একের পর এক ঘটনায় পঞ্চায়েত ভোটের আগে কতটা চাপে তৃণমূল ?

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ দুর্নীতি ও পাচার, বাংলার খবর বলতে এখন এই। টেলিভিশন, খবরের কাগজ বা অনলাইন নিউজ পোর্টাল, যাতেই চোখ রাখা যাক না কেন সর্বত্র হয় দুর্নীতির স্বরূপ উন্মোচন, না হয় দুর্নীতির জন্য বঞ্চিত কীভাবে লড়াই করছে অথবা দুর্নীতি ও পাচারে অভিযুক্ত কত সম্পত্তি করেছেন।

ঘটনাচক্রে প্রায় সবকটি ক্ষেত্রেই প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে উঠে আসছে তৃণমূল নেতাদের নাম। অথবা তাদের ঘনিষ্ঠ আমলা বা ব্যবসয়ী জড়িয়ে থাকছেন। এই বিষয়টি নিঃসন্দেহে আমজনতার মনে প্রভাব ফেলেছে।

ট্রেনে-বাসে বা চায়ের ঠেকে কান পাতলেই শুনতে পাবেন সরকারি দলের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়া নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। এমনকি তৃণমূল সমর্থক বলে পরিচিতরা ক্ষোভ গোপন রাখছেন না। এই মাসখানেক আগেও পাড়ার যে তৃণমূল কর্মীদের দাপটে দেখার মতো ছিল তারাও যেন কেমন একটি মিইয়ে গিয়েছে।

এদিকে সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। আর বড়জোর ৬-৭ মাস বাকি। স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের। কিন্তু কতটা?

ইন্টারনেট ও কেবল নেটওয়ার্কের দৌলতে এখন শহর ও গ্রামের মধ্যে পার্থক্য বিশেষ নেই। গ্রামের মানুষ‌ও সমানভাবে সব খবর পায়। তাই বর্তমান পরিস্থিতির কিছুই তাদের অজানা নয়। কিন্তু আজ‌ও বাংলার শহর ও গ্রামের রাজনীতির মধ্যে ফারাক আছে।

মোদির জন্মদিনে বিজয়নের ট্যুইটেই শেষ সিপিএমের লম্ফঝম্ফ

শহর অনেক তাড়াতাড়ি রিয়্যাক্ট করে, জড়তা ভেঙে দ্রুত প্রতিবাদে সোচ্চার হয়ে ওঠে। সেখানে গ্রামবাংলা ব্যতিক্রমী পথে হেঁটে সাধারণত ক্ষমতাসীনদের পাশেই থেকে এসেছে। তার মধ্যে দোদুল্যমান অবস্থা কম দেখা যায়।

তবে রাজ্যের সর্বত্র গ্রামীণ পরিস্থিতি এক নয়। দক্ষিণবঙ্গের গ্রামের সঙ্গে পশ্চিমাঞ্চলের বা উত্তরবঙ্গের কৈন‌ও গ্রামের পরিস্থিতির আসমান জমিন ফারাক আছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি‌ও আলাদা।

তবে মমতা সরকারের একের পর এক সামাজিক প্রকল্পের সুফল সবচেয়ে বেশি গ্রামের মানুশ‌ই পেয়েছে। তার সুফল ২১ এর বিধানসভা ভোটেও পেয়েছে তৃণমূল। সেই পরিস্থিতির খুব বদল‌ও ঘটেনি। তবে এস‌এসসি নিয়োগ দুর্নীতির ফলে গ্রামের মানুষ‌ই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার প্রভাব‌ও পঞ্চায়েত ভোটে পড়বে।

সেইসঙ্গে কয়লা, বালি পাচারকারীদের সঙ্গে শাসকদলের স্থানীয় নেতৃত্বের একাংশের যোগসাজশের জেরে ক্ষমতার যে নেক্সাস তৈরি হয়েছে তাতে অতিষ্ট বহু মানুষ। এই নিয়ে ক্ষোভ আছে। তবে বিরোধীরা চেষ্টা করলেও এখনও গ্রামে তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো সংগঠন গড়ে তুলতে পারেনি। এই বিষয়টা আবার শাসকদলকে অ্যাডভান্টেজ দেবে।

ফলে ২৩ এর পঞ্চায়েত নির্বাচনে শুধু দুর্নীতি বা পাচার নয়, আর‌ও বহু বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। তাই তৃণমূল কংগ্রেস এখন‌ই মাইনাসে চলে গিয়েছে এই কথা বলার যেমন সময় আসেনি, তেমনই বিরোধীরা বসে বসে গোল খাবে তাও বলা চলে না। বরং কাঁটে কা টক্কর হ‌ওয়ার সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট