Exclusive,আনকাট সৌমিত্রঃ বিরোধীরা ধৈর্য্য ধরুন পদ্মফুল ফুটতে বেশী দেরী নেই.. বন্ধ হবে চপ শিল্প
১. তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়ে জনগণের ভোটে বিষ্ণুরপুরের সাংসদ নির্বাচিত হলেন। এখন রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি আপনি। কীভবে দলকে চাঙা করছেন?
উত্তরঃ পথে নেমে মানুষের সঙ্গে সংযোগ রেখেই মূলত দলকে চাঙা করতে চাইছি। এক্ষেত্রে যুব সমাজের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দিন দিন দুর্নীতির পরিমাণ বাড়ছে। আপার প্রাইমারী থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি। মুখ্যমন্ত্রীর যিনি ভাইপো, তিনি তো সবচেয়ে বড় চোর। কতদিন আর চোরের রাজত্ব চলবে? এই সরকার টিকিয়ে রাখার কোনো মানেই হয় না। ২০১১ থেকে ২০২০ একটাও শিল্প হয়নি রাজ্যে। উন্নয়নের কোনো কাজই হয়নি।
২. আপার প্রাইমারী নিয়ে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে টালবাহানা চলছে। কার্যত অন্ধকারে বহু চাকরী প্রার্থীর ভবিষ্যত। একই অবস্থা এসএসসির ক্ষেত্রেও। কী বলবেন এই বিষয়ে?
উত্তরঃ আপার প্রাইমারী দুর্নীতি সম্পর্কে জনগণ সবই জানেন। ঠিকভাবে মূল্যায়ণ না করে যা খুশি নম্বর দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রার্থীদের পরিবর্তে নিজেদের দলের লোক ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে। চাকরীর ক্ষেত্রে যে মোটা অঙ্কের transaction হচ্ছে সেটা ভাইপোর বাড়ি থেকে হচ্ছে। top to bottom দুর্নীতি হচ্ছে।
৩. আমফানের ত্রান নিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে উঠছে স্বজনপোষণের অভিযোগ। মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারী সত্বেও কেউ কথা শুনছেন না। কীভাবে দেখছেন বিষয়টা?
উত্তরঃ আমফানের ত্রাণ নিয়ে ৭০০ কোটি টাকার পার্টি ফান্ড তৈরী করা হচ্ছে। পুরো চেন মাফিক টাকাটা তৃণমূলের নেতাদের অন্দরে থেকে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না।
আমি গিয়েছিলাম বসিরহাট, সন্দেশখালি- সেখানেও একই চিত্র। টাকা টা কেউই হাতে পাচ্ছেনা।
৪. করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় চলছে লকডাউন। দেশজুড়ে যে অচলাবস্থা তৈরী হয়েছে তাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কে দায়ী করছেন মুখ্যমন্ত্রী। একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য পরিযায়ী শ্রমিকদের এই হয়রানি ও দুর্ভোগের জন্য দায়ী কেন্দ্র। আপনি পুরো বিষয়টাই দেখছেন। আপনার মতামত কী?
উত্তরঃ মুখ্যমন্ত্রীর মানবিক রুপটাই নেই। শুধুমাত্র নোংরা রাজনীতি করছেন তিনি। ত্রাণ দিচ্ছেন, টাকা দিচ্ছেন, কিন্তু সাধারণ মানুষ তো পাচ্ছেন না। সবটাই দলের লোকজন পাচ্ছে।
পরিযায়ী শ্রমিকরা কোনোদিনই পশ্চিমবঙ্গে থাকবেন না। তারা কাজের খোঁজে ভিন রাজ্যে পাড়ি দিতে শুরু করেছেন।খবর নিয়ে আমরা দেখলাম উত্তরপ্রদেশে বাংলার প্রায় ১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন।
মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন মানবিক হোন। ওদের কাজের ব্যবস্থা করুন। যদিও চপ শিল্পটাই পশ্চিমবঙ্গে বড় শিল্প! তাও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিবেচনার আবেদন থাকল।
আগামী ১ জুলাই থেকে আমরা এই বিষয়ে পথে নামব গোটা রাজ্যজুড়ে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই এর প্রতিবাদ গড়ে তুলব।
৫. দিকে দিকে বিজেপী কর্মী সমর্থকরা আক্রান্ত হচ্ছেন। সম্প্রতি খেঁজুরিতে একজন বিজেপি কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। দাঁতনে বিজেপি কর্মী পবন জানা খুন হয়েছেন। এই হানাহানির রাজনীতি কবে বন্ধ হবে?
উত্তরঃ তৃণমূলের এখন পায়ের তলায় জমি নেই। তারা খুন, সন্ত্রাস, ধর্ষণ করে মানুষকে ভয় পাইয়ে নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এর শেষ কোথায় সেটা মুখ্যমন্ত্রী বলতে পারবেন।
৬. বিরোধীদের অভিযোগ রাজ্য জুড়ে পুলিশ রাজ চলছে। বলা যেতে পারে পুলিশই রাজ্য চালাচ্ছে। আপনারা ক্ষমতায় এলে দড়ি টা কার কার কোমরে পড়াবেন?
উত্তরঃ ভারতীয় জনতা পার্টি মানুষের সহযোগীতায় চলে। আগামীদিনেও তাই চলবে। মানুষ সব দেখছে, মনেও রাখছে। আমরা ক্ষমতায় এলে কাদের কাদের কোমরে দড়ি পরবে সেটা সময় বলে দেবে। এখনই বলা ঠিক হবে না।
৭. বর্ধমানে বিজেপির ডেপুটেশন জমাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। আক্রান্ত হোন অনেক বিজেপি কর্মী। এটা কী প্রকারান্তরে কণ্ঠ রোধ করার চেষ্টা?
উত্তরঃ সবথেকে লজ্জার বিষয় থানার সামনে বিজেপি কর্মীদের মারধোর করা হচ্ছে। এটা কাম্য নয়। পুলিশরা দাঁড়িয়ে থেকে তৃণমূলের লোক এনে বিরোধীদের মারধোর করছে। এমন ঘটনা ধীক্কার জানাই।
৮. ভার্চুয়াল জনসভার মাধ্যমে ২০২১ এর ভোটবাদ্যি বেজে দিয়েছেন আপনারা। বিরোধীদের কী বার্তা দেবেন?
উত্তরঃ এই দুর্নীতি গ্রস্থ অপদার্থ সরকারকে আসনচ্যুত করতে গেলে যুবসমাজকে বেশী করে এগিয়ে আসতে হবে। সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। বিরোধীরা ধৈর্য্য ধরুন। বাংলায় পদ্মফুল ফুটিয়ে বাংলার উন্নয়ন আমরাই করব এটা নিঃসন্দেহে স্পষ্ট।