শহীদ দিবস পালনে কোচবিহারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে, পার্থর তোলা পতাকা নামিয়ে দিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ !

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ শহীদ দিবসের দিনেও বাদ গেলোনা তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল। কোচবিহারে আরও একবার প্রকাশ্যে এলো পার্থপ্রতিম বনাম রবীন্দ্রনাথ ঘোষের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। জেলা কার্যালয়ে এক ঘন্টার ব্যবধানে দলীয় পতাকা নামিয়ে ফের তোলা হলো। এই ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।

কোচবিহার শহরের মা ভবানী চৌপতি এলাকায় সকাল ন’টা নাগাদ দলীয় কার্যালয়ে জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ও তার অনুগামীরা পতাকা উত্তোলন করেন। সকাল দশটা নাগাদ সেই পতাকা সরিয়ে ফেলা হয়। তারপর ফের পতাকা উত্তোলন করেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর অনুগামীরা। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই চরম কটাক্ষ করেছেন বিরোধীরা।

কোচবিহার তৃণমূল নেতৃত্ব সূত্রে জানা গিয়েছে পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে সকাল দশটা নাগাদ হাজির হন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয় কৃষ্ণ বর্মন সহ তৃণমূলের প্রথম সারির জেলা নেতৃত্বরা। সকাল দশটায় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে পতাকা উত্তোলন করা হবে।

কিন্তু দেখা যায় সকাল ন’টা নাগাদ সেই পতাকা উত্তোলন করেছেন পার্থ প্রতিম রায়। এরপর তিনি পার্টি অফিস ছেড়ে চলেও যান। পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সেই পতাকা নামিয়ে ফের উত্তোলন করেন।

২১ জুলাই: শূন্য থেকে শুরু মমতার ত্রিপুরা অভিযান

পার্থ প্রতিম রায় বনাম রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দ্বন্দ্ব কারো অজানা নয়। কোচবিহার তৃণমূলের একাংশের মতে, এবারে নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে রবি ঘোষের পরাজয়ের পেছনে পরোক্ষভাবে হাত রয়েছে পার্থ প্রতিমের। নির্বাচনের প্রচারের সময় একাধিক জায়গায় দলের অন্দরেই বাধার সম্মুখীন হয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

যদিও এই দিনের ঘটনা নিয়ে পার্থ প্রতিম রায়ের কথায় “আমি জেলা সভাপতি হিসেবে পতাকা উত্তোলন করে অন্যত্র কর্মসূচিতে যোগদান করেছি। পরবর্তীতে রবীন্দ্রনাথ বাবু গিয়ে ফের পতাকা উত্তোলন করেছেন। এটা দলের কর্মসূচি। সকলে উদযাপন করছেন। ফলে বিতর্ক তৈরির জায়গা নেই।”

যদিও এই ঘটনা নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাননি প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁর কথায় “করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে অনুষ্ঠান হচ্ছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠান হলে হাজার হাজার কর্মীরা যোগ দিতেন। কে কী করলেন তা নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নেই। যার যা রুচি সেই অনুযায়ী সে কাজ করবে।”

প্রসঙ্গত সম্প্রতি পার্থপ্রতিম রায়ের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে। ঘটনার নেপথ্যে বিজেপির হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তৃণমূল নেতৃত্বরা। তারপরের দিনই পার্থপ্রতিমের বাড়ি গিয়ে তাঁর বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাতে অনেকেই ভেবেছিলেন এবার হয়ত কোচবিহারে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে একসঙ্গে কাজ করবেন রবি-পার্থ। তবে এদিনে ঘটনা কার্যত সেই দাবি উড়িয়ে দিল।

সম্পর্কিত পোস্ট