তালিবান সরকারের শরিক হাক্কানি নেটওয়ার্ক সক্রিয় নেপাল ও উত্তরবঙ্গে
হাক্কানি নেটওয়ার্ক প্রধান আফগানিস্তানের অর্থমন্ত্রী হবে
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: আফগানিস্তানে জবরদস্তি ক্ষমতা দখলের পর দ্বিতীয় তালিবান সরকারের অর্থমন্ত্রকের দায়িত্ব পেতে চলেছে হাক্কানি নেটওয়ার্ক জঙ্গি সংগঠন। অর্থাৎ আফগানিস্তানের আগামী জাতীয় লেনদেন নিয়ন্ত্রক হবে এই গোষ্ঠী। যারা প্রত্যক্ষভাবে পাকিস্তানের সামরিক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই মদতপুষ্ট।
কাবুলে তালিবান প্রতিনিধিরা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সঙ্গে দেখা করে। তাৎপর্যপূর্ণ এই বৈঠকে কারজাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে দেখা গিয়েছে হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান আনাস হাক্কানি।
হাক্কানি নেটওয়ার্ক জঙ্গি গোষ্ঠী আফগানিস্তান ছাড়িয়ে দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন জঙ্গি ও বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সঙ্গে সংযোগ রাখে। ফলে গোয়েন্দা বিভাগ উদ্বেগে।
আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ টালমাটাল রাজনীতির ধাক্কা লেগেছে বিশ্ব জুড়ে। এ দেশের ক্ষমতায় হাক্কানি নেটওয়ার্ক অংশীদার হওয়ার পরেই নেপালে থাকা সংগঠনটির ‘কনট্যাক্ট’ রা আরও সক্রিয় হচ্ছে। সূত্র মারফত নেপালে থাকা হাক্কানি নেটওয়ার্ক ‘কনট্যাক্ট’ সম্পর্কে আরও বিশদ তথ্য সংগ্রহ করছে গোয়েন্দা বিভাগ।
নেপাল সরকারের কাছে হাক্কানি নেটওয়ার্ক বিষয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু নেপালেও রাজনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতি। সম্প্রতি সরকার বদল হয়েছে। নেপালি কমিউনিস্ট পার্টির নির্বাচিত সাংসদদের বড় অংশ সমর্থন হারার কে পি ওলি। তিনি আস্থাভোটে পরাজিত হন। নেপালি কংগ্রেসকে সমর্থন করে নেপালের কমিউনিস্ট পার্টি। সরকারে নেপালি কংগ্রেস। তবে এই সরকারও নড়বড়ে।
নেপালের প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কে পি ওলির সঙ্গে চিনের অতিরিক্ত সখ্যতা নিয়ে কাঠমাণ্ডু ও নয়াদিল্লির মধ্যে সম্পর্ক বারে বারে গরম হয়। একইভাবে নেপালের অভ্যন্তরে চিনা কূটনীতিকর বড়সড় প্রভাব পড়ে। সেই চিন এখন আফগানিস্তানের তালিবান সরকারের প্রতি নরমভাব দেখাচ্ছে।
তালিবান সরকারের শরিক হতে চলা জঙ্গি সংগঠন হাক্কানি নেটওয়ার্ক নেপাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় ছড়িয়ে থাকা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলিকে মদত দেবে এমনই সন্দেহ। নেপালের লাগোয়া উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং জেলা। আর দার্জিলিং সংলগ্ন কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক ততপরতা বেড়েছে।
আশঙ্কা হাক্কানি নেটওয়ার্ক দিয়ে এই সুযোগ নেবে আইএসআই। শুধু উত্তরবঙ্গ নয়, উত্তর পূর্বাঞ্চলের সবকটি রাজ্যের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলি গত কয়েকমাসে বিশেষ সক্রিয়। আর গত সপ্তাহে তাদের সক্রিয়তা বেড়েছে।
হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠিগুলির সম্পর্ক বাড়ছে। গোয়েন্দা বিশ্লেষণে উঠে এসেছে যেহেতু উত্তর পূর্বের প্রথম সারির বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতৃত্ব চিন ও মায়ানমারে থাকে ফলে হাক্কানির পক্ষে তাদের সঙ্গে ‘কনটাক্ট’ করা সহজ।