বৈশাখী-শোভনের অশোভন আচরণে ক্ষুদ্ধ বিজেপি, কড়া বার্তা বঙ্গ বিজেপির

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্য জুড়ে ভোটের নির্ঘন্ট প্রকাশ শুধু সময়ের অপেক্ষা। তার আগে জোরদার নির্বাচনী প্রচার শুরু করে দিয়ে শাসক-বিরোধী যুযুধান দুই পক্ষই। সেইসঙ্গে দলত্যাগের প্রসঙ্গ যেনও জলভাত ।

তৃণমূলকে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার লড়াই যখন জোরকদমে চালাচ্ছে বিজেপি, তখনই ফের তাল কাটলেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা যায়নি গোটা রথযাত্রা কর্মসূচীতেও। এমনকি রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, একাধিকবার ফোন করা হলেও মেলেনি জবাব।

রাজ্য জুড়ে যখন পরিবর্তনের রথের সূচনা করা হয়েছে বিজেপির তরফে। সেই ৫ টি রথের ৩ টি উদ্বোধন করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ১ টি রথের সূচনা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আরও একটি রথও সম্ভববত অমিত শাহের হাত ধরেই সূচনা হতে চলেছে বলে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের ঘনিষ্ঠ এক বিজেপি নেতার কথায়, সাংগঠনিকভাবে দূর্বল কলকাতা জোন। এই জোনের মধ্যেই পড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগণা ও উত্তর ২৪ পরগণার একটি অংশ। তৃণমূলের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে ওই অঞ্চলে। কারণ একদা সেখানেই তৃণমূলের পক্ষে সংগঠন তৈরী করেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাই বিজেপির তরফে ওই এলাকায় সংগঠন মজবুত করতে শোভনবাবুকেই ভরসা করেছিল বিজেপি।

কিন্তু পরিবর্তেনের সেই রথে দেখা মেলেনি শোভন-বৈশাখীর। জানা গিয়েছে ব্যক্তিগত কাজে কলকাতার বাইরে গিয়েছেন তারা। শোভন-বৈশাখীর দেখা মেলেনি অমিত শাহের বঙ্গ সফরের সূচীতেও। আর তাতেই এই বেজায় চটেছেন রাজ্য বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব।

এখানেই শেষে নয়, বিজেপির রোড শো-তে গিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে পারিবারিক বিবাদকে জনসমক্ষে তুলে ধরেছে তাও যথেষ্ঠ কুরুচিকর বলেই মনে করছে রাজ্য বিজেপি। বিষয়টি ভারতীয় জনতা পার্টির ডিসিপ্লিনের মধ্যেও পড়ে না বলেই মন্তব্য করছেন অনেকেই। বিশেষত দেবশ্রী রায় প্রসঙ্গে যেভাবে শোভন-বৈশাখী ব্যক্তিগত আক্রমণ শানিয়েছেন তাতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেচে বিজেপির শৃঙ্খলা নিয়েও।

এখনই সংখ্যা ঘোষণা সমীচীন নয়, জোট নিয়ে বৈঠকের পর জানালেন অধীর চৌধুরী

রাজ্য বিজেপির অন্দরমহল সূত্রে খবর, এই বিষয়ে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ সরাসরি তাদের সঙ্গে কথা না বললেও, ঘনিষ্ঠ নেতৃত্ব মারফৎ কড়া বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে তাদের কাছে। সেই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি শোভন-বৈশাখী।

সম্প্রতি দেবশ্রী রায় শোভন-বৈশাখীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা দায়ের করেছেন। পাশে দাঁড়িয়েছে রত্না চট্টোপাধ্যায়ও। তা নিয়েও বারবার প্রকাশ্যে বিরুপ মন্তব্য করেছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। মন্তব্য করা হয়েছে রত্না চট্টোপাধ্যায় বাবা ও তৃণমূল নেতা দুলাল বাবুকে নিয়েও।

রাজ্য বিজেপির তরফে অসন্তোষ প্রকাশ করে জানানো হয়েছে রাজনৈতিক ময়দানে লড়াই হবে দুটি দলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। সেখানে কেন পারিবারিক কেচ্ছা তুলে আত্ম প্রচার করা হবে? অন্তত শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত দুঁদে রাজনীতিবিদের থেকে তা কখনোই কাম্য নয়।

প্রসঙ্গত, এটাই প্রথমবার নয়। এর আগেও শোভন চট্টোপাধ্যায় ও বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে শাসকদলকে। মান ভাঙিয়ে বিজেপির হয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে সক্রিয় প্রচারে তারা নেমেছেন প্রায় দেড় বছর পর। কিছুদিন যেতে না যেতেই ফের ছন্দপতন।

রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, ভোটবাজারে রাজনৈতিক প্রচার নাকি শোভন-বৈশাখী কোন বিষয়ে প্রাধান্য দেবে বঙ্গ বিজেপি?

সম্পর্কিত পোস্ট