খাগড়াগড়ের জিয়াউলের সঙ্গে কালিয়াচকের আসিফের যোগসূত্রের খোঁজে তদন্তকারী বিভাগ
শুভজিৎ চক্রবর্তী
সময় যত গড়াচ্ছে ততই ঘনীভূত হচ্ছে মালদহের কালিয়াচক হত্যাকাণ্ডের রহস্য। কালিয়াচক কান্ডের মূল অভিযুক্ত মহম্মদ আসিফের দুই বন্ধু সাবির আলি এবং মাফুজ আলিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁদের থেকে উদ্ধার হয়েছে একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র৷ এতেই সন্দেহ প্রবল হয়েছে তদন্তকারী অফিসারদের৷
খাগড়াগড় কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত পুরাতন ১৬ মাইল এলাকার জিয়াউল হকের সঙ্গে ওই একই এলাকার বাসিন্দা আসিফ, মাফুজ এবং সাবিরদের কোনও যোগ রয়েছে? কালিয়াচক কাণ্ডে তদন্তে নেমে নতুন দিকের খোঁজ শুরু হল। পুলিশ সূত্রে খবর, আসিফের দুই বন্ধু সাবির আলম এবং মাফুজ আলির কাছ থেকে ৫ টি সেভেন এমএম পিস্তল, ৮৬ রাউন্ড কার্তুজ এবং ১০ টি ম্যাগাজিন উদ্ধার হয়েছে। কিন্তু আসিফের পরিবারের খুনের সঙ্গে তাঁদের যোগ রয়েছে কি না তা নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়েছে।
অন্যদিকে, কালিয়াচকের পুরাতন ১৬ মাইল এলাকার বাসিন্দা জিয়াউল। আসিফের বাড়ি থেকে জিয়াউলের বাড়ির দুরত্ব ২০০ মিটার৷ খাগড়াগড় তদন্তকাণ্ডে নিয়োজিত সংস্থা এনআইএর তথ্য অনুযায়ী, শিমুলিয়া এবং মকিমনগরের মাদ্রাসায় অল্প বয়সী ছেলে মেয়েদের ট্রেনিং দিত জিয়াউল। আসিফের দুই বন্ধুর কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় জঙ্গি যোগের জল্পনা মাথাচাড়া দিয়েছে।
২৮ ফেব্রুয়ারি পরিবারের সকল সদস্যকে খুনের পর ১০ মার্চ সাইবার অপরাধের কারণে গ্রেফতার হয় আসিফ। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েনি সে৷ তার মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তদন্তকারী অফিসাররা।
স্থানীয়দের দাবী, এলাকারই একটি মিশন স্কুলে পড়ত আসিফ। প্রতিবেশীদের সঙ্গে খুব একটা মেলামেশা ছিল না। বাড়িতেই বেশীরভাগ সময় থাকত সে৷ প্লাইউড দিয়ে কফিন তৈরি করে বাবা মাকে মুখে সেলোটেপ লাগিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছিল আসিফ।
আসিফের ঘরে তদন্ত করে উদ্ধার করা হয়েছে একাধিক ল্যাপটপ, মোবাইল ফোন এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রাংশ। উদ্ধার হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। জানা গিয়েছে, নতুন অ্যাপ তৈরির কাজ করছিল সে। তদন্তকারী পুলিশ অফিসারদের প্রাথমিক অনুমান, ডার্ক ওয়েব ও সাইবার দুনিয়ার সঙ্গে যোগ থাকতে পারে আসিফের।
শক্তি প্রদর্শনে বাবার স্মৃতিতে মিছিলের আহ্বান চিরাগের
প্রতিবেশীদের তরফে জানা যায়, জাওয়াদ আলি স্ত্রী,কন্যা এবং মাকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছে বলে জানায় আসিফ। বাড়িতে অ্যাপ তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকত আসিফ। এমনকি কাজের জন্য মহারাষ্ট্র যাবে বলে জানায় সে। এর আগে বাবার সঙ্গে প্রায়ই বচসা লেগে থাকত আসিফের। দাবী ল্যাপটপ, মোবাইল কিনে দেওয়ার জন্য চাপ দিত আসিফ।
মনে করা হচ্ছে বিট কয়েনের ডার্ক ওয়েবে জড়িয়ে পড়ে লোকসান হয় আসিফের। যার ফলেই বাবা সহ পরিবারের সকলকে ঠান্ডা মাথায় ঘুমের ওষুধ খাইয়ে হত্যা করে আসিফ। বাড়ির ভিতরেই একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করে জলের ট্যাঙ্কে এনে জমা করে সে৷