লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি নিয়ে নবান্নকে চিঠি রেল বোর্ডের, ঝুঁকি নিতে চাইছে না রাজ্য
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পুজো যত এগিয়ে আসছে লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি তত জোরালো হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় লোকাল ট্রেন চালাতে যাত্রীদের বিক্ষোভ হচ্ছে। রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও লোকাল ট্রেন চালানোর কথা বলছেন।
এই অবস্থায় লোকাল ট্রেন চালানো নিয়ে আলোচনা চেয়ে রাজ্যকে চিঠি দিল রেল। বুধবার পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার রাজ্যের ডেপুটি চিফ সেক্রেটারিকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন, রাজ্যের বিভিন্ন মহল থেকে লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি জোরালো হচ্ছে। বহু জায়গায় এই নিয়ে যাত্রী বিক্ষোভ হচ্ছে। তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়ে রেলের সম্পত্তি নষ্ট করছেন। এই পরিস্থিতিতে রেল চায় রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ট্রেন চলাচলের বিষয়টি নিষ্পত্তি হোক। কীভাবে, কত ট্রেন, কবে নাগাদ চালানো যেতে পারে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে এই চিঠিতে।
রাজ্যে যেভাবে প্রতিদিন সংক্রমণ বাড়ছে তার পেছনে শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনগুলির একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন সরকারি মিটিংয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি উল্লেখও করেছেন।
রাজ্য সরকারকে এই সংক্রমণ সামাল দিতেই যথেষ্ঠ বেগ পেতে হচ্ছে। এই অবস্থায় লোকাল ট্রেন চললে সংক্রমণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তাও বোঝা যাচ্ছে না। তাই এখনই লোকাল ট্রেন চালিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইছে না রাজ্য সরকার।
নবান্ন সূত্রের খবর, এখন যে রাজনৈতিক দলগুলি লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য সরব হচ্ছে, সংক্রমণ বেড়ে গেলে তারাই সরকারকে কাঠগড়ায় তুলবে এই সিদ্ধান্তের জন্য।
তবে রাজ্য সরকার তাদের সে সুযোগ দিতে চায় না। আর সে কারণেই লোকাল ট্রেন চালানোর বিষয়টিকে সেভাবে আমল দিতে চাইছে না নবান্ন।
http://sh103.global.temp.domains/~lyricsin/thequiry/prime-minister-narendra-modi-will-inaugurate-the-bjps-puja-in-salt-lake/
এদিকে সাধারণ মানুষের স্বার্থে অবিলম্বে লোকাল ট্রেন চালানোর ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আবেদন জানিয়ে নবান্নে চিঠি দিয়ে জানালেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান ও বাম পরিষদীয় দল নেতা সুজন চক্রবর্তী।তাঁদের দাবি যেভাবে সতর্কতামূলক ভাবে মেট্রো রেল পরিষেবা যেভাবে চালু হয়েছে, ঠিক একইভাবে লোকাল ট্রেন চালানোর ক্ষেত্রেও ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
তাঁরা এও বলেন, আনলক পরিস্থিতিতে দোকান, বাজার, অফিস, কাছারি সব খুলে গিয়েছে। পুজোর দরুণ মানুষ ধীরে ধীরে কেনাকাটাতেও বের হচ্ছে। রুটি-রুজির টানে সাধারণ মানুষকে তাদের কর্মস্থলে যেতেই হচ্ছে। কিন্তু রাজ্যে গণপরিবহণ ব্যবস্থা এখন খুব দুর্বল।
পর্যাপ্ত বাস, মিনিবাস না থাকায় অশেষ দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে মানুষকে। সেই দুর্ভোগের ক্ষোভ থেকেই গত কয়েকদিন ধরে কলকাতা সংলগ্ন শহরতলিতে লোকাল ট্রেন চালানোর দাবিতে গণবিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না যায়, সেজন্য এনিয়ে রাজ্যকে এখনই পদক্ষেপ করা উচিত। রেলের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু করার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগ নিন এটাই আমরা চাই।
একদিকে ট্রেন বন্ধের ফলে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এদিকে রেলের ক্ষতির পরিমাণ কম নয়। শিয়ালদহ ও হাওড়ার লোকাল ট্রেনের সংখ্যা ১৩৮৭। যার মধ্যে শিয়ালদহের লোকালের সংখ্যা ৯২৭ ও হাওড়ায় ৪৬০টি।
শিয়ালদহ ডিভিশনে লোকাল ট্রেনের থেকে বার্ষিক আয় সাড়ে চারশো কোটি টাকা। হাওড়ায় ২২৮ কোটি টাকা। চলতি বছরে মার্চ থেকে এখনও পর্যন্ত এই আয় একেবারে শূন্য।
এমন পরিস্থিতিতে রেলকর্মীদের জন্য দুই ডিভিশনে ১৮২টি স্পেশ্যাল ট্রেন চলছে। যেখান থেকে কোনও আয় নেই। এদিকে নিরুপায় হয়ে বহু যাত্রী সেই ট্রেনে চড়ছেন। যাচ্ছেন জেলে। তবুও লোকাল ট্রেন চালু হচ্ছে না।