আমফান পরবর্তী সময় নদী বাঁধ নিয়ে চিন্তিত সেচ দফতর বাঁধ পর্যবেক্ষণে চালু নয়া প্রযুক্তি

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ আমফানের পর বিপর্যস্ত দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলা। বহু জায়গায় এখনো পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের সময় হওয়া বর্ষার জল নামেনি। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা নদী বাঁধ গুলির।

রাজ্য সরকারের তরফ থেকে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নদী বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। তবে সমস্যা হল সামনে আসছে বর্ষা। দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের বন্যাপ্রবণ এলাকাগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্যের সেচ দফতর।

বন্যার পূর্বাভাস পাওয়া আর তা ঠেকাতে এই প্রথম রাজ্যের সেচ দফতর বিভিন্ন এলাকায় আধুনিক রিয়েল টাইম ডেটা অ্যাকিউইজেশন সিস্টেম (আরটিডিএএস) পদ্ধতি চালু করছে। উপগ্রহভিত্তিক এই পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে দক্ষিণবঙ্গ ও উত্তরবঙ্গের কয়েকটি কন্ট্রোল রুমে চালু করা হয়েছে।

সেচ দফতর সূত্রের খবর , রাজ্যের মােট ৯ টি কেন্দ্রে (মেজারিং সেন্টার) এই পদ্ধতি দ্রুত চালু করা গেলে বন্যার মতাে পরিস্থিতি এড়ানাে যাবে। কোথায় বন্যা হতে পারে এই যন্ত্রের মাধ্যমে তা আগেভাগেই জানতে পারা যাবে। ফলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবেন সেচ দফতরের কর্তারা।

হাইকোর্ট চলাকালীন নিখরচায় ১৫ টি বাসে কর্মীদের আনা নেওয়ার ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষের

রাজ্যের সেচ দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান,

  • আগে বর্ষার মরশুমে প্রতিটি জলাধারে গিয়ে জলস্তর মাপতে হত।
  • কোন জলাধারের জলস্তর বিপদসীমার কাছে পৌছেছে আর কোথায় জলস্তর বিপদসীমা পার করেছে বিভাগীয় ইঞ্জিনিয়াররা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেই রিপাের্ট তৈরি করে বিভাগীয় কর্তাদের কাছে পাঠাতেন।
  • সেই রিপাের্ট রাখা হত কন্ট্রোল রুমে।
  • এইভাবে রিপোের্ট সংগ্রহ করতে বিস্তর সময় লেগে যেত।
  • আর্থিক বােঝাও বাড়ত।
  • এই সব রিপাের্টের ভিত্তিতে বন্যাপ্রবণ এলাকায় বাঁধ মেরামতি করা বা নিচু এলাকা থেকে গ্রামবাসীদের নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া, বাঁধকে শক্ত করার মতাে কাজে নামতেন ইঞ্জিনিয়াররা ও দফতরের কর্মীরা।
  • কিন্তু, রিপাের্ট পৌছােতে প্রায়ই এতাে সময় লেগে যেত যে কাজে নামতেই বিস্তর দেরি হয়ে যেত।
  • ততক্ষণে বাঁধ ভেঙ্গে জল ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম ভাসিয়ে দিত।
  • কিন্তু নতুন এই আরটিডিএএস পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করতে দেরি হবে না।
  • উপগ্রহভিত্তিক এই পদ্ধতিতে জলস্তর সম্পর্কে মুহূর্তের মধ্যে সব তথ্য পাওয়া যাবে। কাজে নামতেও দেরি হবে না।

এছাড়াও ওয়েস্ট বেঙ্গল মেজর ইরিগেশন অ্যান্ড ফ্লাড ম্যানেজমেন্ট প্রােজেক্টটির রূপায়ণ করা হচ্ছে।

রাজ্যের সেচমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছেন, এই প্রকল্পটি রূপায়ণে বিশ্বব্যাঙ্ক ৩৫ শতাংশ, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক ৩৫ শতাংশ ও রাজ্য সরকার ৩০ শতাংশ টাকা খরচ করছে। এই প্রকল্প পুরােপুরি রূপায়ণ হয়ে গেলে হুগলি, হাওড়া জেলার নিম্ন-দামােদর এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।

একই সঙ্গে বাঁকুড়া, পশ্চিম ও পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া, হুগলি জেলার ডিভিসি প্রকল্পের সেচ খালগুলির সংস্কার দ্রুত করে ফেলা যাবে। বর্ষায় অবস্থা আয়ত্তে থাকবে। ফি বছর বন্যা ও বানভাসির আশঙ্কাও কমবে।

সম্পর্কিত পোস্ট