সময়ের দাবির অভিন্ন দেওয়ানিতেই চূড়ান্ত বৈষম্যের আশঙ্কা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ হিমাচল প্রদেশ ও গুজরাটের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ইস্তেহারে স্পষ্ট করে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর কথা বলা হয়েছে। এটা অবশ্য দীর্ঘদিন ধরেই সংঘ পরিবারের দাবি। কিন্তু গেরুয়া শিবির এটাও জানে অভিন্ন দেওয়ানি আইন একটা-দুটো রাজ্যে পৃথকভাবে বলবত করা সম্ভব নয়। একমাত্র সংবিধান সংশোধন করে তা সারা দেশে চালু করতে হবে। এক্ষেত্রে সংসদের দুই কক্ষ মিলিয়ে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলে তবেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হতে পারে।
অর্থাৎ, বিধানসভা নির্বাচনের ফলের খুব একটা গুরুত্ব নেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর ক্ষেত্রে। কিন্তু এই নিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ গেরুয়া শিবির। গো-বলয়ের হিমাচল বা মোদি-শাহদের হিন্দুত্বের পরীক্ষিত পাঠাগার গুজরাটে এই অভিন্ন দেওয়ানি আইনের মতো কড়া ডোজ না দিলে কাজ হওয়ার সম্ভাবনা কম। ওখানে এমনিই মন্দির প্রচুর আছে। এইসব নিয়ে রাজনীতির ফায়দা তোলাই অসম্ভব।
এদিকে একবিংশ শতকের ভারতে আলাদা করে হিন্দু দেওয়ানি আইন, মুসলিম দেওয়ানি আইন থাকবে এটাই অবাক করা বিষয়। ব্যাপারটা ভোটের ধর্মনিরপেক্ষ ভারতের সঙ্গে যায় না। তাই দেশের প্রগতিশীল অংশের মধ্যেও অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পক্ষে মত আছে। তাহলে অসুবিধার তো কিছু নেই।
পিএলএ-কে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করতে বললেন জিনপিং!
আসলে অনেকটাই অসুবিধে আছে। সংঘ পরিবার হিন্দু দেওয়ানি বিধিকেই অভিন্ন দেওয়ানি আইনের পরিণত করতে চায়। গেরুয়া শিবিরের অতি কট্টর অংশ আধুনিক সময়ের দাবি মেনে আইনি পরিবর্তনের পক্ষ নয়।
তাদের মতে এটা হিন্দু সংস্কৃতির দেশ, সেই অনুযায়ীই দেওয়ানি বিধি থাকা উচিৎ। এদিকে, মুসলিম সমাজও তাদের মুসলিম দেওয়ানি বিধি ছাড়তে নারাজ। এই পরিস্থিতিতে একমাত্র সময়োপযোগী আধুনিক দেওয়ানি বিধি তৈরি হলেই হয়তো সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু রাজনীতির দাবি মেনে তার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম।
তাই অভিন্ন দেওয়ানি আইন নিয়ে বিজেপির চূড়ান্ত তৎপর হয়ে ওঠার মধ্যে ২৪ এর অঙ্ক দেখছে বিরোধী শিবির। তাদের মতে লোকসভা নির্বাচনের আগে এভাবেই মেরুকরণে তুঙ্গে নিয়ে যেতে চাইছে শাসক। কারণ অর্থনীতি, বেকারত্ব, জীবন যাত্রার মানের প্রশ্নে চরম বেকায়দায় আছে সরকার। এদিকে রায় মন্দির তৈরি হচ্ছে, তাই দীর্ঘদিনের এই ইস্যু প্রায় শেষ। এই সময়ে অভিন্ন দেওয়ানি বিধিই হতে পারে বিজেপির সেই তুরূপের তাস।