সোমেনের পর পরবর্তী প্রদেশ সভাপতি কে? অভিজ্ঞের খোঁজে কংগ্রেস হাইকমান্ড
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সোমেন মিত্রের মৃত্যুর পর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত। কিন্তু এখনও প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতির পদ শূণ্য। গত কয়েকদিন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি নিয়ে জাতীয় রাজনীতি উত্তাল থাকলেও এরাজ্যে কে পরবর্তী প্রদেশ সভাপতি হবেন তা এখনও অজানা।
কিছুদিন আগেই প্রাক্তন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী-নেপাল মাহাতোর নাম সুপারিশ করলেও কংগ্রেস হাইকমান্ড এই নিয়ে নীরব।
দলীয় সূত্রে খবর, সোনিয়া গান্ধী প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে কোনও অভিজ্ঞ মুখই চাইছেন। যাক অন্তত কংগ্রেসকে লড়াইয়ের মতো জায়গায় নিয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সে দিক থেকে দেখতে গেলে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির দৌড়ে ভাসছে দুই অভিজ্ঞ নাম।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি দৌড়ে রয়েছেন বর্তমানে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। একইভাবে নাম শোনা যাচ্ছে রাজ্যসভার সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও।
বিধানসভার মুখ্যসচেতক হলেন পানিহাটি পুরসভার মুখ্য প্রশাসক
দলীয় সূত্রে খবর, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির শূণ্যস্থান কাকে দিয়ে পূরণ হবে তা নিয়ে কংগ্রেসের শীর্ষমহলে একটা টানাপোড়েন চলছিল। দাবিদার ছিলেন বেশ কয়েকজনই। কিন্তু এক্ষেত্রে নানা সমীকরণ হিসাব করেই নিয়োগের পথে এগোতে চাইছে কংগ্রেস হাইকমান্ড।
বিশেষ করে বাংলার ক্ষেত্রে দুই কূল বাঁচিয়ে চলছে চাইছে কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব। তারা চাইছেন রাজ্যে বামেদের সঙ্গে জোট বজায় থাকলেও মমতা বা তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধ তুঙ্গে না নিয়ে যেতে। বস্তুত বামেদের ধরে রেখে মমতার সঙ্গে সুসম্পর্ক চান হাইকম্যান্ড।
কারণ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইতে ও ইউপিএ’র পুনর্গঠনের মমতার সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজন। তাই এখন হাইকমান্ড চাইছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব এমন কারোর হাতে যাক যিনি বামেদের সঙ্গে জোট সুগম করার পাশাপাশি মমতা ও তৃণমূলের সঙ্গে কিছুটা হলেও সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলতে পারবেন।
তাই হাইকমান্ডের প্রথম পছন্দ প্রদীপ ভট্টাচার্য। প্রবীণ এই কংগ্রেস নেতা কোনওদিনই তথাকথিত ভাবে মার্কামারা মমতা বিরোধী নন। আবার বামেদের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু রাজ্যে অনেকেই প্রদীপবাবুকে নিয়ে আপত্তি আছে।
সেক্ষেত্রে হাইকমান্ডের দ্বিতীয় পছন্দ অধীর চৌধুরী। কিন্তু তাঁর সঙ্গে মমতার বা তৃণমূলের সম্পর্ক কার্যত অহি-নকুল স্তরের। যদিও গত লোকসভা নির্বাচনের পরে অধীরবাবু মমতা বা তৃণমূল বিরোধীতার সুর ভীষণ ভাবেই নামিয়ে এনেছেন।
তার পিছনে কারনও রয়েছে। কংগ্রেসি গড় বা অধীরগড় বলে সুপরিচিত মুর্শিদাবাদ জেলার ৩টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২টি পেয়ে গিয়েছে তৃণমূল। বামেদের সঙ্গে জোট গড়েও তা ধরে রাখতে পারেনি কিবা কংগ্রেস কিবা বাম।
এমনকি বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ৬টিতেই এগিয়ে ছিল তৃণমূল। শুধুমাত্র বহরমপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে ৪ হাজার ভোটের মার্জিনে জয়ী হতে সক্ষম হন অধীরবাবু।
কাজেই মুর্শিদাবাদ যে আর তাঁর গড় নয় বা কংগ্রেসের ঘাঁটি নয় সেটা বুঝে গিয়েই এবার ধাপে ধাপে মমতা বা তৃণমূল বিরোধীতার সুর অনেকটাই নামিয়ে এনেছেন অধীরবাবু। এখন দেখার বিষয় শেষ পর্যন্ত কার ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে, প্রদীপ না অধীর!