কেন্দ্রীয় দল আসতেই পারে, কিন্তু কেউ এলে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করতেই হবে-কড়া বার্তা মমতার
দ্য কোয়ারি ডেস্ক: ভোট-পরবর্তী হিংসায় রাজ্যে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, বৃহস্পতিবাত তাঁদের পরিবারবর্গকে আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এবিষয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এই আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে কোন দলের কর্মী বা সমর্থক তা দেখা হবে না। তিনি যে দলেরই হোক না কেন, তাঁর পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করবে রাজ্য। নির্বাচন পরবর্তী হিংসায় বিজেপি, তৃণমূল ও একজন সংযুক্ত মোর্চার কর্মী মারা গিয়েছেন। এদিন তাদের সকলকেই সাহায্যের কথা জানালেন মমতা।
পাশাপাশি, এদিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, পূর্ব প্রতিশ্রুতিমতো শীতলকুচি নিয়ে সিআই ডি তদন্ত হচ্ছে।ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্তে এসআইটি ঘোষণা করা হয়েছে। এদিন নিহতদের বাড়ির সদস্যদের একজনকে চাকরির কথা ঘোষণা করা হল।
এদিন এই ঘোষণার পাশাপাশি বিজেপিকে সংযত হওয়ারও সতর্ক বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, কমিশনের অধীনে আইনশৃঙ্খলা থাকাকালীন ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।
কোচবিহারে আক্রান্ত হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক উদয়ন গুহ। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কোচবিহারে গুণ্ডামি একটু বেশিই হচ্ছে। উদয়নের হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিজেপি আসন বেশি পেয়েছে, সেখানে গুণ্ডামি বেশি হচ্ছে। গুণ্ডামিতে বেশি উস্কানি দিচ্ছে বিজেপি।
মমতা বললেন, অবিলম্বে এই হিংসা বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, আমি চাই না হিংসা হোক। প্রয়োজন নেই, রাজনৈতিক মিছিল মিটিং নেই, তবু কেন্দ্রের মন্ত্রীরা দাঙ্গা প্ররোচনা দিচ্ছে। কিন্তু এই হিংসা রোখা যাবে কীভাবে?
এই ব্যাপারে মমতা স্পষ্ট বলেন, নির্বাচনের পরে কিছু অশান্তি হয়। আমরা ব্ল্যাক স্পটগুলি চিহ্নিত করেছি। আমরা সেগুলিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেব। তৃণমূললের নীচুতলার নেতাকর্মীদেরও এদিন সতর্ক করেন মমতা।
তাঁকে বলতে শোনা যায়, আমি আমার ছেলেদের বলব গণ্ডোগোলে না যেতে। গণ্ডগোল করলে কাউকে ক্ষমা করব না। ভোট পরবর্তী হিংসা না হওয়ার জন্য শান্তির বার্তা দিয়েছি। সংযত হোক বিজেপি, মানুষের রায় মেনে নিন।
ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এদিনই রাজ্যে এসেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের চার প্রতিনিধির একটি দল।
কোনও সরকারের শপথের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এভাবে কেন্দ্রীয় দলের আসা নজিরবিহীন। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে প্রকাশ্যেই অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বললেন, রাজ্যে যখন অক্সিজেন ছিল না, তখন তো ওঁরা আসেননি। উত্তরপ্রদেশে হাথরসে যখন অত বড় ঘটনা ঘটে গেল, তখনই বা কী করছিলেন এঁরা? আর বাংলায় ভোট পরবর্তী হিংসার খোঁজ নিতে এর মধ্যেই চলে এলেন!
এক রকম বিস্ময় প্রকাশ করেই মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘আগে কখনও এ রকম দেখিনি। মমতার কথায়, আসলে বিজেপি এখনও জনতার রায় মেনে নিতে পারছে না। ওঁদেরকে আমার অনুরোধ, আপনারা সংযত হন। মানুষের রায় মেনে নিন।
তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় দল আসতেই পারে, কিন্তু কেউ এলে আরটিপিসিআর পরীক্ষা করতেই হবে। মন্ত্রী হলেও। বিশেষ উড়ানে আসলেও আরটিপিসিআর হবে। কোভিড ধরা পড়লেই কোয়ারেন্টাইন। কোভিড প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা কেন্দ্রকে একাধিক চিঠি দিয়েছি কিন্তু তার একটিরও জবাব আসেনি।
সমস্ত নার্সিংহোম ও হাসপাতালগুলিতে ৪০ শতাংশ বেড বাড়ানো হচ্ছে। এছাড়া করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় অক্সিজেনের ঘাটতি মেটাতে রাজ্যের প্রতিটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্ল্যান্ট বসানো হবে বলে এদিন ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় ইন্টার্ন ডাক্তার ও নার্সদের কাজে লাগানো হবে বলেও জানালেন তিনি। একইসঙ্গে স্বাস্থ্য সুরক্ষা বন্ধু নাম দিয়ে ব্যবহার করা হবে কোয়াক ডাক্তারদেরও।