সিলেবাসে নেই ধর্মনিরপেক্ষতা-নাগরিকত্ব-দেশভাগ, স্তম্ভিত মমতা
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ কোভিড পরিস্থিতিতে ছাত্রছাত্রীদের বোঝা কমাতে সিলেবাস সঙ্কুচিত করার কথা বলেছিল কেন্দ্রীয় বোর্ড সিবিএসই।
বুধবার নতুন সিলেবাস ঘোষণার পর দেখা যায় গণতান্ত্রিক অধিকার, ভারতে খাদ্য নিরাপত্তা, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, নাগরিকত্ব এবং ধর্মনিরপেক্ষতার মতো অধ্যায় ছেঁটে ফেলা হয়েছে।
তা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এই খবর শেয়ার করে গোটা বিষয়ের তীব্র বিরোধিতা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘নাগরিকত্ব, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, ধর্মনিরপক্ষেকতা, দেশভাগরে মতো বিষয়কে সিবিএসইর সিলেবাস কমানোর নামে পাঠ্যক্রম থেকে কেন্দ্র বাদ দিতে চাইছে জেনে আমি স্তম্ভিত। আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি এবং কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের কাছে আর্জি জানাচ্ছি যাতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি বাদ না দেওয়া হয়। বুধবার এমনই ট্যুইট করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
নেত্রীর মতোই সোশ্যাল মিডিয়ায় এই নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল নেতারা। মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রী রমেশ পোখরিয়াল নিশঙ্ক টুইটে জানিয়েছিলেন, ‘প্রত্যেক বিষয়ের মূল ধারণাগুলিকে কাটছাঁট না করেও ৩০% পর্যন্ত পাঠ্যক্রম কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
তবে যে সব অংশ বাদ দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিলই। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেই সিলেবাস কমানো হচ্ছে। টুইটারে কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পোস্ট করেছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর, জয়রাম রমেশ, সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মতো অনেকেই। অভিযোগ, রাষ্ট্রবাদী মতাদর্শ চাপিয়ে দিতেই মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কনটেনমেন্ট জোনগুলি পুনরায় নির্ধারণের নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
অটলবিহারী বাজপেয়ী জমানায় যখন মুরলী মনোহর যোশী মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী, তখন অভিযোগ উঠেছিল শিক্ষায় গৈরিকীকরণ চলছে।
তারপর ২০০৪ সালে প্রথম ইউপিএ সরকার তৈরি হওয়ার পর মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্ব পেয়ে অর্জুন সিং বলেছিলেন, আগে শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাফাই করা হবে।
মূলত, এরই প্রতিবাদ করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মতে, আদতে এসবের মাধ্যমে কেন্দ্রের সরকার ইতিহাস ও সংস্কটতিকে বদলে দিতে চাইছেন। তিনি বলেন, বাংলার মানুষ কোনওভাবেই কেন্দ্রের এই ইতিহাস বদলের চেষ্টা মেনে নেবে না।
এদিকে বাংলার বিজেপি নেতৃত্ব মুখ্যমন্ত্রীর এহেন বক্তব্যে রাজনীতির আঁচ পাচ্ছেন। বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার, তৃণমূল সুপ্রিমো সবেতেই রাজনীতি খুঁজে পান। কিন্তু কেন্দ্র এখানে সিলেবাস থেকে বিষয়গুলিকে ছেঁটে দেন নি।
বরং ছাত্র-ছাত্রীদের বোঝা কমাতে এবারের মতো এই বিষয়গুলি পরীক্ষায় আসবেনা বলেছে। এতে রাজনীতি খোঁজা উচিত নয় তৃণমূলের।