“ঠিকাদার থিংকট্যাংক কোম্পানি ঢুকে পড়ে তছনছ করে দিচ্ছে ঘরবাড়ি”-বিস্ফোরক মন্তব্য তৃণমূল বিধায়কের
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে অসন্তোষ ছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের ড্যামেজ কন্ট্রোলে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজিস্ট প্রশান্ত কিশোরকে নিযুক্ত করেন মমতা। কিন্তু সময় যতই গড়াতে শুরু করে ততই প্রশান্ত কিশোরকে কেন্দ্র করে দলের অন্দরে ক্ষোভ বাড়তে শুরু করে। পরে কমিটি গঠনে প্রশান্ত কিশোরের আই প্যাক সংস্থার গুরুত্ব বাড়তে থাকায় দলের মধ্যে আড়াআড়ি মনোভাব চরমে পৌঁছায়।
এই ঘটনায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ প্রভাব পড়েছে কোচবিহার তৃণমূলের শিবিরের। গত মাসেই ব্লক কমিটিতে নিজের দেওয়া নামের কোনও সদস্য জায়গা না পাওয়ায় দলের সমস্ত পদ থেকে সরে দাঁড়ান কোচবিহার দক্ষিণের তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। শুক্রবার সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি ছিটিয়ে ফেসবুক পোস্ট করলেন মিহির গোস্বামী।
তিনি বলেন, “গত দশ বছরের শাসন ক্ষমতা ভোগ করার সময়ে দিদিকে ঘিরে যে পারিষদ বলয় তৈরি হয়েছিল তার থেকে সামাজিক দূরত্ব রেখে গিয়েছি বরাবর। তবু গত দশ বছরে দলের মধ্যে অপমানিত হয়েছি অগুনতিবার। কিন্তু তাই বলে দিদির উপর আস্থা হারাইনি। আজ যখন দেখছি দিদির দলে কোনো ঠিকাদার থিংকট্যাংক কোম্পানি ঢুকে পড়ে তছনছ করে দিচ্ছে ঘরবাড়ি, অপমানিত জনপ্রতিনিধিরা প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অথচ দিদি অন্তরালে নির্বিকার, তাহলে সেই ঘরবাড়ির মতই দিদির প্রতি এতদিনের সব আস্থা ভেঙে চুরমার হয়ে যাওয়াটাই কি স্বাভাবিক নয়?”
তৃণমূল বিধায়কের এই মন্তব্যে সরগরম হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। তবে কি দল পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেন মিহির বাবু? কারণ গতমাসে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেওয়ার পরে মিহির বাবুর বাড়িতে দেখা করতে যান কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। শুধুমাত্র সৌজন্যের সাক্ষাৎকার বলে হলেও এই পিছনে রাজনৈতিক প্যাঁচ রয়েছে তা বলার অবকাশ থাকে না।
রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের নতুন জেলা কমিটি গঠনের পর থেকেই কোচবিহার তৃণমূলের মধ্যে আড়াআড়ি মনোভাব দেখা দিয়েছে। নতুন জেলা তৃণমূলের সভাপতি পার্থ প্রতিম খুব মুষ্টিমেয় বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করছেন। আবার কোথাও বিধায়কদের বৈঠকে পার্থর অনুপস্থিতি নজরে আসছে।
সব মিলিয়ে তোর্সা পাড়ের রাজনীতির হাওয়া বদলাতে শুরু করেছে। জায়গা পেতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। কোচবিহার বিজেপি সভাপতি মালতি রাভা বলেন, এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে শাসক দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রায়শই লেগে থাকে। লোকসভা নির্বাচনের আগে যেমন কোচবিহারের একাধিক জায়গায় হিংসামূলক ঘটনা লেগে থাকতো, বিধানসভার আগেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। রাজনৈতিক অধিকার থেকে বিজেপিকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, অভিযোগ জেলা বিজেপি সভাপতির।