মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে শুভেন্দু, সৌজন্যের রাজনীতিতে পঞ্চায়েত ভোটটা নির্বিঘ্নে হবে কী?
দ্য় কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শুক্রবার বাংলার সবচেয়ে বড় খবর ছিল দুটো। প্রথমটা হল কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “নির্বাচন কমিশনকে বলব তৃণমূলের প্রতীক বাতিল করে দিতে!” এই নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হচ্ছে।
কুণাল ঘোষরা যাবতীয় রীতিনীতি, শিষ্টাচার ভুলে সরাসরি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন। আর দ্বিতীয় খবরটা হল, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে বিরোধী দলনেতার যাওয়া। অর্থাৎ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে যান শুভেন্দু অধিকারী!
২০১৯ এর ডিসেম্বর মাসের শেষ থেকে রাজ্য রাজনীতির যে চলন তাতে মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে শুভেন্দু অধিকারীর পৌঁছে যাওয়াটা বিস্ময়কর তো বটেই। একাধিকবার নাম না করে বেগম, কম্পার্টমেন্টাল চিফ মিনিস্টার বলে তিনি আক্রমণ করেছেন। পাল্টা মমতাও নিয়ম করে গদ্দার বলে কটাক্ষ করেন বিরোধী দলনেতাকে। সেই দুজনের মধ্যে এই পারস্পরিক সৌজন্য প্রকাশ চাঞ্চল্য তো ফেলবেই।
মমতার পথে হেঁটে অভিষেককে চা পানের নিমন্ত্রণ! নিজের রাজনৈতিক ওজনের খেয়াল আছে তো দিব্যেন্দুর
শোনা যাচ্ছে, শুভেন্দু অধিকারী নাকি ঘরে ঢুকে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করেন। পাল্টা মমতা তাঁকে স্নেহ করা ও শিশির অধিকারীর প্রতি তাঁর কতটা শ্রদ্ধা তা জানান। ফলে রাজনীতির কারবারিরা কেউ কেউ এতে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছেন।
তবে আমজনতার দিক থেকে কৌতুহলের আরেকটা দিক আছে। পঞ্চায়েত ভোট হবে ২৩ এর এপ্রিল-মে মাস নাগাদ। কিন্তু তার ঢের আগে থেকে বোমা-গুলির তাণ্ডবে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে মানুষ। এমনকি শাসকদলের নেতার আত্মীয়রাও তার বলি হচ্ছে।
গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বলি হচ্ছেন খোদ তৃণমূল নেতা। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী-বিরোধী দলনেতার সৌজন্য সাক্ষাতের পর কেউ কেউ আশার আলো দেখতে চাইছেন। তাঁদের মতে, এর ফলে বাংলায় রাজনৈতিক হানাহানি যদি কমে তাতে সকলেরই ভাল।
তবে এই অংশের আশা আদৌ পূর্ণ হবে কিনা সন্দেহ আছে। কারণ মমতা-শুভেন্দু একে অপরকে উদ্দেশ্য করে গরম গরম কথার বলেন ঠিকই। কিন্তু তাঁরা দলের কর্মীদের মারামারি করতে বলেছেন এমনটা নয়। আসলে পুরোটাই নিচুতলার ক্ষমতা দখল ও করে খাওয়ার হিসেব। উঁচুতলার নেতাদের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ভোট আসলেই রক্ত ঝরাটাই নিয়মে পরিণত হয়েছে এই বাংলায়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘরে শুভেন্দু অধিকারীর ছুটে যাওয়ায় খুব আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।