“অন্য কেন্দ্রের প্রার্থী জিতেছে, আমাদের কেন্দ্রের প্রার্থী হারলে হারুক, নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ হয়েছে”- বিস্ফোরক শুভেন্দু
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির শ্লোগান ছিল ‘১৯ এ হাফ, ২১এ সাফ’। ৪২ টি সিটের মধ্যে ১৮ টি সিট গেরুয়া রঙে রাঙিয়ে যায়। যার মূল কারিগর ছিলেন বঙ্গ রাজনীতির অন্যতম চাণক্য মুকুল রায়।
এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে লক্ষ্য রেখে বিজেপির নতুন স্লোগান আকাশ বাতাসে ধ্বনিত হতে থাকে “ইসবার ২০০শো পার”। যদিও সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে গিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির। ২৯৪টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৭৭ টি আসনে সীমাবদ্ধ থাকে গেরুয়া বাহিনী। তার মধ্যে দুটি কেন্দ্রে বিজেপি সাংসদ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। ফলে বর্তমানে সংখ্যাটা ৭৫।
ভোটের ফল প্রকাশের প্রায় দু মাস কেটে গিয়েছে। তার পরেও এই শোচনীয় পরাজয় এখনো মেনে নিতে পারেনি ভারতীয় জনতা পার্টির অনেক নেতাই। তার মধ্যেই দলবদলের খেলা অব্যাহত। ঘরে বাইরে বঙ্গ বিজেপির অনেকেই উষ্মা প্রকাশ করেছেন।
তৃণমূলে ফিরেছেন সপুত্র মুকুল রায় সহ অনেকেই। পা বাড়িয়ে রয়েছেন আরো অনেকে। তারই মাঝে বঙ্গ নির্বাচনে এই শোচনীয় পরাজয়ের পোস্টমর্টেম জারি রয়েছে গেরুয়া শিবিরে। চন্ডিপুরে আজ এক দলীয় সভায় যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কর্মীসভার মূল লক্ষ্য ছিল বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিপর্যয়ের কারণ। সেখানে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিরোধী দলনেতা।
বললেন ” দলের অনেকেই নিজেদের প্রার্থীদের সম্পর্কে খারাপ কথা বলেছে। অনেকেই আত্মতুষ্টিতে ভুগেছে। যার কারণে দলের প্রার্থীরা হেরে গিয়েছে। অন্য কেন্দ্রের প্রার্থী জিতেছে। আমাদের কেন্দ্রের প্রার্থী হারলে হারুক। এমন মন্তব্য বা মনোভাব নিয়ে অনেকেই চলেছেন। যার কারণে নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ হয়েছে। ”
Danish Siddiqui: জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কবরস্থানে শায়িত হবে প্রাক্তনীর দেহ
এখানেই থেমে থাকেননি শুভেন্দু অধিকারী। উদাহরণ দিয়ে বলেন, “অনেকে ধরেই নিয়েছিলেন ২৯৪ এর মধ্যে ১৭০ -১৮০ টি সিট পেয়ে যাব। খেজুরি, নন্দীগ্রাম, ভগবানপুর, নন্দকুমার জিতে যাবো চন্ডিপুর হারলে হারুক। এই আত্মতুষ্টি পরাজয়ের অন্যতম কারণ।”
২০২১ এর লোকসভা নির্বাচনে চন্ডিপুর থেকে জয়ী হয়েছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী সোহম। এদিন শুভেন্দু অধিকারী কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, “নন্দকুমার তো জিতে গেছে, ভগবানপুর জিতে গেছে, নন্দীগ্রাম জিতে গেছে, আমারটা হারলে হারুক।এই মনোভাবের জন্যই পরাজয়।
একসঙ্গে এদিন মুকুল রায়কে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি। শুভেন্দুর কথায়, ভাবছেন “এ চলে গেল, ও চলে গেল, এতে বিচলিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। মুকুলবাবু আগে কোনো জায়গা থেকে জিততে পারেনি। ২০০১ সালে জগদ্দলে প্রার্থী হয়ে পরাজিত হয়েছিলেন। এবার যেখানে বিজেপি’র লোকসভা ভোটে লিড ছিল ৫০ হাজার। ওই আসনে সহায়কের কাজ করেন এমন লোককে দাঁড় করালেও ৫০ হাজার ভোটে জিতত। সেই আসনে ভারতীয় জনতা পার্টির সিনিয়র নেতার মর্যাদা দিয়ে তাকে দাঁড় করিয়েছিলেন। ছেলের ব্যবসা রক্ষা করে তিনি বিজেপি ছেড়েছেন। তাতে আমাদের কি? আগামী দিনে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
শুভেন্দু অধিকারীর এহেন মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে বঙ্গ বিজেপি-র নেতৃত্ব। পাল্টা সুর চড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কথায়, “বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বরা শুধু নয়, শুভেন্দু অধিকারী নিজেও আত্মতুষ্টিতে ভুগছিলেন। যার ফল পেয়ে গিয়েছেন হাতেনাতে। ২০২৪ এ কেন্দ্র থেকে ক্ষমতাচ্যুত হবে ভারতীয় জনতা পার্টি।”