শ্রমিকদের নিয়ে বাংলার পথে দুটি বিশেষ ট্রেন, ভাড়া মেটাবে কংগ্রেস, ঘোষণা সোনিয়ার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ লকডাউনের জেরে রাজস্থান এবং কেরলে আটকে থাকা রাজ্যের আড়াই হাজারের বেশি শ্রমিককে নিয়ে দু’টি বিশেষ ট্রেন আজ রওনা হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার টুইট করে একথা জানিয়ে বলেন, নির্দিষ্ট বিধিনিয়ম মেনে তাদের উপযুক্ত স্ক্রিনিং করা হবে।

উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়া শ্রমিক, পর্যটক, ছাত্র-ছাত্রীদের বাস অথবা বিশেষ ট্রেনে নিজেদের রাজ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে নির্দেশিকা জারি করে। এরপরই রাজ্য সরকারের তরফে অজমেড় থেকে ১২০০ তীর্থযাত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার ব্যাপারে সম্মতি দেওয়া হয়।

অজমেড় শরিফ থেকে হাওড়া পর্যন্ত বিশেষ ট্রেনে এই তীর্থযাত্রীরা ফিরবেন। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, যাত্রীরা যাতে তাদের গন্তব্যে ভালভাবে পৌঁছে যেতে পারেন, সেদিকে নজর রেখে দুর্গাপুর এবং ডানকুনিতে স্টপেজ দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

রাজস্থানের মুখ্যসচিব এই বিষয়ে বাংলার মুখ্যসচিবকে জানান, শ্রমিকদের নিয়ে প্রথম ট্রেন রবিবারই সন্ধ্যায় রওনা দেবে। সবদিক খতিয়ে দেখে স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, এমন সময়ে ট্রেন ছাড়া উচিত, যাতে দিন থাকতে থাকতেই এসে পৌঁছনো শ্রমিকদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করে তাঁদের বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা যায়।

স্টেশন থেকে শ্রমিকদের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থার জন্যও রাজ্য প্রশাসনের সময় প্রয়োজন। একই ভাবে কেরলের আধিকারিককেও অনুরোধ জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রসচিব।

পাশাপাশি, রেল সূত্রে বলা হয়েছে, রাজ্যের অনুরোধ মেনে অজমেড় থেকে আসা ট্রেন দুর্গাপুর ও ডানকুনিতে থামবে।

অন্যদিকে রেল মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি দিয়ে আগেই জানানো হয়েছিল ট্রেন যাত্রা-সময় ১২ ঘণ্টার বেশি হলে এক বেলার খাবারের ব্যবস্থা রেল করবে। তবে স্লিপার ক্লাসের ভাড়ার সঙ্গে দু’রকম সারচার্জ মিলে আরও ৫০ টাকা করে মাসুল দিতে হবে সেই রাজ্য সরকারকে।

রেলের তরফে এই ঘোষণার পরই কেন্দ্র সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন বিরোধীরা।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে সোমবার কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ঘোষণা করেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনের সমস্ত ভাড়া বহন করবে কংগ্রেস।

সোমবার বিবৃতি দিয়ে তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে বলেন, ‘বিদেশে আটকে থাকা নাগরিকদের ফেরাতে বিনামূল্যে বিমান সফর করিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের দায়িত্ব চেনাতে ব্যস্ত।  গুজরাটে মাত্র একটি অনুষ্ঠানের জন্য ও তার যাতায়াত এবং খাওয়া খরচের জন্য ১০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করতে সমর্থ কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রীর করোনা তহবিলে সর্বাধিক ১৫১ কোটি টাকা দান করেছে রেলমন্ত্রক।

এতকিছুতে যখন কেন্দ্র সরকার করছে তখন দেশের এই গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের প্রতিও কেন সমান সৌজন্য দেখানো হবে না? বিশেষত এই কঠিন দুর্দশার মধ্যে বিনামূল্যে রেল সফরও কেন করতে দেওয়া হবে না?’-বিবৃতিতে এই প্রশ্নও তুলেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী।

সনিয়া  গান্ধী আরও বলেন, ‘জাতীয় কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, প্রত্যেক দুঃস্থ শ্রমিক ও পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার রেলের ভাড়া বহন করবে প্রত্যেক প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। এ জন্য সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অন্যদিকে ভিন্‌ রাজ্যে আটকে থাকা মানুষজনের যোগাযোগের জন্য কেন্দ্রের নির্দেশ মতো রাজ্য সরকার একটি টোল ফ্রি নম্বর চালু করেছে। ১০৭০ নম্বরে ফোন করেও এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা যাবে।

এছাড়াও কন্টোল রুম নম্বর- ০৩৩-২২১৪-৩৬২৫ –তেও যোগাযোগ করা যেতে পারে।

সম্পর্কিত পোস্ট