গুগলে নেই, বাস্তবে আছে, শিবদা কে করোনা মুক্ত করাই চ্যালেঞ্জ তাপস বাবুর
নয়ন রায়
করোনার করালগ্রাসে আর্থিক ও মানসিক দিক থেকে চরম বিপর্যস্ত আমজনতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন করোনা মোকাবিলার একমাত্র ওষুধ কমপ্লিট লকডাউন।
কিন্তু পেশায় সাংবাদিক হওয়ার দরুণ কমপ্লিট লকডাউন মানা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চেষ্টা করছি কারণ বারবার সেই মানুষগুলোর প্রতিচ্ছবি চোখের সামনে ভেসে উঠছে যারা প্রান্তিক স্তরে বসবাস করেন। একবেলার ভাত জোগাড় করতেই যাদের প্রতিনিয়ত মাথার ঘাম পায়ে ফেলতে হয়।
সরকারের তরফে খাদ্য ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হলেও আদৌ তাদের কাছে ঠিকঠাক তা পৌঁছচ্ছে কিনা? এই চরম সংকটে সরকার তাদের মুখে এক চিলতে হাসি ফোটাতে পারল কিনা? নাকি তারা যেমনভাবে দিনযাপন করছিলেন তার থেকেও খারাপ অবস্থায় রয়েছেন? এই সব প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছিল মনে।
এক প্রকার কৌতুহলের বশবর্তী হয়ে এই কয়েকদিন দ্বি-চক্র যানের উপর ভরসা করেই বেরিয়ে পড়েছিলাম বেশ কিছু গ্রামের উদ্দেশে। আজ বলব শিবদা গ্রামের কথা।
আরও পড়ুনঃ নতুন বছরে মানুষের পাশে থাকার অঙ্গীকার, ‘অন্নপূর্ণা’ – অতনু প্রসাদ মিত্র ( ডিউক এর ) এক ক্ষুদ্র প্রয়াস
বর্ধমান থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে শিবদা গ্রাম। প্রথমেই বলে রাখি নামটা কিন্তু গুগলের ম্যাপে খুঁজলে পাবেন না। এই শিবদা গ্রাম আউসগ্রাম বিধানসভার মধ্যে অন্তর্গত।
সম্পূর্ণ কৃষি নির্ভর এলাকা। ধান,আলু চাষ এখানে মূল জীবিকা। সাবমার্সিবাল পাম্পের জল আর ডিভিসি ক্যানেলের জলেই চাষ হয়। সারা বছর তিন ধরনের চাষ হয় এখানে।
মোট ভোটার সংখ্যা ৮৪০৬।মূলত তপসিলি জাতি ও উপজাতির বাস এই এলাকায়। সেই সঙ্গে থাকেন অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষও।
আজ থেকে কয়েক বছর আগে পাকা রাস্তার কথা এখানে কল্পনাই করা যেত না। বলতে দ্বিধা নেই তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর গ্রামগুলির হাল ফিরেছে। সেই সঙ্গে ফিরেছে গ্রামবাংলার প্রকৃত রূপ। তা নিয়ে গর্ব বোধ করেন গ্রামের মানুষরাই।
রয়েছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। বাম আমলে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলো ছিল ভুতুড়ে বাড়ি। এই অভিযোগ করছিলেন গুসকরা ২ নম্বর অঞ্চল সভাপতি তাপস চ্যাটার্জী।
করোনা নিয়ে কথা বলতে বলতেই শিবদা গ্রাম সম্পর্কে আরও কিছু জানতে পারলাম।
করোনা মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রীর পদাঙ্ক অনুসরন করেই অবিরত দৌড়ে চলেছেন তাপস বাবু। চেষ্টা করছেন প্রত্যেকটা মানুষের মুখে খাবার তুলে দিতে। সেই চেষ্টাই তিনি অনেকটাই সাফল্য অর্জন করেছেন। সবটাই তো একবারে সম্ভব নয়। তবে আগামী দিনে তিনি যে অবশিষ্ট কাজও সম্পন্ন করতে সক্ষম, সে বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী গুসকরা ২ নম্বর অঞ্চল সভাপতি তাপস চ্যাটার্জী।
তার মুখে শোনা বাম আমলে যা অবস্থা ছিল তার থেকে এখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কল্যাণে জীবন গতির সঙ্গে গ্রামের রোজগারের রূপরেখা পালটে গেছে।
গ্রামের পাকা রাস্তা বাড়ির দুয়ার অবধি পৌঁছে গেছে। আজ থেকে কয়েকবছর আগে পর্যন্ত বর্ষাকালে রাস্তা ডুবে থাকত জল কাদায়। তার কথায়, বাম আমলে উন্নয়ন মানেই ছিল রাজনীতি। এখন কিন্ত সেই গল্প নেই।
ওড়গ্রাম থাকে আলিগ্রাম পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা এখান পিচ। বর্ষাকালে জল জমে না। কেওতলা শিবদের রাস্তা একবার তাকালেই সহজেই অনুমেয় করা যায় কাজ হয়েছে কিনা।রয়েছে দিয়াস আলিগ্রাম মাধ্যমিক বিদ্যালয়।শিক্ষার্থী সংখ্যা ৬০০।
তবে অঞ্চল সভাপতির দাবি এই এলাকাতে উচ্চবিদ্যালয় দরকার।তবে আজ না হোক কাল তো হবে। তাপস বাবুর কথা থেকে একটা কথা পরিষ্কার গ্রামে রাস্তা ঘাট চাষ বাস মানুষের রোজগার বৃদ্ধির দিকে। হয়তো জিডিপি খুব উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছয়নি এখনও। তার জন্য দরকার কৃষিভিত্তিক শিল্প তালে অর্থনীতির পরিবর্তন হবে।
সেসব নাহয় পরে হবে। আগে করোনার এই করালগ্রাস থেকে মুক্ত হোক গোটা বিশ্ব। করোনা মুক্ত হোক ভারতবর্ষ। নতুন বছর শুরুর দিনেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে প্রত্যেকে যাতে ভাল থাকেন এই প্রার্থনাই করলেন তাপস বাবু।