কৃষকদের আয় বাড়াতে এবার কৃষক মান্ডির খালি জমি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকারের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্যের কৃষি উদ্যোগকে উৎসাহ দিতে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিল নবান্ন। নবান্নের তরফে কৃষক বাজারের অব্যবহৃত জমিকে কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মূলত এই জমি গুলিতে কৃষি নির্ভর শিল্প গড়ে তুলতে চাইছে রাজ্য সরকার। আর সেই লক্ষ্যেই জেলা প্রশাসনকে পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিল নবান্ন।
রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই এই নিয়ে নবান্নের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন জেলার জেলাশাসকদের এক দফা বৈঠক হয়েছে।
এই বৈঠকে জেলার বণিক মহলের সঙ্গে আলোচনা করে কিভাবে ওই কৃষক বাজার সংলগ্ন এলাকায় কৃষি নির্ভর শিল্পকে উৎসাহ দেওয়া যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করতে বলা হয়েছে।
মূলত কৃষক বাজার গুলো নিয়ন্ত্রিত হয় কৃষি বিপণন দফতরের মাধ্যমে। এই মুহূর্তে রাজ্যে মোট কৃষক বাজারের সংখ্যা ১৮৬ টি। এরমধ্যে ১৭৬টি বাজার ইতিমধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী কৃষি উপদেষ্টা প্রদীপ মজুমদারের কথায়, ইতিমধ্যেই আমরা রাজ্যে কৃষক বাজারের জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করেছি। প্রত্যেক কৃষক বাজার এই কমবেশি তিন থেকে সাড়ে তিন একরের মত অব্যবহৃত জমি রয়েছে।
এই মুহূর্তে ওই অব্যবহৃত জমিতে রাজ্য সরকার চাইছে কৃষির অনুসারী শিল্প স্থাপন করতে। আর এই অনুসারী শিল্প গঠন করা গেলেই কৃষক বাজার গুলির গুরুত্ব আরও বাড়বে। একইসঙ্গে কৃষকদের আয়ও বাড়বে।
করোনা উপেক্ষা করে মুখ্যমন্ত্রীর যোগ্য সৈনিকের ভূমিকা পালন করলেন কারা?
দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে প্রায় ৬০ টির বেশী কৃষক বাজারের ফাঁকা জমি গন বন্টনের জন্য ধান সংগ্রহের কাজে ব্যবহৃত হয়। এরমধ্যে আবার কিছু কৃষক বাজারে এই ধান সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
রাজ্য সরকার চাইছে এই জমি গুলি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং, কোল্ডস্টোরেজ, ধান ও ময়দার কল প্রভৃতি পরিকাঠামোর জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। পশুখাদ্য বা মৎস্য খাদ্যের জন্য এই পরিকাঠামো ব্যবহার হতে পারে।
একাধিক জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই একাধিক জেলা শাসক জেলার বণিক মহল গুলিকে, ফিশারিজ অ্যাসোসিয়েশন, পোল্ট্রিস অ্যাসোসিয়েশন, রাইস মিলস এন্ড ফ্লাওয়ার মিলস অ্যাসোসিয়েশন গুলিকে এই পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার জন্য আহবান জানিয়েছেন। ছোট ফুড চেইন গুলিকেও এই কৃষক বাজার গুলিতে তাদের ইউনিট খোলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
নবান্নে তরফে জানানো হয়েছে, প্রয়োজনে কৃষি অনুসারী শিল্প স্থাপনে আগ্রহীদের সরকার সাহায্যও করবে। তবে একথাও জানা গিয়েছে যারা এই খালি জমিতে শিল্প করতে আগ্রহী তাদের সরকারকে এই নিশ্চয়তা দিতে হবে দ্রুত তারা এই ব্যবসার জন্য পরিকাঠামো তৈরি করবে। জমি নিয়ে বছরের পর বছর ফেলে রাখা চলবে না।
আসলে রাজ্য সরকার চাইছে কৃষির সঙ্গে যুক্ত মানুষ তাদের ফসলের যোগ্য দাম পাক। তাই কৃষি অনুসারী শিল্প, প্যাকেজিং বা কোল্ড স্টোরেজ কৃষক বাজারের মধ্যে থাকলে কৃষকের আয় আরও বাড়বে। তাদের অভাবী বিক্রি কমবে।
আসলে বরাবরই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের মূল মন্ত্র হল কৃষি এবং শিল্পের মেলবন্ধন। সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের কৃষক আন্দোলন থেকে উঠে আসা এই সরকার বরাবরই যে কৃষক বন্ধু তা তাদের নীতিগত অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে।
মূলত সরকারে কৃষি নির্ভর শিল্প স্থাপনের উপর জোর সে পথেই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।