তৃণমূলকে বার্তা রাজা প্রদ্যোতের, গ্রেটার ত্রিপুরা সমর্থন চাই

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস কি পাশে থাকবে? এই প্রশ্নে চাঞ্চল্যকর বার্তা  দিলেন ত্রিপুরার রাজনীতিতে সমীকরণ বদলের ‘চাবিকাঠি’ হওয়া দল ত্রিপা মথা’র প্রধান রাজা প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা। তিনি জানিয়েছেন, যে দল গ্রেটার ত্রিপুরা ল্যান্ড দাবি সমর্থন করবে তাদের সঙ্গেই  লিখিতভাবে অঙ্গীকার করবেন।

ত্রিপুরা উপজাতি এলাকায় (এডিসি) বিজেপি ও আইপিএফটি দলকে দুমড়ে, গতবারের শাসক সিপিআইএমকে শূন্য করে দিয়ে পার্বত্য এলাকার নতুন শক্তি তিপ্রা মথা। এডিসির প্রশাসক প্রদ্যোত দেববর্মার সঙ্গে আসন্ন বিধানসভা ভোটে তৃণমূল কংগ্রেস জোট করতে পারে এমন বার্তা এসেছে। তবে কোনও পক্ষই এ বিষয়ে মুখ খোলেনি।

সমীকরণ বলছে, পার্বত্য ত্রিপুরায় এডিসি এলাকাভুক্ত ২০টি আসনে বিজেপি কিংবা সিপিআইএম তাদের ভোটব্যাংক খুইয়েছে। সমতল এলাকার বাকি ৪০টি আসনে যে যত আসন পাবে তার ভিত্তিতে সরকার গড়ার ক্ষেত্র তৈরি হবে। মোট ৬০ সদস্যের ত্রিপুরা বিধানসভায় গতবারের ভোটে এই পার্বত্য এলাকায় সিপিআইএমের শক্তি ভেঙে উপজাতি দল আইপিএফটি উঠে আসে। তাদের সঙ্গে জোট করেই বিজেপি সরকার গড়ে। টানা ২৫ বছরের বাম শাসনের পতন হয়।

দুয়ারে ত্রাণ প্রকল্পঃ প্রায় অর্ধেক আবেদনই ভুয়ো !

গত এডিসি ভোটে একটানা ১৮ বছরের ক্ষমতা হারিয়েছে সিপিআইএম। তিপ্রা মথা দল দখল করেছে স্বশাসিত উপজাতি এলাকার শাসন ক্ষমতা। এর পর থেকেই প্রশ্ন বিধানসভার ভোটে তিপ্রা মথার অবস্থান নিয়ে।

সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি কে রুখে দেওয়ার পরেই তৃণমূল কংগ্রেসে মুকুল রায়কে ফের ফিরিয়ে এনে ত্রিপুরা বিধানসভা ভোটে ঝাঁপাতে চাইছে। পশ্চিমবঙ্গের বাইরে বাংলাভাষী এই রাজ্যে টিএমসি সরকার গড়তে মরিয়া। সূত্রের খবর, ত্রিপুরা রাজ্য বিজেপির বিক্ষুব্ধ বিধায়করা যোগাযোগ করেছেন কলকাতায় মুকুল রায়ের সঙ্গে। একইভাবে জোট শরিক হিসেবে রাজা প্রদ্যোত কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে টিএমসি।

আগরতলার রাজনৈতিক মহলের গুঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে চলে গিয়েছেন দলেরই অধিকাংশ বিধায়ক। তাঁরা টিএমসির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। গত বিধানসভা ভোটের আগে এরাই দলনেতা সুদীপ রায় বর্মণের সঙ্গে টিএমসি ত্যাগ করে বিজেপিতে এসেছিলেন। তাঁরা নির্বাচনের আগেই চূড়ান্ত  সিদ্ধান্ত নেবেন। বিদ্রোহী বিধায়কদের সামাল দিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের ঘনঘন আগরতলা আসা যাওয়া নিয়েও রাজ্যে শোরগোল।

প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএমের ১৬ জন বিধায়ক রয়েছেন। বিরোধী দলনেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকারকে মুখ করেই ভোটে লড়াই করবে বামফ্রন্ট। সেই লড়াইয়ের অ্যাসিড টেস্ট হবে আগরতলা পুর নিগমের ভোট। বিজেপি, সিপিআইএম, কংগ্রেসের পাশাপাশি কি টিএমসি আসবে লড়াইয়ে? এই প্রশ্ন থাকছেই। রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব তাকিয়ে পশ্চিমবঙ্গে দলের সুপ্রিমো ও সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে।

এদিকে পাহাড়ি এলাকায় ক্ষমতাসীন তিপ্রা মথার প্রধান প্রদ্যোত কিশোর দেববর্মা জানান, যদি গ্রেটার ত্রিপুরা ল্যান্ড সমর্থন কেউ না করে তাহলে একলাই লড়বে তাঁর দল। সদ্য আইপিএফটি বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মা তাঁর বিধায়কপদ ত্যাগের চিঠি দেওয়ার পরেই শাসকপক্ষ সরগরম। রাজ্য বিজেপি নেতাদের আশঙ্কা শরিক দল আইপিএফটি বিলুপ্ত হতে চলেছে। বৃষকেতু দেববর্মাকে তিপ্রা মথায় যোগদানের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন রাজা প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মা।

সম্পর্কিত পোস্ট