চোখের জলে পদত্যাগ রাজীবের, অরূপ রায়কে কাঠগড়ায় তুলে সরব বৈশালী

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ রাজ্য মন্ত্রিসভার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরেই রাজ্য রাজনীতিতে জল্পনা শুরু হয়েছে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে। তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘক্ষন আজ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে বৈঠক করেন। ইস্তফাপত্র তুলে দেন রাজ্যপালের হাতে।গৃহীত হয় সেই ইস্তফা। আপাতত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেড়ে যাওয়া দপ্তর সামলাবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই।

১৬ তারিখ তিনি যখন ফেসবুক লাইভ করেন তখন দলের প্রতি ক্ষোভ জানাতে গিয়ে আবেগ তাড়িত হয়ে পড়েছিলেন। দীপ্ত কন্ঠে দলের একাধিক সিদ্ধান্তের সমালোচনায় মুখর হলেও সেদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আবেগপ্রবণ ছিলেন। অন্যথা হয়নি আজও।

সাংবাদিক সম্মেলনে নিজের ইস্তফার কারণ জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তির অধিকারী। একই সঙ্গে তিনি যার পরিচয় জনমানুষের পরিচিত হয়েছেন সেই নেত্রীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে কৃতজ্ঞতাও জানান তিনি।

কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন বটে। আর এদিনের চোখের জল অন্তত সেটাই প্রমাণ করল। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় দলের মুষ্টিমেয় কয়েকজন নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ। তবে নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আজীবন আনুগত্য শিকার করবেন বলেও জানালেন।

রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে মর্যাদা দেয়নি দল, ক্ষোভ প্রকাশ কর্মীদের

তিনি বললেন রাজনীতির ময়দানে থাকবেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের মতে, চোখের জলে পুরনো দলকে বিদায় জানিয়ে হয়তো খুব শীঘ্রই নতুন প্লাটফর্মে দেখা যাবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গত একমাসে সতীর্থদের মন্তব্য ব্যক্তিগতভাবে আমাকে আহত করেছে। আমি ভগ্ন হৃদয়। তার থেকেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি । আমি কোনোদিন ভাবিনি আমাকে এইরকম জায়গায় এসে দাঁড়াতে হবে।

প্রসঙ্গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যজুড়ে রাজনীতির অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে ব্যক্তিগত আক্রমণ। কে কাকে কতটা কদর্য ভাষায় ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করতে পারেন সেটাই যেন মূলমন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজনীতিবিদদের মতে,  রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে মুখ খুলেছেন অনেকেই। বিশেষত হাওড়ার চেয়ারম্যান অরূপ রায়ের কথা না বললেই নয়।

তাকে কটাক্ষ করে বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া জানিয়েছেন হাওড়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নকে জেলার কিছু নেতা নিজের হাতে করে শেষ করে দিলেন। তাই মন্ত্রীদের অবস্থা এখন ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে কাজ করতে গিয়ে বিভিন্ন সময় বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাদের। এরাই তো আসল উইপোকা। যারা দলটাকে কুরে-কুরে শেষ করে দিচ্ছেন। কেন তাদের ধরা হচ্ছে না ? তাদের দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে কেন? সেটাই প্রশ্ন তুললেন বৈশালী।

পাশাপাশি তিনি আরো মন্তব্য করেন যারা১০ জনকে তাড়িয়ে দিচ্ছেন সেই একটা লোককে কি খুব দরকার? বুঝতে পারছিনা। লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফার প্রত্যক্ষ অরূপ রায় প্রধান কারণ ছিলেন বলে লক্ষ্মীরতন শুক্লার ঘনিষ্ঠ সূত্র মারফত জানা গিয়েছিল। আর রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অরূপ রায়ের যে বিবাদ হাওড়ার প্রত্যেকেই জানেন।

বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লক্ষ্মীরতন শুক্লার পক্ষে। সেইসঙ্গে হাওড়ার প্রাক্তন মেয়র  রথীন চক্রবর্তীও যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষে নতুন করে মনে করার দরকার নেই।
আবেগ তাড়িত রাজীব রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কোন দিকে এগোন আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে রাজ্যের সাধারণ মানুষ।

সম্পর্কিত পোস্ট