West Bengal Assembly Election- শীতলকুচির গুলি-কাণ্ডে ষড়যন্ত্রকারী অমিত শাহ, বিস্ফোরক তৃণমূল সুপ্রিমো
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শীতলকুচির ঘটনা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংবাদিক বৈঠক থেকে আগাগোড়াই তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই ঘটনায় নিশানা করেন।
মমতার অভিযোগ, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের প্ররোচনাতেই এতগুলো সাধারণ ভোটারকে খুন করা হয়েছে।’ একইসঙ্গে এদিন মমতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ পর্যবেক্ষক বিবেক দুবের পদত্যাগ দাবি করেছেন মমতা।
শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেই দায়ী করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি শাহকে চক্রান্তকারী হিসেবেও অভিহিত করেন। কড়া ভাষায় বিজেপি-কে আক্রমণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঢাল করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনছেন অমিত শাহ। ফলে ভোটারদের গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। আর এ প্রসঙ্গেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি তোলেন তিনি।
ওরা বলছে আত্মরক্ষার্থে গুলি চালানো হয়েছে। মিথ্যে কথা। আসলে রাজনৈতিক নির্দেশেই এসব হচ্ছে। অঘোষিত ৩৫৬ চলছে। যদি আক্রমণ হয়েই থাকে। প্ররোচনা দেওয়া হয় তবে প্ররোচনার ছবি কই। এত মিডিয়া ছিল ওখানে কেউ কোনও ফুটেজ পেল না। এদিন উত্তরবঙ্গে পৌঁছেই বললেন মমতা।
West Bengal Assembly Election- শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে নির্বাচন কমিশনে তৃণমূল
উল্লেখ্য, শনিবার কোচবিহারের শীতলকুচিতে জোড়পাটকির ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চারজনের মৃত্যু হয়। মমতা বলেন, ‘আমি বরাবর বলে আসছি, কেন্দ্রীয় বাহিনী আমার শত্রু নয়। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কথায় যে চক্রান্ত চলছে, তা আজ প্রমাণ হয়ে গেল। লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ভোটারদের গুলি করে মেরে দেওয়া হয়েছে।’
আত্মরক্ষার জন্যই শীতলকুচিতে সিআরপিএফ গুলি চালাতে বাধ্য হয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কোচবিহারের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরার পরামর্শ না দিলে, মানুষ উত্তেজিত হতেন না বলেও মন্তব্য করে বিজেপি নেতারা।
যদিও মমতার বক্তব্য, ‘বিজেপি হেরে গিয়েছে। তাই ভোটারদের গুলি করে মারছে। তবু মানুষকে বলব, আপনারা শান্ত থাকুন। নির্বিঘ্নে ভোট দিন। যারা অশান্তি করে, তারা রাক্ষসের দল।’
মুখ্যমন্ত্রীর মতে, মানছি ভোটের সময় পুলিশ নির্বাচন কমিশনের অধীন। কিন্তু তারা কেন কেন্দ্রের কাছে রিপোর্ট করবে। কেন রাজ্যপালের কাছে রিপোর্ট করবে? কেন মুখ্যমন্ত্রী হয়েও কিছু জানতে পারব না আমি? প্রশ্ন করলেন মমতা।
আমি ঠুঁটো জগন্নাথ নই। যতবার রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আসছেন আমাকে অপমান করছেন, আমাকে দোষারোপ করছেন। তাঁদের নিজের সীমা বোঝা উচিত। প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সতর্ক হওয়া উচিত।
মমতা এদিন জানান, রবিবার সকালেই শীতলকুচির ঘটনাস্থলে পৌঁছবেন তিনি। শনিবার থেকেই সমস্ত জেলার সমস্ত ব্লকে ব্লকে কালো ব্যাজ করে ঘটনার প্রতিবাদ করবে তৃণমূল।
West Bengal Assembly Election: শীতলকুচির ঘটনায় সিআইডি তদন্ত করবে- জানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
শনিবার ভোট শুরু হতেই শীতলকুচির পাঠানটুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ বছরের এক যুবকের। বেলা গড়াতেই ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এরপর উত্তেজনা ছড়ায় জোরপাটকি এলাকায়। ১২৬ নম্বর বুথের বাইরে এলোপাথারি গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আরও তিনজনের।
নির্বাচন কমিশন জানায় সিআরপিএফ জওয়ানদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে তাঁদের। মৃতেরা প্রত্যেকেই তৃণমূলের সমর্থক বলে খবর। গোটা ঘটনায় রিপোর্ট তলব করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।
যদিও শাসকদলের সমর্থকদের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনাতেই গুলি চালিয়ে খুন করা হয়েছে সাধারণ ভোটারদের। প্রসঙ্গত, প্রথম দফা ভোটের পরই আত্মরক্ষার স্বার্থে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে গুলি চালানোর অনুমতি দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। শীতলকুচিতেও সেই কারণেই তাঁরা গুলি চালিয়েছে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজনৈতিক মহলে।