৭২ ঘণ্টা পার, এখনও বিদ্যুৎহীন বারাসাতের বহু এলাকা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক : আমফানের তান্ডবে বারাসতের বিস্তীর্ন অঞ্চল এখনও বিদ্যুৎ হীন। তীব্র সঙ্কট পানীয় জলেরও। শুক্রবারই বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের দাবিতে বারাসতের হৃদয়পুর স্টেশন রোডে প্রায় তিন ঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান ৩২ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
এবার ৭২ ঘন্টার ওপরে বিদ্যুৎ ও পানীয় জল না থাকায় বারাসতের ন’পাড়ায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন ৩ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।
আজ সকাল সাড়ে ন’টা থেকে প্রায় পৌনে এক ঘন্টা চলে এই অবরোধ বিক্ষোভ।আন্দোলনে সামিল হন পুরুষ, মহিলা, পড়ুয়া নির্বিশেষে সকলে।
দীর্ঘক্ষন অবরোধের জেরে জাতীয় সড়কে যানচলাচল পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে যায়।সারি সারি দাঁড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন যানবাহন। অবরোধ চলাকালীন বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের একটি গাড়ি সেখান থেকে যাওয়ার চেষ্টা করলে সেই গাড়িটিকেও আটকে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন আন্দোলনকারীরা।
বিদ্যুৎ সাপ্লাইয়ের কর্মীদের সঙ্গে চলে বাদানুবাদও। যার জেরে সাময়িক উত্তেজনাও দেখা দেয় সেখানে। পরে,বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে এসে পরিস্থিতির সামাল দেন বারাসত থানার IC দীপঙ্কর ভট্টাচার্য।সন্ধ্যা ছ’টার মধ্যে বিদ্যুৎ পরিষেবা সচল করার প্রতিশ্রুতি দিলে আন্দোলন প্রত্যাহার করে নেন এলাকার বাসিন্দারা।এরপরই ধীরে ধীরে যানচলাচল স্বাভাবিক হয় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে।
ঘূর্ণিঝড় আমফানের তান্ডবে জনজীবন কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।কাঁচা বাড়ির ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি অসংখ্য বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে।যার ফলে জেলাসদর বারাসত সহ আরও কিছু এলাকা এখনও বিদ্যুৎ হীন অবস্থায় রয়েছে।
বিদ্যুৎ না থাকার কারনে বিভিন্ন জায়গায় পানীয় জলের হাহাকারও শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ দপ্তর যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামতের কাজে হাত দিলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।
পর্যাপ্ত কর্মীর অভাবে টানা ৭২ ঘন্টা পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায়নি।আমফানের ধ্বংস লীলায় একদিকে বিস্তীর্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই।তার ওপর তীব্র জলের সঙ্কট।টানা ৭২ ঘন্টার বেশি সময় পরেও পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ধৈর্যের বাঁধ ভাঙতে শুরু করেছে এলাকার বাসিন্দাদের।
তার ফলে বারাসতের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তায় নেমে আন্দোলন করতে বাধ্য হচ্ছেন এলাকাবাসীরা।সেই জায়গায় এবার বারাসতের ৩ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারাও বিদ্যুৎ ও পানীয় জলের দাবিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন।
এবিষয়ে মলয় দে নামে এক বাসিন্দা বলেন,”৩ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের কিছু জায়গায় বিদ্যুৎ থাকলেও অধিকাংশ এলাকায় টানা ৭২ ঘন্টার বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ নেই। বিদ্যুৎ না থাকায় জলের সমস্যা মারাত্মক আকার ধারন করেছে।পরিবার নিয়ে কি কষ্টের মধ্যে আমরা রয়েছি,তা আমাদের থেকে ভালো আর কেউ জানেনা।পড়ুয়াদের পড়াশোনাতেও ব্যাঘাত ঘটছে।বিদ্যুৎ সাপ্লাই অফিসে এসে বারবার ঘুরে যাচ্ছি।কিন্তু কেউই কোনও কর্ণপাত করছে না।তাই,বাধ্য হয়েই আমাদের পরিবার নিয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে”।
পুলিশ প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি মতো সন্ধ্যা ছ’টার মধ্যে বিদ্যুৎ না আসলে ফের রাস্তায় নেমে আন্দোলনে নামারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।