প্রবল সঙ্কটে থাকা সিপিএমের মাথায় বসবেন মহিলা নেত্রী? জল্পনা তুঙ্গে
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: স্বাধীনতার ৭৫ বছরের মাথায় দাঁড়িয়ে প্রবল সঙ্কটে দেশের বাম রাজনীতি। মূলস্রোতের বাম দলগুলোর সাংসদ সংখ্যা লোকসভায় কমতে কমতে মাত্র পাঁচটিতে এসে দাঁড়িয়েছে (সিপিএমের ৩ জন ও সিপিআইয়ের ২ জন)। একমাত্র কেরল ছাড়া আর কোথাও ক্ষমতার ধারে কাছে নেই তারা।
তা সত্ত্বেও সিপিএমের পার্টি কংগ্রেস ঘিরে কৌতূহলের পারদ যথেষ্ট চড়ছে। বোধহয় দলটির তিন বছর অন্তর নিয়মিত সাংগঠনিক রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার জন্যই এই কৌতুহল।
স্বাধীনতার পর থেকেই ধীরে ধীরে সিপিএমের মূল ঘাঁটি হয়ে উঠেছিল পশ্চিমবঙ্গ। কিন্তু ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল বাংলার ক্ষমতা দখলের পর এখানে তাদের শুধু ক্ষয় হয়েছে। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে তাদের অবস্থা সবচেয়ে বেহাল হয়ে পড়ে। একজন বিধায়কও বাংলায় জিততে পারেননি। পশ্চিমবঙ্গে দলের সদস্য সংখ্যাও বিপুল পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে।
একই অবস্থা ত্রিপুরায়। সেখানে এখনও সিপিএম প্রধান বিরোধী দল হলেও ২০২৩ এর বিধানসভা নির্বাচনে আদৌ একটিও আসন পাবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গিয়েছে। কারণ সে রাজ্যে ক্রমশই জমি শক্ত করছে তৃণমূল। বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞের মতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় বিজেপির সঙ্গে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে তৃণমূলের।
তবে এতো খারাপের মাঝেও সিপিএমের সাফল্য হল ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে কেরলের ক্ষমতা ধরে রাখা। স্বাধীনতার পর থেকেই প্রায় প্রতি পাঁচ বছর অন্তর দক্ষিণের এই রাজ্যটিতে ক্ষমতার পরিবর্তন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বে ব্যতিক্রম ঘটিয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছে তারা। সেই কারণেই মার্চের শেষে কেরলেই ২৩ তম পার্টি কংগ্রেসের আসর বসাতে চলেছে সিপিএম।
কিন্তু পার্টি কংগ্রেস শুরুর আগে সিপিএমের অভ্যন্তরে অন্যতম প্রধান জল্পনা হল কে হবেন পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক? দলীয় নিয়ম অনুযায়ী সীতারাম ইয়েচুরির পরপর দুটি টার্মে সাধারণ সম্পাদক থাকার মেয়াদ এবারই শেষ হচ্ছে। হয়তো চাইলে কেন্দ্রীয় কমিটির অনুমোদন নিয়ে তাঁকে আবার সাধারণ সম্পাদক রেখে দেওয়া যেত। কিন্তু তাঁর আমলে দল সারাদেশজুড়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছে। তারপরও তাঁকে সাধারণ সম্পাদক রেখে দেওয়া হবে বলে মনে হয় না। সেক্ষেত্রে বিকল্প কে?
শোনা যাচ্ছে বাংলা লবির মুখ বলে পরিচিত ইয়েচুরিকে সরিয়ে সিপিএমের পলিটব্যুরোয় জয়জয়কার হতে চলেছে কট্টর কেরল লবির। সম্ভবত প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাতের স্ত্রী তথা পলিটব্যুরোর অন্যতম মহিলা মুখ বৃন্দা কারাত সিপিএমের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। সেক্ষেত্রে তিনিই হবেন সিপিএমের প্রথম মহিলা সাধারণ সম্পাদক।
এছাড়া সিপিএমের পলিটব্যুরোতেও ব্যাপক রদবদল হতে পারে বলে জল্পনা শোনা যাচ্ছে। প্রবল চাপ থাকলেও মধ্যপন্থী পথ নিয়ে মহম্মদ সেলিমকে শেষ সুযোগ দেওয়া হবে। যদিও বিমান বসুর বিদায়ের পর বাংলা থেকে নতুন কাউকে পলিটব্যুরো সদস্য করার সম্ভাবনা অত্যন্ত কম। সব মিলিয়ে সিপিএম আরও একটু কেরল ভিত্তিক দলে পরিণত হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবে বলেই ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা।