দিল্লি হিংসা মামলায় দীর্ঘদিনের স্থগিতাদেশ ন্যায়বিচারহীন, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক : দিল্লি হিংসা মামলায় দীর্ঘদিনের স্থগিতাদেশ ন্যায়বিচারহীন, পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আগামী শুক্রবার এই মামলা শোনার জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দিয়েছে।

ওই নির্দেশে উত্তরপূর্ব দিল্লির হিংসা সম্পর্কিত মামলাগুলি ওইদিন শোনার জন্য বলেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি বিআর গাভাই এবং সূর্যকান্তের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চের প্রধান, প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদে এই বিরোধের শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য দিল্লি হাইকোর্টকে তাৎক্ষণিকভাবে মোকাবিলার জন্য অনুরোধ করেন।

দিল্লির দাঙ্গায় এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে এবং ২০০ জনেরও বেশি জখম হয়েছেন।

এদিন প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা মনে করি দিল্লি হাইকোর্টের এত দীর্ঘ সময়ের স্থগিতাদেশ ন্যায়বিচারহীন। বিষয়টি হাইকোর্টের বিচারাধীন। এক্তিয়ারে নেওয়ার কোনও বিষয় নয়। তবে এটি দ্রুততার সঙ্গে গ্রহণ করা যেতে পারে।

প্রধান বিচারপতির জবাবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, পরিস্থিতিটি অনুকূল নয়। আমরা ৭০০০ ভিডিও পেয়েছি। এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন আমরা পদক্ষেপ নেব।

এর পাল্টা প্রধান বিচারপতি বোবদে বলেন, আমরা মনে করি না যে, আদালতের আদেশ দিয়ে হিংসা রোধ করা যেতে পারে। একটি আদেশে, নির্দিষ্ট ব্যক্তি রয়েছে। তবে এই ধরনের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লোক নেই।

অন্যদিকে, বিজেপি নেতাদের দেওয়া ঘৃণ্য বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে আবেদনকারীদের আইনজীবী কলিন গঞ্জালভেস বলেন, প্রধান ব্যক্তিদের কারাগারে বন্দী করা হলে উত্তরপূর্ব দিল্লিতে কোনও দাঙ্গা হত না।

এর পাল্টা প্রধান বিচারপতি বোবদে বলেন, দাঙ্গার কিছু অভিজ্ঞতা আমাদেরও রয়েছে। আপনার বক্তব্য একেবারে সঠিক নয়। নেতাদের কারাগারে আটক করলে দাঙ্গা বেড়ে যেতেও দেখা গিয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দিল্লি হাইকোর্ট দিল্লি হিংসা মামলার শুনানির উপর দীর্ঘদিনের স্থগিতাদেশ দেয়। ঘৃণ্য বক্তব্য রেখে হিংসা ছড়ানোর দায়ে বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর, প্রবেশ বার্মা, কপিল মিশ্র সহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভূক্তির আবেদন সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করে।

জানা গিয়েছে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির দাঙ্গার ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৬৯টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে এবং দাঙ্গার দায়ে ৩৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে অপরাধ দমন শাখার বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) এখনও দাঙ্গার ষড়যন্ত্রকারীদের, হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের, বা যারা ডিসিপি (শাহদারা) অমিত শর্মাকে আক্রমণ করেছে, তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি।

এখনও পর্যন্ত দাঙ্গার যে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব পাওয়া গিয়েছে তাতে ৭৯ টি বাড়ি আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে, ১৬৮ টি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং ৩২৭ টি দোকান পুড়ে গিয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট