করোনা পরিস্থিতিতে ক্রমেই বাড়ছে ডিমের দামও

দ্য কোয়ারি ওয়েবডস্কঃ আলুর পাশাপাশি এবার শহরের বাজারে বেড়েছে ডিমের দামও। কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে ডিম পাওয়া যেত সাড়ে চার টাকা থেকে পাঁচ টাকা দরে। তারই এখন দাম সাড়ে পাঁচ টাকা থেকে ছ’টাকা প্রতি পিস বিক্রি হচ্ছে। কোনও আবার গ্রাহকের গলা কেটে দাম নেওয়া হচ্ছে সাড়ে ছ’টাকাও। ফলে করোনা আবহে যেখানে শাক সবজি মাছের পাশাপাশি অগ্নিমূল্য ডিমও।

সহজলভ্য পুষ্টিকর খাবার হিসাবে পরিচিত ডিম বাঙালির পাতে খুবই জনপ্রিয় খাবার। আম বাঙালির খাদ্য তালিকায় এটি অপরিহার্য বললেই চলে। কিন্তু সম্প্রতি এই ডিমের দাম বাড়ায় সাধারণ মানুষের জন্য তা বাড়তি চাপের কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

এই মুহূর্তে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ডিম উৎপাদনে রাজ্যের সেরা। প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় প্রতিদিন ৩৩ লক্ষ ডিম উৎপাদন হয়। জেলায় দৈনিক চাহিদা ১৯ লক্ষ ডিম। ১৪ লক্ষ ডিম বাড়তি হয়।

সেগুলি পড়শি হুগলি, হাওড়া, তমলুক, কলকাতা সহ প্রভৃতি জায়গায় চলে যায়। জেলায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ৫৫-৬০টির মতো মুরগি ফার্ম রয়েছে। সেখানে মোট ৪২ লক্ষ মুরগি চাষ হয়। ফড়েরা সরাসরি চাষি ও ফার্ম থেকে ডিম সংগ্রহ করেন।

মুরগি চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, একটি মুরগিকে ছোট থেকে ডিম পাড়ার উপযুক্ত করতে দুশো পঞ্চাশ থেকে তিনশো টাকা খরচ পড়ে। এ বছর ভুট্টার দাম বেশি থাকায় খরচ বেড়েছে। তা না হলে ১৮০ টাকা খরচ হয়।

ছ’মাসের পর থেকে টানা এক বছর ডিম দেয় একেকটি মুরগি। বছরে ৩৩০টি ডিম পাওয়া যায়। আরও খরচ রয়েছে। খামার থেকে ডিম সংগ্রহ। ডিম পাড়ার সময় মুরগির প্রতিদিনের খাবার খরচ। সব মিলেই নির্ধারিত হয় ডিমের দাম।

এদিকে কলকাতা হোলসেল মার্কেট গত ২৯ শে অগাস্ট প্রতি ১০০ টি ডিমের দাম ছিল ৪৬৪ টাকা। ৩০ শে অগাস্ট সেই দাম পৌঁছয় ৪৭৫ টাকায়। ৩১ আগস্ট ৪৮৩ টাকায়। টানা তিন দিন ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৮৩ টাকা প্রতি ১০০ টি ডিমের দাম ছিল

হোলসেল মার্কেটে। ৩ সেপ্টেম্বর সেই দাম পৌঁছয় ৪৮৪ টাকায়। শুক্রবার অবশ্য কিছুটা কমে দাম ৪৬০ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
দ্য কলকাতা এগ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজল দত্ত বলেন, আনলক পর্বে দোকান খুলতেই কিছুটা চাহিদা বেড়েছে। তাই ডিমের দাম বেড়েছে। ফাস্টফুড ও রেস্তোরাঁ সব নিয়মিত খোলা থাকলে ডিমের দাম আরও অনেকটা বাড়ত।

http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/civil-society-calls-for-a-procession-in-the-city-to-protest-the-nias-summons-to-scientist-parthasarathy-roy/

পশ্চিমবঙ্গে উৎপাদনের থেকে ডিমের চাহিদা দেড় গুণ বেশি। কাজলবাবু আরও জানান সাময়িক কিছুটা নামলেও ডিমের দাম পুজোর আগে সেভাবে কমার কোন সম্ভাবনা নেই দেশের মার্কেটে।

এদিকে এপ্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বাজার নিয়ে তৈরি টাস্কফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলেও মেনে নিয়ে নিয়েছেন ডিমের দাম বৃদ্ধির কথা। তাঁর মতে, চাহিদার তুলানায় যোগান কম হওয়াতেই এই দাম বৃদ্ধি।

তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন ডিমের উৎপাদন হয় প্রায় ৮০ লক্ষ থেকে ১ কোটি। আমফান পরবর্তী বাংলায় ডিমের উৎপাদন ২০ থেকে ৩০ লক্ষ কমে গেছে।

পশ্চিমবঙ্গে প্রতিদিন ডিমের চাহিদা প্রায় আড়াই কোটি । এই ঘাটতি ডিম আসে অন্ধ্রপ্রদেশ তেলেঙ্গানা থেকে। এবার সেখানে পাখির প্রজনন ঠিকমতো না হওয়ায় চাহিদা মতো ডিম আসছে না সেখান থেকে।

আর এর প্রভাব বাজার দরে পড়ছে। একইসঙ্গে লাগাতার পেট্রোপণ্যর মূল্যবৃদ্ধিও ডিমের পরিবহণ খরচ বাড়িয়েছে। তাই এর প্রভাব বাজারের ওপর পড়তে বাধ্য।

সম্পর্কিত পোস্ট