ছেলের দুটো কিডনিই নষ্ট, ছেলেকে বাঁচানোর লড়াইয়ে এগিয়ে এলেন মা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ছেলের দুটো কিডনিই নষ্ট,মৃত্যুমুখি ছেলেকে বাঁচানোর লড়াইয়ে এগিয়ে এলেন মা। বছর ২৭ এর তরতাজা যুবক দেবাশীষ জানা।
পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নারান্দা গ্রামে নিজের বাড়িতে মা ও স্ত্রীকে নিয়েই সংসার। কিডনির সমস্যায় আক্রান্ত দেবাশিষ জানা। পরিবার বলতে এই তিনজনই। বাবা গুরুপদ জানা বছরখানেক আগেই মারা গেছেন, বোনেরও বিয়ে দিয়েছে।
সংসার চালাতে ফুলের ডেকোরেশনের কাজে ব্যাঙ্গালোরে থাকত সে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাধ সাধল মারন রোগ।লকডাউন ঘোষণা হতেই ব্যাঙ্গালোরে ফুলের কাজ ফেলে রেখে নিজের বাড়ি চলে আসে দেবাশিষ।
বাড়ি ফিরে কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর স্বাভাবিক ভাবে বাজার হাট ঘোরার পর শরীরে অস্বস্তিবোধ করতে থাকে। স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করালে তাঁর জন্ডিস ধরা পড়ে।
কিন্তু দিন দিন শরীর দুর্বল হতে থাকলে রক্ত পরীক্ষা করলে তাতেই ধরা পড়ে তাঁর দুটো কিডনীই অকেজো। সেই সঙ্গে কথা বলার ক্ষমতাও হারিয়েছে সে। বাড়ির একমাত্র রোজগেরে ছেলের এমন অসুখ জানতে পেরে পরিবার প্রায় বাকরুদ্ধ।
অশীতিপর বৃদ্ধার সহায়তায় এগিয়ে এলেন সিভিক ভলেন্টিয়ার
ছেলের এমন পরিস্থিতি জেনে মা জ্যোৎস্না জানা মনস্থির করেন নিজের একটা কিডনি দিয়ে ছেলেকে সুস্থ করে তুলবেন। কিন্তু অর্থের প্রয়োজন। প্রতিমাসে ডায়ালোসিস করতে বিপুল টাকা খরচ হয়।
আজ প্রায় শূন্য ভাণ্ডার, তবু প্রায় ৫৭ ছুঁই ছুঁই মা জ্যোৎস্না জানা নিজের ছেলেকে বাঁচাতে নিজের শরীরের কিডনি দান করতে পিছু হটেননি।
অসহায় মা সহ গোটা পরিবার ও প্রতিবেশিরা চাইছেন দেবাশীষকে সুস্থ করতে। সেজন্যই স্থানীয় ক্লাবের উদ্যোগে প্রায় একলাখের কাছাকাছি অর্থ দিনরাত জোগাড় করে চলেছেন ক্লাবের সদস্যরা ।
তাঁদের বিশ্বাস তাঁদের ক্লাবের একনিষ্ঠ সদস্য দেবাশিষ সুস্থ হবেই। আজ আবার ক্লাবের লোকজন মিলে দেবাশিষকে ডায়ালোসিসের জন্য তমলুক নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লকডাউন বাধসাধছে দেবাশিষকে সুস্থ করতে, কিডনি দিতে চেয়েও কিভাবে দেবেন তাঁর কোনো কুলকিনারা পাচ্ছেন না অসহায় মা । দেবাশীষ জানার সুচিকিৎসার জন্য সংবাদমাধ্যমের সহযোগীতায় রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানাল স্থানীয় ক্লাব থেকে শুরু করে পরিবার পরিজন ।