তৃণমূলকে একবারে উপড়ে ফেলতে হবে, দাঁতনের জনসভায় হুঁশিয়ারি শুভেন্দুর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজনৈতিকভাবে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ দক্ষিণবঙ্গ। একদিকে ডায়মন্ড হারবারে জনসভায় শুভেন্দুকে কটাক্ষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য। অন্যদিকে দাঁতনে সভা করে প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তৃণমূলের নেতাদের ছিন্নমুল বলে দাবী করলেন তিনি। সেইসঙ্গে সরাসরি তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা। বললেন, দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি নেতার জন্য জেলার নেতাদের বঞ্চিত হতে হয়েছে। জেলার নেতারা যোগ্য সম্মান পায়নি বলে দাবী করেন তিনি।

এদিন দাঁতন বাসস্ট্যান্ড থেকে সরাই বাজার অবধি জনসভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর জনসভায় ভাষণ রেখে সরাসরি তৃণমূলকে একহাত নিলেন তিনি। তিনি বলেন, শনিবার বিজেপিতে যোগদানের পর অনেক বড় বড় কথা বলে গেছেন ছিন্নমূলের লোকেরা। যেদিন বিজেপি লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিল তখন এরা নিজেদের ফোন সুইচ অফ করে রেখেছিল। পার্টি অফিসে চাবি পড়ে গিয়েছিল। পরে এদেরকে অক্সিজেন দিয়ে ঘর থেকে বের করেছিল ওদের কথায়, এখন আমাকে বলছে বিশ্বাসঘাতক।

আরও পড়ুনঃ উপসর্গহীন করোনার মতো , উপসর্গহীন বিজেপি ছিলেন শুভেন্দুঃ অভিষেক

প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নাম বদলে করে দেওয়া হচ্ছে বাংলার আবাস যোজনা। আমি ভিতরে ছিলাম আমার দেখে ঘেন্না হয়ে গেছে। কিভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পগুলির নাম বদল করেছে। সাইকেল দিয়েছে ভাঙা। ওটা সারাতে ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে। ওটা তো ভাতিজা ভ্যাট।

জর্জ ফার্নান্ডেজের টাকায় তৈরি তৃণমূল ভবনে বসে এক সাংসদ বলছে মেদিনীপুরে ‘বিশ্বাসঘাতক’দের জন্ম হয়। আমি বলি মেদিনীপুরে বর্ণপরিচয়ের স্রষ্টা বিদ্যাসাগরের জন্ম হয়েছিল। ক্ষুদিরাম, মাতঙ্গিনী হাজরার জন্ম হয়েছিল। গোটা মেদিনীপুরকে যারা বিশ্বাসঘাতক বলছে তাঁদেরকে ২১ সালে শিক্ষা দেবেন তো? জনসভা থেকে প্রশ্ন ছুড়ে দেন শুভেন্দু। পাশাপাশি তিনি জানালেন, মডেল কোড অব কন্ডাক্ট লাগু হলেই সিআরপিএফ ভোট করবে। রাজ্য পুলিশে ভোট হবে না।

দশ হাজার টাকা করে চা খায় আর বলছে শুভেন্দু অধিকারী পান্তা খায় না। দক্ষিণ কলকাতার চার-পাঁচটা লোকের বিরুদ্ধে বলতেই খুব গায়ে লাগছে। ২১ জন সাংসদের মধ্যে অর্ধেকের বাড়ি দক্ষিণ কলকাতায়। এমনকি মুখ্যমন্ত্রী দক্ষিণ কলকাতার। আমরা কি বানের জলে এসেছি? সমস্ত জেলাকে সঙ্গ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

২৫ শে মে লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের পরে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার আগে আমাকে দিয়ে কাজ করানো হয়েছে আর ঘাড় ধাক্কা দিয়েছে। নাড্ডা জি নাকি ৫০০ জন নিয়ে মিটিং করেছে বলছে। ওটা কার্যকর্তাদের নিয়ে বৈঠক ছিল। সেটা জানেনা। একটা মন্ডল সভাপতি ডাক দিলে বিজেপি ১০ হাজার লোক নিয়ে সভা করবে। ডায়মন্ড হারবারে আমি সভা করবো। পঞ্চায়েতে একটাও আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পারেনি। সমস্ত বিডিও অফিসের সামনে জেহাদিদের বসিয়ে রেখেছিল। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সরাসরি আক্রমণ শানালেন শুভেন্দু।

তিনি আরও বলেন, আমার থেকে যুব সভাপতি পদ নিয়ে সৌমিত্রকে দেওয়া হয়েছিল। আসলে সৌমিত্রকে সরিয়ে ভাইপোকে সভাপতি করতে চেয়েছিল দলনেত্রী। সেইসঙ্গে বার্তা দিলেন আগামী দিনে বাংলায় নরেন্দ্র মোদির সরকার গড়ার জন্য তিনি এবং রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ একজোট হয়ে লড়বেন । লক্ষ লক্ষ যুবকদের চাকরী দেওয়া হয়নি। এর থেকে বামফ্রন্টের সরকার ভালো ছিল বলে দাবী করেন তিনি। তবুও তাঁরা ১০ থেকে ১২ হাজার লোককে চাকরী দিত।

উল্লেখ্য, এর আগে শুভেন্দু যে পরিবহন দফতরের দায়িত্বে ছিলেন, সেই দফতরের ৭২৫ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন রামনগরের তৃণমূলের বিধায়ক অখিল গিরি। যদিও এই বিষয়ে চুপ থেকে গিয়েছেন শুভেন্দু। তবে তৃণমূল নিয়ে আরও কোন অপ্রকাশিত তথ্য বাইরে আনবেন শুভেন্দু? তার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।

সম্পর্কিত পোস্ট