আমফানে বিপর্যস্ত রাজ্য, বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে বিদ্যুৎ দফতর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: গত একশ বছরে এমন ভয়নক ঘূর্ণঝড় খুব কমই হয়েছে। যারা এই ঝড় কাছ থেকে দেখেছেন, তারা আজীবন এর ভয়াবহতা মনে রাখবেন। ঝড় থেমে যাওয়ার পর বৃহস্পতবারও দক্ষিণবঙ্গে একটা বড় অংশ অন্ধকারে ডুবে।

এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা নিয়েই তৈরি হয়েছে গাঢ় অন্ধকার। বিদ্যুৎ দফতরের এই অবস্থা নিয়ে আগে থেকেই আশঙ্কা ছিলই।

ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতিতে বাস্তবে হলও তাই। ঘূর্ণিঝড় আমফান কার্যত লণ্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা।

বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে খবর, বুধবার আমফান স্থলভূমিতে পুরোদমে আছড়ে পড়ার পরে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ আশেপাশের কয়েকটি জেলায় অসংখ্য গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি এবং টাওয়ার পড়ে যাওয়ার পাশাপাশি তার ছিঁড়ে রাজ্যের বিদ্যুৎ পরিষেবা সম্পুর্নভাবে বিপর্যস্ত।

বিভিন্ন জায়গায় গাছ পড়ে, বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যাওয়ার ফলে বিদ্যুৎ পরিষেবায় জোর ধাক্কা লেগেছে। বহু জায়গায় হাইটেনশন লাইন ছিড়ে গিয়েছে। একই অবস্থা সিইএসসি ও রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন পর্ষদের এলাকাতেও। রাত পর্যন্ত জেলা ও কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চল অন্ধকারেই ডুবে থেকেছে।

বিদ্যুৎ দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, ঝড়ের তীব্রতায় তার ছিঁড়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ার ঘটনা আটকাতে, সে জন্য প্রশাসনের আগাম নির্দেশে বহু জায়গায় গভীর রাত পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ আগে থাকতে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। এতে প্রাণহানি কমানো গেলেও, মানুষের ভোগান্তি কমানো যায় নি। সমস্ত সতর্কতা সত্ত্বেও যেভাবে বিপুল সংখ্যায় গাছ ভেঙ্গে, বিদ্যুতের পোল উপড়ে পড়েছে গিয়েছে তাতে মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। আমরা মানুষকে বলছি ধৈর্য ধরুন। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে বিদ্যুৎ দফতর।

বিদ্যুৎ ভবনের খবর, ঝড়ের থামার পর রাস্তায় গাছ পড়ে থাকার কারণে বহু জায়গাতেই বিদ্যুৎ কর্মীরা এ দিন লাইন সারানোর কাজে যেতে পারেননি। সব লাইন সারিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ কর্তারা।

বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জানান, আমফানের তীব্রতায় পুরো দক্ষিণবঙ্গেরই বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। ঝড় কমার পরেই কাজ শুরু করেছে আমাদের কর্মীরা। তবে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। গাছ পড়ে কিছু জায়গায় পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে আমাদের কর্মীরা কাজ করতে পারছে না। বহু জায়গায় জল জমে থাকার জন্য কাজ করা যাচ্ছে না।

এদিন বিদ্যুৎ মন্ত্রী সাধারণ মানুষের কাছে সহযোগিতা চেয়েছেন। একই সঙ্গে মানুষকে একটু ধৈর্য ধরতে বলেছেন।

তিনি জানান, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগাম সব ব্যবস্থা নেওয়া ছিল। কিন্তু ঝড়ের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। খুব জরুরি কিছু পরিষেবাকে টিকিয়ে রাখা ছাড়া অন্য কিছুই করা যায়নি। তবে যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা হচ্ছে।

সম্পর্কিত পোস্ট