হাথরাস ঘটনায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে পুলিশের গাফিলতি!
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ হাথরাসের ঘটনা সিবিআইয়ের হাতে যেতে উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। এবার প্রশ্নও উঠছে পুলিশের ভুমিকা নিয়েও। মাত্র ২০ বছরের নির্যাতিতার মৃত্যুর ঘটনা স্তম্ভিত হয়েছিল গোটা দেশ। আর সেই ঘটনায় সিবিআইয়ের চার্জশিটে পুলিশের একাধিক গাফিলতির কথা উঠে আসছে।
সিবিআইয়ের তরফে জানানো হয়েছে, পুলিশ নির্যাতিতার বয়ান লেখেনি। এমনকি নির্যাতিতার তরফে দুইবার ধর্ষণের অভিযোগ তোলা হলেও তাতে সদর্থক ভুমিকা নেয়নি পুলিশ। পরে ফরেন্সিক প্রমাণ নষ্ট হয়ে যায়। পুলিশের ভুমিকা নিয়ে তদন্ত করার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৪ সেপ্টেম্বর সকাল বেলায় মা এবং দাদার সঙ্গে ঘাস কাটতে যান ওই তরুণী। দাদা বাড়িতে ঘাস রাখতে যাওয়ার পর বেশ কিছু সময় ধরে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না তরুণীকে। পরে মাঠে চটি পড়ে থাকতে দেখা যায়। এরপর নির্যাতিতার পরিবার থানায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগ জানান। কিন্তু পুলিশের তরফে কোনও নির্যাতিতার বয়ান নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুনঃ হাথরাস কান্ডে চার্জশিট পেশ CBI-র, গণধর্ষণ করে খুনের তত্ত্বকেই মান্যতা
কয়েকদিন আগেই সিবিআইয়ের তরফে চার্জশিটে জানানো হয়েছিল হাথরাসের বছর ২০ এর দলিত তরুণীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। সরাসরি পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। একই অভিযোগ তুলেছেন নির্যাতিতার পরিবার।
সিবিআইয়ের তরফে চার্জশিটে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, ১৪ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতা চাঁদপা থানায় হাজির হলেও তার কোনও জবানবন্দি করেনি পুলিশ। প্রায় ৮ দিন পর যখন তার মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হচ্ছিল । ১৯ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার জবানবন্দি করে পুলিশ। পুলিশের তরফে যদি আগে নির্যাতিতার জবানবন্দি করা হত তাহলে সমস্যা হত না।
সিবিআই দাবী করে পুলিশের প্রাথমিক গাফিলতির কারণে তরুণীর মেডিক্যাল পরীক্ষার দেরি হয়। একাধিক গাফিলতি থাকার কারণে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়নি বলে দাবী করেছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের চার্জশিটে দাবী করা হচ্ছে ৪ অভিযুক্তের নাম উঠে আসে। যাদের নাম ছিল সন্দীপ, লবকুশ, রামু এবং রবি। চার জনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণ মামলা দায়ের হয়। এর মধ্যে সন্দীপের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল ওই তরুণীর। পরে দুই বাড়িতে জানাজানি হওয়ার পর তাঁদের কথা বন্ধ হয়ে যায়। একাধিকবার বিভিন্ন নম্বর থেকে তরুণীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করত অভিযুক্ত। কিন্তু তরুণীর তরফে উত্তর না মেলায় আক্রোশ তৈরি হয়। সন্দীপ গলা টিপে ধরায় বেহুঁশ হন তিনি।
২৯ সেপ্টেম্বর সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। ওই দিন রাত ২ টো নাগাদ পরিবারকে বন্দি করে ক্ষেতের মধ্যে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় মৃতদেহ। পরে ময়না তদন্তের রিপোর্ট অভিযুক্তদের ছাড়পত্র দেয়। যদিও নির্যাতিতার শরীরে একাধিক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন মেলে। এমনকি নির্যাতিতার পরিবারকে হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ।
ঘপ্টনায় সারা দেশজুড়ে প্রতিবাদ শুরু হয়। ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। পুলিশের ওপর ভরসা ছিল না মুখ্যমন্ত্রীর। তাই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের ওপর দিয়েছেন বলে দাবী বিজেপির একাংশের।