যোগ্য জবাব দিয়েছেন ফিরহাদ। এদিন তিনি বলেন, দেশ করোনায় আক্রান্ত, সেটা মোদির দোষ হতে পারে না। সবাই ঝাপিয়ে পড়ে এখন মানুষকে রক্ষা করতে হবে। এখন রাজনীতি করার সময় নয়। এখন মানুষকে সার্ভিস দেওয়ার সময়। তাঁরাই এই সময় দোষ ধরেন যাঁরা আসলে ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন।