লকডাউনে আলোচনায় ” চা “, কাউন্সিলর বাড়িবাড়ি গিয়ে দিলেন ” চা “
রাহুল গুপ্ত
লক ডাউনে যে নামটি সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য প্রায় সবার মুখে মুখে ঘুরছে তিনি হচ্ছেন ” চা কাকু ” । খেলোয়াড় থেকে রাজনীতিবিদ, অভিনেতা অভিনেত্রীদের মুখে মুখে এখনও একটাই নাম , ‘চা-কাকু’।
প্রথমে চা খেতে গিয়ে ভাইরাল। তারপরে কোনও এক ভিডিওয় পেশা প্রকাশ্যে আসার পর ওঠে সহানুভূতির ঝড়। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় , মিমি চক্রবর্তীদের তাঁর সাহায্য এগিয়ে আসেন। সম্প্রতি আবার অভিনেতা অঙ্কুশ তাঁকে নিয়ে কথাবার্তা বলেছেন। চা খেয়ে তিনি যে আলোচনার কেন্দ্রে তা বলাই বাহুল্য।
লকডাউনের পর থেকে চা নিয়ে একের পর এক খবর সামনে এসেছে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই তা বেশ মজাদার হয়েছে , কিছুক্ষেত্রে তা লকডাউন আইন ভঙ্গের ছবিকে স্পষ্ট করেছে।
কিছু মানুষ বাঙালির চায়ের প্রেমকে মাথায় রেখে এলাকায় বিলিয়েছেন চা। সম্প্রতি কলকাতা পৌরসভার ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃনমূল পৌরমাতা আবার চা পানে পেয়েছেন ‘নবজীবন’ , খুঁজে পেয়েছেন চায়ের সঙ্গে করোনার নিবিড় যোগ।
কেমন সেই ঘটনা, ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই জানিয়েছেন সেই কথা। সোশ্যাল মাধ্যমে তিনি প্রথমে জানিয়েছেন তাঁর চা খেয়ে পরিতৃপ্তির কথা।
পঞ্চম দিনে “অন্নপূর্ণা”, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমার অহংকার,অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার গর্ব ” বললেন অতনু প্রসাদ মিত্র
তিনি লিখেছেন , ‘চা এর আড্ডা আর করোনার সামাজিক দুরত্বকে মিলিয়েছেন তাঁর এলাকার শহীদ স্মৃতির জনৈক গৃহবধূ।
পৌরমাতার কথায়, ‘লকডাউনের প্রথম পর্যায়ে যেহেতু চায়ের দোকান বন্ধ তাই নিজের বাড়িতেই চা তৈরী করে সবাইকে খাওয়ালেন।
প্রখর রৌদ্রে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা একটানা বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিয়ে আমরা সবাই তখন ঘর্মাক্ত ও ক্লান্ত। এই সময়ে চা যেন নবজীবন দিল। সত্যি বলতে কি চা ছাড়া বিদগ্ধ বাঙালির সাহিত্য বা সমাজসেবা সবই যেন পানসে।’
এরপরেই তিনি চায়ের চা এর সঙ্গে করোনা ভাইরাসের অদ্ভুত যোগের খোঁজ পেয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘চায়ের জন্ম চিনে। আর দুধ, চিনি মিশিয়ে চা কে বিশ্বের দরবারে জনপ্রিয় করে তুলেছিল ইউরোপ। চিনের চা কে ইউরোপ বিশেষতঃ ইংল্যান্ড ই পৌঁছে দিয়েছিল সকলের ঘরে ঘরে। করোনা ভাইরাসের উৎসও চিন দেশে। এবং সকলেই জানে ইউরোপ থেকেই তার প্রাদুর্ভাব বিস্তৃত হয়েছিল সমগ্র বিশ্বে। বিলেত থেকে যারা ভারতীয় ভূখণ্ডে এসেছিল তারাই সঙ্গে করে এনেছিল চা। আবার বিলেত থেকে মানে ইউনাইটেড কিংডম থেকে আগত করোনা আক্রান্ত মানুষরাই ভারতে করোনা ছড়িয়েছিল বেশি করে। আমাদের ১০৯ নং ওয়ার্ডে প্রথম করোনা আক্রান্ত এসেছিল ইংল্যান্ড থেকেই।’
বৈপরীত্যেও যোগ পেয়েছেন। জানিয়েছেন , ‘চা এর সঙ্গে করোনা ভাইরাসের আবার বৈপিরত্যও আছে। চা মানুষকে সামাজিক ভাবে কাছাকাছি নিয়ে এসেছিল। চা এর আড্ডা, মিটিং এ চায়ের সঙ্গে টা, অতিথিকে চা দিয়ে আপ্যায়ন করা – এভাবেই চা ছিল সামাজিক ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধির অনুঘটক। আর করোনা ভাইরাস তৈরী করেছে সামাজিক দূরত্ব। একেবারে বিপরীত।’