মেয়ো রোডে বিক্ষোভ মঞ্চে উপস্থিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

দ্য কোয়ারি ডেস্ক: কৃষি আইনের প্রতিবাদে মেয়ো রোডে প্রতিবাদ কর্মসূচী তৃণমূলের৷ তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্নার নেতৃত্বে চলছে অবস্থান কর্মসুচী। বৃহস্পতিবার এদিনের অবস্থান কর্মসূচীতে উপস্থিত হয়েছেন মমতা বন্দোপাধ্যায়।

এদিনের অবস্থান মঞ্চে উপস্থিত রয়েছেন তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর বার্তা: 

বেচারাম মান্নকে ধন্যবাদ যার নেতৃত্বে কৃষি আইন বাতিলের প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসুচী করছেন। সকলকে একজোট হয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে৷

আমি নিজে আমার জীবনে ধর্মতলার মোড়ে অনশন করেছিলাম। কঠিন অবস্থার মধ্যে দিয়ে রাতের পর রাত কাটিয়েছি কৃষকদের জমি অধিগ্রহণ করতে দেবো না।

জোর করে চাষিদের জমি কেড়ে নেওয়া প্রতিবাদে বিডিও অফিস ঘেরাও করি। আমাকে মারা হয়েছিল। দুর্গাপুজোর দিনগুলিতে নার্সিংহোমে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছিল। আমার স্নায়ুস্পন্দন হয়েছিল ৪০ এর নীচে।

জীবন মৃত্যু নিয়ে এর আগে অনেক লড়াই হয়েছে। কখনও সবং, কেশপুর, কোচবিহারে হয়েছে।

মেমারিতে ৪ জনকে হত্যা করা হয়েছিল নৃশংসভাবে। বাচ্ছাকে পুড়িয়ে টিনের মধ্যে পুড়িয়ে মারা হয়। আমি কোনওদিন এই সমস্ত কথা ভুলব না।

বিক্ষোভ নয়, হেডলাইনে অবস্থান মঞ্চ করো। ২১ দিন কলকাতায় মানবধিকারের জন্য ধর্না দিয়েছিলাম। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নরশিমা রাও পরে চিঠি দেন মেনে নেন।

বাংলাজুড়ে বিজেপি কিছু করেনি। শুধু ঘেউ ঘেউ করে।

এনআরসি নিয়ে ২০ লক্ষ মানুষের জন্য আমরা লড়াই করেছি। লড়াই করেছি সিএএ এর প্রতিবাদে। চুপ করে বসে আছে সময়মতো লাগু করে দেবে।

আলুর দাম যখন বেড়ে যেত তখন আমরা চাষীদের থেকে কিনে পরে সেটাকে কোলস্টোরেজে রেখে বাজারে চাহিদা বেড়ে গেলে ছেড়ে দিতাম।

কিন্তু আজ কেন্দ্র এমন আইন করেছে। চাহিদা যখন গ্রীষ্মকালে বাড়বে, তখন মানুষ বুঝতে পারবে।

নরেন্দ্র মোদির সরকার কোনও গণতন্ত্র মানছে না। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো মানছে না। যখন যা পারছে তাই করছে। রাজীব গান্ধীর ৪০০ সাংসদ ছিল কিছু করেনি। এরা ৩০০ সাংসদ নিয়ে যা ইচ্ছে তাই করছে।

আমি আরএসএসকে হিন্দু ধর্মের প্রবর্তক বলে মনে করিনা। যারা গান্ধীজী হত্যা করেছে তাদেরকে সমর্থন করিনা। এরা নতুন হিন্দু ধর্মের আমদানী করছে।

একটা ঘৃণ্য ধর্মের আমদানী করছে। হিটলার একদিন এভাবে হিটলার হয়েছিল। আর এখন নরেন্দ্র মোদির সরকার সমস্ত কিছু ভিডিও করে পাঠিয়ে দিচ্ছে।

তাদের পরিচয় কেউ জানেনা। দিল্লিতে কতজন মারা গিয়েছিল কেউ জানে না। প্রত্যেকটা আন্দোলন নষ্ট করছে একাধিক ইস্যুর কথা মাথায় রেখে।

আজ কৃষকের সব লুট করে নেবে। আমফানে এক পয়সা দেওয়ার ক্ষমতা নেই বলে কৈফিয়ত দাও।
আমাদেরকে পিএম কেয়ার ফান্ডের হিসেব দিতে হবে।

আমার পরিবারের কেউ অন্যায় করলে শাস্তি পাবে। রেলের মধ্যে অত লোককে জ্বালিয়ে মারা গুজরাটের কথা কি মানুষ ভুলে গেছে। হাজার হাজার টাকা দিয়ে সংসদ বানাবে। আমার মনে হয় এখন সংসদ ভবন না বানিয়ে কৃষকদের দেওয়া উচিত ছিল।

অত্যাবশকীয় পণ্যের তালিকা থেকে আলু পিয়াজ তেল বাদ দিয়েছে। যা বিক্রি করে সবেতে নিজেদের নির্ধারণ করা দাম লাগিয়ে দেবে।

আপনার সবজির দাম পাবেন না। নয়ডার ১০০ একর জমির ওপর স্টোরেজ বানানো হচ্ছে। মানুষ ধান পাবে না। পাবে কয়েকজন হিটলারের দল।

