জনজাতিদের সঙ্গে বাঙালিদের মেলবন্ধন ঘটাতে অভিষেকের তুরূপের তাস রাজীব
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট রাজ্য ত্রিপুরা। বাঙালি অধ্যুষিত এই রাজ্যটিতে বাঙালিরাই কিন্তু বহিরাগত। ত্রিপুরিরা রাজ্যটির আদি বাসিন্দা হলেও তারা সংখ্যালঘু। ত্রিপুরায় ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব ততটা নেই। বরং এখানে জাতিগত ভিত্তিতে সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু বিভাজন আছে।
এই সংখ্যালঘু উপজাতিরা আবার রাজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের কাছাকাছি বিধানসভা আসনের ফলাফলের চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রক। তাদের জন্য আলাদা উন্নয়ন পর্ষদ আছে, যেখানে নিয়ম করে ভোটও হয়। রাজত্ব না থাকলেও ত্রিপুরায় আজও রাজপরিবারের প্রভাব যথেষ্ট।
এই রাজপরিবারের সদস্যরা আবার জনজাতি গোষ্ঠীভুক্ত। ত্রিপুরা সমতল ও পার্বত্য এই দুই ভাগেও বিভক্ত। সব মিলিয়ে প্রায় ৬০ লক্ষ জনসংখ্যার এই ছোট্ট রাজ্যটির সামাজিক ও রাজনৈতিক সমীকরণ বেশ জটিল।
রাজ্য মন্ত্রিসভার রদবদলে ‘কুলীন’ তকমা হারাল অর্থমন্ত্রক, গুরুত্ব বাড়ল চন্দ্রিমা-ফিরহাদের
এই জটিল সমীকরণের কথা মাথায় রেখেই সম্ভবত ত্রিপুরায় দল পরিচালনার দায়িত্ব অভিজ্ঞ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতে তুলে দিল তৃণমূল। তৃণমূলের দ্বিতীয় প্রজন্মের মুখ বলে যাদের ধরা হয় তাদের মধ্যে রাজীব অন্যতম। তাঁর সুকৌশলী সংগঠন পরিচালনা বিভিন্ন সময়ে প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
এদিকে দীর্ঘদিনের বঞ্চিত ত্রিপুরাকে দেশের মধ্যে মাথা তুলে দাঁড় করাতে হলে সেখানে প্রয়োজন আধুনিক চিন্তাভাবনার প্রয়োগ। সেইসঙ্গে বিপ্লব দেবের ‘গুন্ডা’ সরকারের চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারার মতো মানসিকতাও দরকার।
এই বিষয়টি আর পাঁচজনের থেকে স্মার্ট, ম্যানেজমেন্ট শিক্ষিত রাজীব যে অনেক ভালোই পারবে তা বেশ ভালোই বোঝেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এমনিতেই ত্রিপুরায় দিনরাত এক করে তৃণমূলকে শক্ত ভিতের উপর দাঁড় করানোর কাজ করছিলেন রাজীব। এবার রাজ্যের একক দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ হওয়ায় তাঁর কাজ করতে যে আরও সুবিধা হবে তা বলাই বাহুল্য।
তৃণমূল হাইকমান্ড নিশ্চয় বুঝতে পেরেছে বাঙালিদের সঙ্গে জনজাতিদের মেলবন্ধনের ক্ষেত্রে অনুঘটক হয়ে উঠবেন রাজ্যের এই প্রাক্তন মন্ত্রী। সেই কারণেই ত্রিপুরার কমান্ডার নিযুক্ত করা হল রাজীবকে। এবার বাংলার ভূমিপুত্রের হাতযশ দেখার অপেক্ষায় গোটা ত্রিপুরা।