সোমবার থেকে পেটের তাগিদে ছাড়ের সাগরে ভাসবে মহানগরী, উপেক্ষিত করোনা

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃআগামীকাল ৮ জুন। কন্টেটমেন্ট জোন ছাড়া অন্যান্য জায়গা গুলিতে ক্রমশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার কথা। শপিংমল, রেস্তোরা, অফিস সহ বেশ কয়েকটি ধর্মীয় স্থান খুলবে। একইসঙ্গে বাড়বে সরকারী-বেসরকারী সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মী সংখ্যা। করোনা ভয় কে উপেক্ষা করেই আগামীকাল থেকে পথে নামবেন হাজার হাজার নাগরিক।

তবে এক্ষেত্রে পরিস্থিতি আয়ত্তে রাখতে গেলে প্রথমেই গণপরিবহন স্বাভাবিক করা প্রয়োজন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যত সংখ্যক আসন তত সংখ্যক প্যাসেঞ্জার। আর সেকথা বাস্তবায়িত করতে গেলে এখনের তুলনায় দ্বিগুনেরও বেশি সংখ্যক সরকারী ও বেসরকারী বাসের প্রয়োজন। কারণ বন্ধ রয়েছে লোকাল ট্রেন।

গত ১ জুন থেকে ৭ জুন পর্যন্ত যে চিত্র রাজ্যবাসী দেখল গণপরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে তাতে স্বাস্থ্যবিধি লাটে। পেটের তাগিদে-পেশার তাগিদে সেখানে উপেক্ষিত জীবনের ভয়।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে ক্রমশ বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। সংক্রমণের হারে ইতালিকে পেছনে ফেলে ভারত এখন ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে।

শনিবারে রাজ্যের করোনা রিপোর্ট বলছে কলকাতায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৬৮৪ জন। মৃত্যুর নিরিখেও এগিয়ে রয়েছে কলকাতা, মারা গিয়েছে ১৯৫ জন। কো-মর্বিডিটির কারণে ৫২ জন। হাওড়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৩৮২ জন।  গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৯ হাজার ৭৭১ জনের টেস্ট হয়েছে। এই মুহূর্তে সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যে মোট ৪২টি ল্যাবরেটরিতে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। আরও ৩টি ল্যাবরেটরি অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। এর পাশাপাশি সরকারি কোয়ারেন্টিনে রয়েছে ২২ হাজার ৬৬৯ জন। হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১৭৩ জন। যাঁরা ভিন্‌রাজ্য থেকে ফিরেছেন, তাঁরাও কোয়রান্টিনে রয়েছেন। সেই সংখ্যাটা বেড়ে হয়েছে ১ লক্ষ ৩৯ হাজার ৪৮৮ জন।

পরিবহণ দফতরের বক্তব্য, তারা এক হাজারেরও বেশি বাস নামাতে চায়। কিন্তু তা দিয়ে কলকাতায় স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। কলকাতা-সহ গোটা রাজ্যে ২৪ হাজার বেসরকারি বাস চলে। সরকারি বাস চলে ২৫০০টি।

বেসরকারি বাস মালিকদের বক্তব্য সোমবার এর ৩০ শতাংশ বাসও নামবে কি না সন্দেহ। কলকাতায় সরকারি বাস প্রায় পূর্ণ সংখ্যায় নামানো হলেও সোমবার জেলায় ৬০ শতাংশ বাস নামানো যাবে বলে পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর। ফলে স্বাভাবিক পরিষেবা দেওয়া কার্যত অসম্ভব।

পরিবহণ দফতরের একটি সূত্রের আশ্বাস, সোমবার সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ১০টা, এই অফিসের সময়ে তুলনায় বেশি বাস চালানো হবে। তবে ভাড়া নিয়ে কার্যত অসন্তোষ থেকেই যাচ্ছে।

তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে সুরক্ষা বিধি নিয়ে। গত ১ সপ্তাহের চিত্র যদি এমন হয় সেক্ষেত্রে আগামীকাল থেকে ছাড়ের সাগরে ভাসবে মহানগরী। এতে বিপদ বাড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

তবে রোগের সামনে দাঁড়িয়ে মৃত্যুভয়কে কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে পথে মানুষ। কারণ স্পষ্ট। ফুরিয়েছে রসদ। তাই পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিতে নামতেই হবে পথে। নাহলে যে ভুখা পেটই নিয়ে যাবে মৃত্যুর দিকে, সেখানে ম্লান হয়ে যাবে করোনা।

সম্পর্কিত পোস্ট