উত্তরের পরেশ শুধু নয়, দক্ষিণের শাসক মন্ত্রী-বিধায়কদের‌ও নাম উঠে আসছে SSC কেলেঙ্কারিতে

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ পরেশ অধিকারী উত্তরবঙ্গের মানুষ এবং সেখানকার বিধায়ক। বেশ ভালোভাবে তাঁর নাম এসএসসি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছে। আদালতের নির্দেশে তাঁর মেয়ের চাকরিও গিয়েছে। শুধু তিনিই এসএসসি কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে আছেন তা কিন্তু নয়।

বরং দক্ষিণবঙ্গের অসংখ্য নেতা-মন্ত্রীদের নাম এক এক করে উঠে আসছে। তাঁরা নাকি অনৈতিকভাবে নিজের ঘনিষ্ঠদের চাকরি পাইয়ে দিয়েছেন এমন অভিযোগ আছে। কেউ কেউ মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে অন্যের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছিলে। ঘটনাচক্রে যাদের নাম উঠছে তারা সকলেই শাসক দলের নেতা মন্ত্রী বিধায়ক।

পুরুলিয়া এক বিধায়ক তৃণমূলে থাকাকালীন নিজের পরিবারের ৯-১১ জন সদস্যের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের চাকরি ব্যবস্থা করে দেন বলে অভিযোগ। তবে বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে গিয়ে ফের জিতে তিনি বিধায়ক হয়েছেন! মজার বিষয় হচ্ছে ওই নেতা একসময় নিজের মুখেই স্বীকার করেছিলেন মেধাতালিকায় নিজের প্রভাব খাটিয়ে পরিজনদের চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

এ ক্ষেত্রে লক্ষণীয় বিষয় হল শুধু এসএসসি নয়, প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকদের চাকরি নিয়েও দুর্নীতির জাল আরও অনেক দূর বিস্তৃত। বিরোধীদের অভিযোগ তৃণমূলের গড় বলে পরিচিত দক্ষিণ ২৪ পরগনায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতি পাহাড়প্রমাণ।

সরল স্বীকারোক্তি নাকি বেফাঁস মন্তব্য? মমতার মন্ত্রী চন্দ্রনাথকে ঘিরে সর্বত্র প্রশ্ন

একাধিক শাসকদলের বিধায়কের বিরুদ্ধে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে মোটা টাকার বিনিময়ে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার অভিযোগ আছে। এর জন্য তাঁরা শিক্ষা দফতরের প্রভাব খাটিয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানতে পারা যাচ্ছে।

উপরের তলার কিছু দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর জানা থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে নিচুতলার এই অনিয়ম আগে নবান্নের নজরে ছিল না। তবে রাজ্যের বর্ষিয়ান আমলারাই বলছেন, নজরদারি ব্যবস্থা যে যথাযথ নয় সেটা প্রমাণ হয়ে গেছে। তাঁরা দুর্নীতির বহর দেখে যতটা না অবাক হচ্ছেন তার থেকেও বেশি অবাক হচ্ছেন এই বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির খবর কেন ঠিক সময়ে নবান্নের কানে এসে পৌঁছল না।

এসএসসিতে রাজ্যের তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা এই মুহূর্তে সিবিআইয়ের আতশ কাঁচের তলায়। সূত্রের খবর তদন্ত আর‌ও এগুলে শাসক দলের অন্যান্য নেতাদের‌ও ডাকতে পারে সিবিআই। তবে গোটা বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল দুই-একজন বলছেন, সত্যিই যদি সঠিকভাবে তদন্ত হয় তবে ঠক বাছতে গাঁ উজাড় হয়ে যাবে!

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্তর মিলিয়ে কমপক্ষে ছয় থেকে আট হাজার শিক্ষকের চাকরি খারিজ হয়ে যেতে পারে। এর ভয়াবহ প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা আছে বাংলার অর্থনীতি ও সমাজে। কারণ শুধুই যে চাকরি চলে যাওয়া বা এত দিনের বেতন ফেরত দিতে হবে তা নয়, এরা প্রত্যেকেই ৫ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ‘ঘুষ’ দিয়ে চাকরিটা পেয়েছিলেন। সেই টাকাও জলে গেল।

সম্পর্কিত পোস্ট