করোনা আবহে শহরে বাড়ছে সাইকেলের চাহিদা

সর্নিকা দত্ত

করোনা আবহে যখন পরিবহন নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই, তখন শহুরে জীবনচর্যার অপরিহার্য অংশ ক্রমেই হয়ে উঠতে শুরু করেছে বাইসাইকেল।

যদিও শহরের অধিকাংশ বড় রাস্তায় সাইকেলের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবে এই মুহূর্তে শহরের রাস্তায় এই যানটিকে চালানোর অনুমতি দেওয়ার দাবি উঠছে।

আসলে এই দূষণ হীন যানটিকে ব্যবহার করে একদিকে যেমন স্বল্প খরচে গন্তব্যে পৌঁছানো যায়, একইভাবে সংক্রমণে লাগাম টানা সম্ভব।

আর সে কারণেই এই মুহূর্তে বাড়ছে সাইকেলের চাহিদা।শহরে সাইকেলের ব্যবহার বৃদ্ধি করতে করােনা উত্তর সময় থেকেই লড়াই করছেন কলকাতার সাইকেল প্রেমী মানুষরা।

এবার সেই বার্তা নিয়ে তাঁরা দ্বারস্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। রাখছেন বেশ কিছু দাবী এবং দিচ্ছেন যুক্তিও।

শহরের সাইকেল প্রেমীরা করােনা সমস্যা শুরুর আগে বারবার বলে এসেছেন শহরের মাত্রাতিরিক্ত দূষণ কমাতে গেলে সাইকেল নিয়ে ভাবনাচিন্তা করা উচিৎ সরকারের।

এবারে দূষণ ও সামাজিক দূরত্ব বৃদ্ধির যুক্তি-সহ সাইকেল নিয়ে ভাবনার দাবি জানালেন সাইকেল প্রেমিরা।

কলকাতা ও হাওড়ার বাইসাইকেল প্রেমীরা একত্রে জানাচ্ছেন,

  • মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমরা এই করােনার সময়ে সাইকেল কতটা বেশি সাহায্য করতে পারে,
  • রাস্তায় ফিজিক্যাল ডিস্টেন্স বজায় রাখতে।
  • সাইকেলের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক বিওয়াইসিএস-এর প্রতিনিধিরা কলকাতায় সাইকেল লেন বৃদ্ধি,
  • সাইকেল বর্জিত অঞ্চল কমিয়ে দেওয়া,
  • সাইকেল সারাইয়ের স্থান, সাইকেল স্ট্যান্ড নিয়ে দাবিও জানিয়েছে তাদের চিঠিতে।

করােনা ও আমফান এই উভয় সংকটে কীভাবে মানুষের পাশে ছিল তৃণমূল, প্রচার করবে দল

তাঁরা মনে করছেন,

  • বহু মানুষ সংক্রমণ এড়াতে সাইকেল বেছে নিচ্ছেন এখন।
  • পৃথক লেন চিহ্নিত করে সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ দিক সরকার।
  • সাইকেল সহজ, সাশ্রয়কারী, দুষণবিহীন যান। আমাদের পরিবহন ব্যবস্থায় তা অগ্রাধিকার পাক।
  • সারা পৃথিবী এই পথে হাঁটছে লকডাউনের পর সেই পথে হাঁটুক বাংলাও।

বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, প্রতিটি সংকটেই তৈরি হয় কিছু কিছু সমস্যার নতুন সমাধান সূত্র। অতিমারীর সংকটে অভিজ্ঞ মানুষজন দৈহিক দূরত্বের সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে রেহাই পেতে মােটর সাইকেল অথবা বাই সাইকেলের ব্যবহার উত্তরােত্তর বাড়াবে বলেই আশা করা যায়।

বিশেষত কলকাতার মত শহুরে এলাকায় যেখানে গড়ে প্রতিদিন মানুষের ট্রিপের দূরত্ব পাঁচ-ছয় কিলােমিটারের মধ্যে সেখানে চলার পথ পেলে এই পরিস্থিতিতে সাইকেলের প্রভাব বাড়তে বাধ্য।

আর এক্ষেত্রে কম খরচের পাশাপাশি বাড়তি সুবিধা হল চালক ও সহযাত্রী একে অপরের পরিচিত এবং আস্থা ভাজন। ফলে সংক্রমণের আশংকার প্রভাব মুক্ত হয়েই চলতে পারে এই ব্যবস্থা সফল ভাবেই।

কিন্তু এক্ষেত্রে এখন থেকেই প্রয়ােজন মুল রাস্তাগুলি বাদ দিয়ে শহরের বেশ কিছু নির্দিষ্ট রাস্তায় নিরাপদে সাইকেল চালানাের বিধি ব্যাবস্থা।

এসবের পাশাপাশি যান বাহনে সংক্রমণে ভয়ের কারণে। লকডাউন পরবর্তীতে মানুষের স্বল্প দূরত্বের পথে হেঁটে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়বে , যেটি এক অর্থে মানুষের সুস্বাস্থ্যের সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত পোস্ট