কাল কিছু গুন্ডাকে নিয়ে জনসংযোগ করতে গেছে। সমস্ত ট্যাক্স নিয়ে নেয় কেন্দ্র সরকার। বাংলার জন্য কিছু দেয়নি। আমফানে ১০০০ কোটি রাজ্যের খাতের টাকা অগ্রিম দিয়েছে।

সমস্ত রাজ্য থেকে বেশী করে ধান কেনা হচ্ছে। কিন্তু বাংলা থেকে কম ধান কেনা হচ্ছে। আমরা ৪৩ লক্ষ টন ধান কিনেছি। বাংলাকে বঞ্চনা করা হচ্ছে। জুন মাসের পরেও বিনা পয়সায় খাদ্য দেব।

এদের নাম আয়ুষ্মান না, আয়ু ভবো। তুমি মিথ্যা বলছে মিথ্যার বিরুদ্ধে লড়বে।

৫ লক্ষের টাকা রাজ্যকেও দিতে হবে। আমরা ঠিক করেছি মানুষকে এক পয়সা দিতে হবে না৷ সকলে ফ্রি পাবেন।

বাড়ির মহিলারা পাচ্ছেন এই স্মার্ট কার্ড।সমস্ত স্বাস্থ্য বিনা পয়সায়।

আমরা প্রাইভেট হাসপাতাল ৫৫ টি নিয়েছি সেখানেও বিনামূল্যে চিকিৎসা করেছি। যারা মারা গিয়েছেন তাদের যথাযোগ্য সাহায্য করেছে সরকার।

তিন কৃষি বিল প্রত্যাহার করতে হবে। কৃষকের ধান তুলে নিয়ে কালোবাজারি করলে সাধারণ মানুষ খেতে পাবে না।

খাদ্য তেলকে জরুরী খাদ্য তালিকা থেকে বাদ দিলে চলবে না। ডেটা কালেকশান করে সমস্ত কিছু জেনে নিতে চাইছে।

এখন ওয়ান নেশন ওয়ান ম্যান করতে চাইছে। মানে বিজেপি শুধু থাকবে আর কেউ না। এসব চলবে না।

১১ থেকে ২১ অবধি কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঙ্গধ্বনী যাত্রা করবে তৃণমূল। রেল স্টেশনের সামনে পথসভা, বাজারে পথসভা করে বিজপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার বার্তা দেন। কৃষি আইন, বেসরকারিকরণ এর প্রতিবাদে চলবে কর্মসূচি।

গ্রামে বাইরের কাউকে দেখলেই সমস্ত কিছু জিজ্ঞেস করবেন।

ফায়ার ব্রিগেড ডাকো আগুন লেগেছে। আমি বলি ফায়ার ব্রিগেড ডাকা হোক যাতে তার মাথায় জল ঢালা হোক।বাবুরা কালকেও মিটিং করে বলেছে রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে জন্মগ্রহণ করেছে। তাহলে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি কোথায় গেল?

এটা বাংলার লজ্জা। প্রতিরোধ করুন। বাংলার মাটি মাথানত করে চলবে না। ইশ্বচন্দ্রের মুর্তি ভাঙা, বীরসা মুন্ডা নামে অন্য কাউকে বসিয়ে ফেক নিউজ ছড়াচ্ছে বিজেপি।

২০০১ এর মে মাস থেকে ২০১১ সালের মে মাস অবধি ছিল ৬৬৩।

কলকাতা নিরাপদ শহর দুবার। মিথ্যা কথা বলে বিজেপি।

সব জায়গায় সমস্ত পুজো হয়েছে। এরা হচ্ছে নিষ্কর্মার ঢেকি। সপ্তাহে চার ঘন্টা করে মিডিয়াতে ভাষণ দেবে।

এখন মিত্রো বন্ধ হয়েছে। ভ্যাকক্সিন চলছে। ভ্যাক ভ্যাক করতে করতে দলটা শেষ হবে। বাংলাদেশের ঘটনাকে বাংলার ঘটনা বলে দাবী করা হচ্ছে।

বেইজ্জোত করা ছাড়া আর কিছু জানা নেই। ছাগলের তৃতীয় ছানারা হয়েছে বাবুদের এক নম্বর ছানা। তৃণমূলের হয়নি সারদা। সিপিএমের আমলে হয়েছে।

ছবিটা কে তুলল? ভিডিওটা কে করল? সব এমনি এমনি হয়ে গেল? তোমার এত কিছু নিরাপত্তা থেকেও কি করে ঘটনা হবে।

এক একটা গুন্ডাকে সিকিউরিটি দিয়ে রেখেছে। আর রাজ্য সরকারকে জানায় না। রাজ্যের ওপর নির্ভর করলে আমরা দিই। আমরা সকলকে সম্মান দিই।

আমি পুলিশকে বলেছি সব খতিয়ে দেখতে। সব মিথ্যা সহ্য করব না। যতবার আমি দিল্লি যাই আমাকে ঘেরাও করে। সম্মান পেতে গেলে অন্যকে সম্মান করতে হয়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি নিয়ে আমরা লজ্জিত ক্ষমাপ্রার্থী এই পোস্টার নিয়ে আন্দোলন চলুক।

সম্পর্কিত পোস্ট