বিজেপির আশ্রয় না পেলে উঠে যেত তৃণমূলশুভেন্দু অধিকারী
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শনিবার দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তুলে দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের পতাকা। মঙ্গলবার পুর্বস্থলীতে প্রথম বিজেপির পতাকায় জনসভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। সঙ্গে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেই মঞ্চ থেকেই তৃণমূলকে একহাত নিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
পুর্বস্থলীর সভামঞ্চ থেকে নব্য বিজেপি সদস্যের বক্তব্যে উঠে এল প্রাক্তন দল বিরোধিতায় একাধিক মন্তব্য। একইসঙ্গে শোনা গেল নন্দীগ্রাম আন্দোলনে এনডিএর ভুমিকাও। একেবারে সরাসরি প্রাক্তন দল তৃণমূলের দিকে প্রশ্নও ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, ১৯৯৮ এবং ১৯৯৯ এর লোকসভা আসনে লড়াই করেছে তৃণমূল। কিন্তু যদি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী এবং বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা লালকৃষ্ণ আদবানীর আশ্রয় না দিলে গোটা তৃণমূল দলটাই তখন উঠে যেত।
শনিবার শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পর তাঁকে নিয়ে কম জল্পনা হয়নি। তাঁকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে কটাক্ষ করেছেন তারই একসময়ের সতীর্থরা। এদিন সভামঞ্চ থেকে পাল্টা জবাব দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, আমি নৈতিকতা বিসর্জন দিইনি। আমি ২৭ নভেম্বর সমস্ত মন্ত্রীপদ থেকে ইস্তফা দিয়েছি, আমি বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিল পরে তৃণমূলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরেই বিজেপিতে যোগদান করেছি। আমি নৈতিকতার জায়গা থেকে ঠিক থেকেছি।
আরও পড়ুনঃ আর নয় রাজনৈতিক সঙ্কট, শান্তি চাইছে পাহাড়বাসী
রাজ্য রাজনীতিতে গণআন্দোলনের একজন অন্যতম নেতা বলা হয় শুভেন্দু অধিকারীকে। মেদিনীপুরের দীর্ঘ আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বেড়ে ওঠা শুভেন্দু অধিকারীর। বামেদের একসময়ের গড় মেদিনীপুরে ঘাসফুলের চাষ হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরেই। পুর্বস্থলী মঞ্চ থেকে শুভেন্দুর মুখে উঠে এল নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, সেই সময় এনডিএ টিম পাঠিয়ে নন্দীগ্রামের হত্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিল। সেখানে উপস্থিত ছিলেন লালকৃষ্ণ আদবানী, প্রয়াত সুষমা স্বরাজ এবং বর্তমান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। টানা ৬২ দিনের এনডিএ লড়াই না করলে নন্দীগ্রামে শান্তি ফিরত না। পরে ২০০৭ সালের নির্বাচনে পুর্ব মেদিনীপুরের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা লক্ষ্মণ শেঠের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন শুভেন্দু। সেইসময় তাঁর বিরুদ্ধে লড়াই করার ক্ষমতা কেউ প্রকাশ করেনি।
বর্তমান রাজ্যের শাসক দলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যাদের আত্মসম্মান রয়েছে তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেস করতে পারে না। এখন দলটা কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিজেপিতে যোগ দেওয়ার সময় আমি শুধুমাত্র একটাই শর্ত রেখেছিলাম, “তোলাবাজ ভাইপোর হাত থেকে বাংলাকে বাঁচান”। পরিবর্তনের পরিবর্তন চাই । পুর্বস্থলীর মঞ্চ থেকে আহবান শুভেন্দু অধিকারীর।
এত বছর পরেও “যমের দুয়ারে সরকার” আসছে। কার্ড হবে কিন্তু কোনও টাকা পাবেন না। রাজ্যে শিল্প নেই। ২০১৪ এর পর থেকে সরকারী চাকরীতে নিয়োগ নেই। শুধুমাত্র দুই হাজার চার হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। এতে সংসার চলে না। সমকাজে সমবেতন দিতে হবে বলে দাবী করে তিনি। অন্ধকারে রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
নির্বাচনের কয়েকমাস বাকি থাকলেও ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় সভা শুরু করেছে বিজেপি। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সেখানেই দলীয় নেতাদের হোমওয়ার্ক দিয়ে যান অমিত শাহ। আর সেই নির্দেশমতোই ডিসেম্বর থেকে জনসভা শুরু করেছেন শুভেন্দু। শাসক দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন শুভেন্দু। তারই বক্তব্যে সরকার বিরোধী মন্তব্য বিজেপিকে জায়গা করে দেবে বলে মনে করছেন গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্ব।