মিড ডে মিলের খরচ বাঁচাতে স্কুল চত্বরে সবজি চাষের পরিকল্পনা সরকারের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের স্কুল চত্বরেই শাক-সবজির বাগান করার একটি প্রকল্প হাতে নিচ্ছে রাজ্য সরকার একই সঙ্গে এই প্রকল্পেই স্কুলগুলিতে নানা ধরনের গাছও লাগানাে হবে। সবুজে ভরিয়ে দেওয়া হবে বিদ্যালয় চত্বর।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের ‘মিড-ডে মিল’এ আরাে পুষ্টিকর খাবারের জোগান দিতেই হবে ।
বিদ্যালয়গুলিতে বিজ্ঞানসম্মতভাবে শাক-সবজির চাষ করা গেলে মিড-ডে মিল’এ ভাত, ডাল, সয়াবিন ইত্যাদির সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজিও দেওয়া যাবে। তাতে ছাত্রছাত্রীদের পাতে আরাে পুষ্টিকর খাবারের সংযােজন ঘটানাে যাবে।
রাজ্যের শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, স্কুল চত্বরে নামি-দামি গাছ লাগানাে ও শাক-সবজি চাষ প্রকল্পে আপাতত ১৫ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছে অর্থ সাহায্যও চাওয়া হবে।
এখানে উল্লেখ্য, শিক্ষার বিষয়টি কেন্দ্র ও রাজ্যের যুগ্ম তালিকাভুক্ত। তাই সবুজায়ন ও শাক-সবজি চাষের এই প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছেও অর্থ বরাদ্দ চাইবে রাজ্য।
কেন্দ্রের সাহায্য না পাওয়া গেলেও রাজ্য তার নিজস্ব তহবিল থেকেই এই প্রকল্পে অর্থ খরচ করবে বলে স্থির করা হয়েছে।
চুনোপুঁটি ধরে রাঘব বোয়ালকে আড়াল করছেন অরুপ রায়, দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক রাজীব
আপাতত ৩০ হাজার স্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে রাজ্যের সবক’টি বিদ্যালয়কে এই প্রকল্পে জড়িয়ে নেওয়া হবে বলে শিক্ষা দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন।
দফতর সূত্রের খবর, ছাত্রছাত্রীদের ‘মিড-ডে মিল’ একটি স্থায়ী ও জনপ্রিয় প্রকল্প। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের সুষম ও পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয় এই প্রকল্পে।
এই রাজ্যে প্রাথমিকস্তরে ৯৮% ও উচ্চ প্রাথমিকস্তরে ৯৭% ছাত্রছাত্রীকে এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। অর্থ দফতর সূত্রের খবর, মিড-ডে মিলের জন্য ১৫৬৩টি “কিচেন-কাম-স্টোর’ তৈরি করা হয়েছে।
অর্থ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, এখন পর্যন্ত প্রায় ১০০ ভাগ বিদ্যালয় মিড-ডে মিলের আওতায় এসেছে। প্রায় ১১৩ লাখ ছাত্রছাত্রী এই সুবিধা পাচ্ছে। এই প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা। আর রাজ্যের বরাদ্দ প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা।
রাজ্যে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক মিলিয়ে প্রায় ৮৪ হাজার স্কুল আছে। এইসব স্কুলে শাক-সবজি বাগান করতে পারলে চাল, ডাল, সয়াবিন ইত্যাদি ছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের মিড-ডে মিল-এ আরাে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া যাবে।
স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন, মিড-ডে মিল’এ গতানুগতিক খাবার ছাড়াও পুষ্টিকর শাক-সবজিসহ অন্য সব খাবার দিতে পারলে স্বাস্থ্যের দিক থেকে উপকৃত হবে বাচ্চা ছেলেমেয়েরা।
সেই লক্ষেই ধাপে ধাপে প্রতিটি স্কুলেই সবজি বাগান গড়ে তােলার চেষ্টা করছে স্কুল শিক্ষা দফতর। আমফানের ঝড়ে বহু স্কুলে পুরােনাে দামি গাছ ভেঙে পড়েছে। শাক-সবজি লাগানাের সঙ্গে সঙ্গে ফের নানারকম গাছ ও বনসৃজন করা হবে বলে দফতরের কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তাতে স্কুলগুলি সবুজে ভরিয়ে দেওয়া যাবে। আপাতত মুর্শিদাবাদে ২৩৪৮টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ২৩৬৪টি ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ২৬১৩টি স্কুলে সবজি বাগান অর্থাৎ “কিচেন গার্ডেন’করার লক্ষ্যমাত্রাকে সামনে রেখে এগােচ্ছে রাজ্য সরকার। একইসঙ্গে বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, ও পুরুলিয়ার স্কুলগুলিতে সবুজায়ন ও কিচেন গার্ডেনের প্রকল্প হবে।