কেন্দ্রের ভূলনীতির কারণে রাজ্যে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যাঃ মুখ্যমন্ত্রী

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ  পরিয়ায়ীদের কারণেই বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। কেন্দ্রের ভুল পরিকল্পনার ফল ভুগতে হচ্ছে রাজ্যকে।

শুক্রবার হরিশ পার্কে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথাই বললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছেন করোনা ও আমফান দুর্যোগের মধ্যেও শুধুই রাজনীতি করছে বিরোধীরা। অথচ এই কঠিন সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর দল ও সরকার।

এদিন নাম না করেই বিজেপি একহাত নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, একদিকে আমরা যখন করোনা ও আমফান দুই সংকটের বিরুদ্ধে লড়াই করছি, এই অবস্থায় কি করে এই দুর্যোগ থেকে মানুষকে রক্ষা করা যাবে তার চেষ্টা করছি। তখন একটা রাজনৈতিক দল বলে বেড়াচ্ছে এদের ক্ষমতা থেকে তাড়াতে হবে। অমি তো বলছি না নরেন্দ্র মোদিকে ক্ষমতা থেকে তাড়াতে হবে। তাহলে আপনারা কেন এসব করছেন এখন? যান গিয়ে কাজ করুন।

রাজ্যের বিজেপি নেতাদের বিঁধে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, কোভিড সংকটে কেউ তো তিনমাস ভয়ে বাড়ির থেকে বের হন নি। ভয়ে তো সকলেই লিউকো প্লাসটার দিয়ে বাড়ির পেছনে লুকিয়ে ছিলেন। কাউকেই রাস্তায় দেখা যায় নি। একমাত্র আমরাই রাস্তায় ছিলম। প্রতিদিন অফিসে গেছি, বাজারে গেছি, হাসপাতালে গেছি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি।

এবার কলকাতায় আক্রান্ত ধরা পড়লে প্রতিবেশীদেরও পরীক্ষা

তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন,একটার পর একটা বিপর্যয় বাংলার উপর দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমফানের মতো বড়ো বিপর্যয় আগে ঘটেনি। এক দিকে কোভিড-১৯, অন্য দিকে ঘূর্ণিঝড়। তবে কোনো কাজই থেমে থাকেনি।

তিনি বলেন, গত ১০ দিনের মধ্যে পাঁচ লক্ষ গৃহহীনের কাছে টাকা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মত্‍স্যজীবী, পশুপালক এবং কৃষকদের কাছে আর্থিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। ২৫ লক্ষ কৃষককে, ১ লক্ষ পান বরোজের মালিককে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, তিন মাস ধরে রাজ্যের কোনও আয় নেই। কিন্তু সরকারি কর্মীদের বেতন, পেনশন দিতে হচ্ছে। প্রতি মাসে আমাদের সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা করে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। কারও আয় নেই। কিন্তু সরকারি কর্মীদের বেতন দিতে হচ্ছে, একই সঙ্গে করোনা এবং আমফানের মোকাবিলায় টাকা ব্যয় করতে হচ্ছে। রাজ্যের ঘাড়ে বিপুল ঋণের বোঝা, ৫৫ হাজার কোটি টাকার দেনা শোধ করতে হচ্ছে। তবুও আমরা প্রতিমাসের ১ তারিখে নিয়মিত সরকারি কর্মীদের বেতন দিতে পারছি। অন্য রাজ্য বেতন ছাঁটাই করলেও আমরা সে পথে হাঁটিনি।

এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দূষণ নিয়ন্ত্রণে এবং পরিবেশকে বাঁচাতে কলকাতায় ৫০ হাজার গাছ লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। আমফানের তাণ্ডবে সুন্দরবনে প্রচুর ম্যানগ্রোভ ভেঙে পড়েছে। উপকূলে ম্যানগ্রোভ লাগানোর কাজ চলছে।

অন্য দিকে ১৪ জুন বন দিবস থেকে আমরা সাড়ে তিন কোটি গাছ লাগানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি সারা রাজ্যজুড়ে। কেন্দ্র সরকার অপরিকল্পিতভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের রাজ্যে পাঠাচ্ছেন বলে এদিন ফের সরব হন মুখ্যমন্ত্রী।

তাঁর কথায়, কেন্দ্র তো অপরিকল্পিতভাবে পরিযায়ী ভাইবোনদের রাজ্যে পাঠাচ্ছে। রাজ্যে পাঠানোর আগে না তাঁদের ঠিক করে খেতে দেওয়া হয়েছে। না চিকিৎসা করা হয়েছে। অনেকেই তো অসুস্থ। তাঁরা ট্রেনে আসার সময়ই মারা যাচ্ছেন। এদিন এই নিয়েও বিজেপিকে একহাত নেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

সম্পর্কিত পোস্ট