মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণই করা হয়নি বিশ্বভারতীর শতবর্ষের অনুষ্ঠান
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বাংলার গর্ব, দেশের অহংকার বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় আজ পা রাখলো শতবর্ষে। কবিগুরুর হাত ধরে গড়ে ওঠা এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় আজও কবির আদর্শেই পরিচালিত হচ্ছে। সেই মহাসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে এদিন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষের জন্মদিনে ট্যুইটেই শুভেচ্ছা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ট্যুইটারে তিনি লিখলেন, ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারো, সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারও।বিশ্বভারতী শতবর্ষে পড়ল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টি ও মানবতার মন্দির এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমাদের উচিৎ এই মহান জীবন দর্শনকে সংরক্ষিত রাখা।’
“বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো, সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারো”
Visva Bharati University turns 100. This temple of learning was Rabindranath Tagore’s greatest experiment on creating the ideal human being. We must preserve the vision and philosophy of this great visionary
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 24, 2020
মুখ্যমন্ত্রীর ট্যুইটের পরও এই নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না। শতবর্ষের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিজেপি। এদিন বিশ্বভারতীর শতবর্ষের অনুষ্ঠানে ভারচুয়ালি যোগ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। অথচ গরহাজির রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
এই ঘটনাকে হাতিয়ার করে মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্যের অভিযোগ, ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে অপমান করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’ পালটা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও।
এদিন বিজেপি অভিযোগ নস্যাৎ করে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, শতবর্ষের অনুষ্ঠানের জন্য আমায় কবে ডাকা হল, কখন ডাকল, আমার কিছুই জানা নেই। আমি বিশ্বভারতীতে যখন যাচ্ছি আমার কাছে সময় চেয়েছিলেন। আমি সময় দিতে পারিনি। কিন্তু শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানের জন্য নো আমন্ত্রণ, নো নিমন্ত্রণ, নো ফোন.. আমাকে ডাকা হয়নি।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/i-will-give-madam-question-answer-on-nandigram-rally/
এদিন এই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন রাজ্যের তথ্য প্রযুক্তি দফতরের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি জানান, বিশ্বভারতীর তরফে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তাহলে যে চিঠিটি প্রকাশ্যে এসেছে, সেটি কি ভুয়ো, সাংবাদিকরা জানতে চান।
তাঁদের পালটা প্রশ্ন করেন ব্রাত্য, ‘সেই চিঠির কোনও প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছিল কি? ওই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকারের নথি আছে কি? উপাচার্য নিজেই সই করে নিজের কাছে ওই চিঠি রেখে দিয়েছিলেন নাকি?’
অনুষ্ঠানের আগের রাতে মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে অনুষ্ঠানের কথা জানানো হয়েছিল বলে কয়েকজন সাংবাদিক দাবি করেন। জবাবে ব্রাত্য জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে আমন্ত্রণ জানানো যায় না। সবমিলিয়ে বিশ্বভারতীয় অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপস্থিতি ঘিরে উত্তপ্ত রাজ্য রাজনীতি।
এদিকে এদিন থেকেই বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদযাপন শুরু হবে। কার্যত বছরভর চলবে নানা অনুষ্ঠান। এদিন সকাল থেকে বেলা ১২টা অবধি চলবে বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠান। এরপর রতনপল্লিতে ভারত তীর্থ নামে একটি নতুন মার্কেটের উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল।
কেন্দ্রে বিজেপি সরকার আসার পর থেকে বারংবার অভিযোগ উঠেছে বিশ্বভারতী এবং রবীন্দ্রনাথকে বার বার রাজনৈতিক ভাবে ব্যবহার করছে গেরুয়া শিবির। শুধু তাই নয় রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চার সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পল কার্যত সব কিছু ছাড়িয়ে বিশ্বভারতীর পড়ুয়াদের যৌনকর্মী বলে দেগে গিয়েছেন।
কিছুদিন আগে এসেছিলেন অমিত শাহ। তাঁর সেই সফরের মাঝেও বিশ্বভারতী জুড়ে বিজেপি নেতাদের দাপাদাপি দেখা গিয়েছে। এই অবস্থায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্বভারতীতে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/mamata-rally-on-the-first-week-of-january-in-nandigram/
আগামী ২৮ তারিখ বীরভূমে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২৯ তারিখ তাঁর বোলপুরে থাকছে দলীয় কর্মসূচি। সেই সময় উপাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রী সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিচ্ছেন না বলেই জানা গিয়েছে।
ওয়াকিবহাল মহলের অভিমত, উপাচার্য কার্যত লোকদেখানো কাজ করে মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীও বিশ্বভারতীতে যাচ্ছেন না। তবে শান্তিনিকেতনে প্রবীণ কিছু আশ্রমিকের সঙ্গে তিনি দেখা করতে পারেন।
উল্লেখ্য, বুধবার থেকেই বিশ্বভারতীতে শুরু হয়েছে পৌষ উত্সব। বুধবার সকালে ছাতিমতলায় উপাসনার মাধ্যমে সূচনা হয় পৌষ উত্সবের। বৈতালিক, সানাই, উপাসনা সহ ঐতিহ্যবাহী নানা অনুষ্ঠান হয়।
করোনা আবহে এবার পৌষ মেলা হচ্ছে না। ফলে খানিকটা হলেও আক্ষেপের সুর শান্তিনিকেতনের শ্রমিক ও বোলপুরবাসীদের গলায়। পৌষ উত্সবে অবশ্য খানিকটা হলেও সে ক্ষতে প্রলেপ পড়েছে।