তেহরানে বিমান দুর্ঘটনায় ১৭০ জনের মৃত্যু, নাশকতার গন্ধ পাচ্ছে ইউক্রেন

বুধবার তেহরানের ইমাম খোমাইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৭০ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দিয়েছিল বিমানটি। কিন্তু উড়ানের পরেই যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে বিমানবন্দরের একপাশে ভেঙে পড়ে বিমানটি।

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ বুধবার ইরানের বিমানবন্দরে ভেঙে পড়ল ইউক্রেনিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭।

বুধবার তেহরানের ইমাম খোমাইনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১৭০ জন যাত্রী নিয়ে রওনা দিয়েছিল বিমানটি। কিন্তু উড়ানের পরেই যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে বিমানবন্দরের একপাশে ভেঙে পড়ে বিমানটি।

ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ১৭০ জনের। যদিও ঘটনার পিছনে নাশকতার সম্ভবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ওলেকসি হাঞ্চরুক।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত দেড় বছরের মধ্যে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ সিরিজের বিমানে মৃতের সংখ্যা ৫০০ পারে করে গিয়েছে। কিছু মাস আগেই ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এক বিমান দুর্ঘটনায় ১৫৭ জনের মৃত্যু হয়। তবে বেশীরভাগ সময়েই যান্ত্রিক গোলযোগকে কারণ হিসাবে ধরা হয়েছে।

আরও পড়ুনঃ অস্ট্রেলিয়ার অগ্নিকান্ড : ভস্মীভূত দক্ষিন-পুর্ব, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে ভারতীয় দম্পতি

বুধবার ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রী ওকেলসি হাঞ্চরুককে দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ঘটনার পিছনে নাশকতার সম্ভবনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

কোনও ক্ষেপনাস্ত্রের মাধ্যমে পরিকল্পনা মাফিক বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে অনুমান হাঞ্চরুকের। ২০১৪ সালে ইউক্রেনের দানেতেস্ক এলাকায় মালেশিয়ান বোয়িং বিমান ভেঙে পড়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ক্ষেপনাস্ত্রের মাধ্যমে নামানো হয় বিমানটিকে। ঘটনায় প্রাণ হারান ২৯৮ জন মানুষ। বুধবারের দুর্ঘটনা সেইরকমভাবে ঘটানো হয়েছে বলে অনুমান প্রধানমন্ত্রীর।

ইরাকের মার্কিন সেনা ঘাঁটিতে ইরানি সেনার হামলার কয়েক ঘন্টার পরেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক মহলে জল্পনা বাড়িয়েছে।

যদিও তেহরানের ইউক্রেন দুতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে ইঞ্জিন বিকলের কারণেই ভেঙে পড়ে বোয়িং ৭৩৭।

১৯৯০ সাল থেকে চালু হয় বোয়িং ৭৩৭-৮০০ সিরিজের বিমান। যার উন্নত সংস্করণ বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স। বোয়িংয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ৭৩৭ ম্যাক্স সবচেয়ে নিরাপদ বিমানগুলির মধ্যে অন্যতম।

যদিও ইন্দোনেশিয়ান বিমান দুর্ঘটনার পর থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল বোয়িং ম্যাক্স কতটা নিরাপদ? এরপরেই সমস্ত বোয়িং ম্যাক্স বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় চিনের সিসিসিএ।

যদিও বিমান দুর্ঘটনার তদন্তের ক্ষেত্রে বিমানের কোনও অংশ প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং অন্য কোনও দেশের হাতে তুলে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তেহরান। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখবে তেহরানের অসামরিক বিমান সংস্থা।

উল্লেখ্য, ইরানের সেনাপ্রধান কাসেম সোলেমানির মৃত্যুর পর থেকেই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি গোটা পশ্চিম এশিয়া জুড়ে।

প্রায় লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে সোলেমানির শেষকৃত্য সম্পন্নের পর ইরাকের আল আসাদ এয়ার বেস মার্কিন সেনাবাহিনীর ঘাঁটি লক্ষ্য করে ১৫ টি মিসাইল হানা সেই আগুনে আরও ঘি ঢালে। ঘটনায় ৮০ জন মার্কিন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। এমনটাই সূত্রের খবর। তারপরেই বুধবারের বিমান দুর্ঘটনা কূটনৈতিক মহলে আলোচনা বাড়িয়েছে।

সম্পর্কিত পোস্ট