স্কুল সার্ভিস কমিশন অপদার্থ, নিয়োগ মামলার শুনানিতে SSC কে তীব্র ভর্ৎসনা হাইকোর্টের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ উচ্চ প্রাথমিকে অনিয়মের অভিযোগের ভিত্তিতে এবার সরাসরি এসএসসির চেয়ারম্যানকে তলব করল হাইকোর্ট। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছিল আগেই। শুক্রবার সেই মামলার শুনানির হওয়ার কথা। দুপুর ২টায় চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ জারী করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
শুক্রবার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী মামলার শুরু হলেও শুনানিতে বোর্ডের তরফে কেউ হাজির ছিলেন না। তাতেই ক্ষুদ্ধ হন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। এরপরেই চেয়ারম্যানকে দুপুর দুটোয় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
এদিন চাকরিপ্রার্থীদের দায়ের করা মামলার শুনানিতে এদিন হাইকোর্ট বলে, স্কুল সার্ভিস কমিশন অপদার্থ। কী ধরনের আধিকারিকরা চালাচ্ছেন কমিশন? প্রশ্ন তুলেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এদিন কলকাতা হাইকোর্ট বলে, “এই কমিশনকে অবিলম্বে খারিজ করা উচিত।” ২০১৯-এর ১ অক্টোবরের নির্দেশের পরেও কেন আদালতের নির্দেশ মেনে ইন্টারভিউ তালিকা প্রকাশ করা হয়নি? প্রশ্ন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের।
দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটে আটকে ছিল নিয়োগ প্রক্রিয়া। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়ে দেন প্রায় ৩৪ হাজার শূ্ণ্যপদে নিয়োগ করা হবে। সেই মোতাবেক ২১ জুন উচ্চ প্রাথমিকের ইন্টারভিউ লিস্ট প্রকাশ করে এসএসসি। তাতে জানানো হয় ১০ পার্শ্বশিক্ষক সংরক্ষণ বাদ দিয়ে মোট ১৪ হাজার ৩৩৯ শূন্য পদে নিয়োগ হবে।
এরপরেই সেই লিস্টের অনিয়মের অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন দুই প্রার্থী মৌমিতা মিত্র এবং শেখ জামালউদ্দিন। তাদের দাবি তাদের থেকে কম নম্বর পাওয়া প্রার্থীরা ইন্টারভিউ তালিকা জায়গা পেয়েছে। নেই তাদের নাম। মামলাকারীদের অভিযোগ সদ্য স্নাতক প্রার্থীরাও সেই তালিকায় স্থান পেয়েছেন। অথচ যে পরীক্ষার ভিত্তিতে এই তালিকা বছর কয়েক আগেই হয়ে গিয়েছে, বিষয়ভিত্তিক নম্বরের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ৩০ জুন সাংবাদিক বৈঠকে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যখনই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে, তখনই কেউ না কেউ মামলা করছে। যাঁরা এই কাজ করছেন, তাঁরা ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একেবারেই ভাবেন না। মমতার কথায়, “যখনই ছাত্র ছাত্রীদের একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট হচ্ছে তখনই কোর্টে কেস করে দিচ্ছে। এটা যারা করছে তাঁরা অন্যায় করছে। যে কেউ মামলা করতেই পারে। কোর্টের ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।”
শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে বিস্ফোরক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, “কারা কোর্ট কেস করছে, কারা? এরা সমাজের বন্ধু? এরা ছাত্র ছাত্রীদের বন্ধু? চাকরি পাবে ৩৫ হাজার ছেলে মেয়ে তাঁদের জন্যে সব রেডি করা হল। হটাৎ করে একটা কোর্ট কেস করে দিল! আমি কোর্টের ব্যাপারে কোন মন্তব্য না করেও বলব, প্লিজ সি দ্যা ফিউচার অব দ্যা স্টুডেন্ট।”
এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারির উদ্দেশ্যে বলেন, “সোজাসুজি বলুন নিজেরা সামনে দাঁড়িয়ে। শুধু ল-ইয়ার পাঠিয়ে দিলেই হবেনা। একজন প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি হিসেবে নিজে দাঁড়িয়ে বলুন, আমার ৩৫ হাজার ছেলে মেয়ে চাকরি পাবে। তাঁদের সব কিছু রেডি হয়ে থাকার পরেও আমরা দিতে পারছিনা।”