“বিজেপি কর্মীরা ফিরতে পারছেন না ঘরে, পুলিশ চাপ দিচ্ছে তৃণমূলে যোগ দিতে”- রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জন বারলার

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ সাতদিনের উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বারলা পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে দার্জিলিঙের রাজভবনে হাজির হলেন। সেখানেই রাজ্যপালের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন তারা। দফায় দফায় ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ উঠে আসে।

রাজ্যে নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে খোদ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর সরব। এই বিষয়ে দিল্লিতেও ছুটে যান তিনি। সোমবার পাহাড় সফরে আসার পর তাঁকে একই বিষয় নালিশ করলেন উত্তরবঙ্গের দুই সাংসদ।

রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের কাছে তাঁরা জানান, “বিজেপি কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে। ভয় দেখানো হচ্ছে।” এদিন কুমার গ্রাম পঞ্চায়েতের ১০ জন সদস্যকে নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তারা।  সকলেই ঘরছাড়া রয়েছেন বেশ কয়েকদিন ধরে। এমনটাই জানান সাংসদ।

এদিনের বৈঠকে উত্তরবঙ্গ পৃথক রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের যে দাবি তুলেছেন তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলেই জানান। রাজভবন থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে জন বারলা জানান, “আমি নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। পৃথক রাজ্য নিয়ে এদিন কোন কথা হয়নি। যে ১০ জন সদস্য কুমারগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘর ছাড়া রয়েছেন, তারা তৃণমূল কর্মীদের হাতে অত্যাচারিত। পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনো সুরাহা হয়নি। অথচ গোটা ঘটনায় পুলিশ উল্টে পুলিশ তাদের তৃণমূলে যোগদান করতে উপদেশ দিচ্ছেন।”

একইসঙ্গে শাসকদলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, “কোনরকম সাহায্য বা সুরক্ষা আমরা পাইনি প্রশাসনের তরফ থেকে। পঞ্চায়েত সদস্যরা নিজেদের বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। তাদেরকে আমার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলাম। জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে গোটা বিষয়টি জানানো সত্ত্বেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি প্রশাসনের তরফে। উল্টে থানার আইসি ফোন করে হুমকি দিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ না দিলে এর ফল ভালো হবে না।”

ছাত্র-ছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার জন্য সহজে শিক্ষা ঋণ, চালু হচ্ছে ‘স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড’

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এদিন তাঁরা রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। সাংসদের দাবি, অবিলম্বে ঘরছাড়াদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হোক শাসক দলের তরফে। কারন এরা কেউ ফিরতে পারছেন না ভয়ে। একই সঙ্গে তিনি জানান রাজ্যপাল তাদের আশ্বাস দিয়েছেন আইন আইনের পথে চলবে। আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়।

পৃথক রাজ্যের যে দাবি তিনি তুলেছিলেন সেই প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “যা বলার দিল্লিতেই বলবো।” নির্বাচন পরবর্তী হিংসা নিয়ে মানবাধিকার কমিশনেও নালিশ জানানো হবে বলে দিন জন বারলা জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত আজই জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ১৬ জনের একটি দল রাজ্যে এসে পৌঁছেছে। তাদের মধ্যে ৮ জন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করতে পৌঁছে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। কোচবিহার, শিলিগুড়ি আলিপুরদুয়ার সহ বিভিন্ন জায়গায় তারা পরিদর্শন করবেন।

উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ ও কলকাতার পৃথক পৃথক রিপোর্ট তারা আদালতে জমা দেবেন বলে জানা গিয়েছে। হাইকোর্টের তরফ রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের এই প্রতিনিধি দলকে সবরকমের সহযোগিতা করার। অন্যথায় রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে হাইকোর্ট।

সম্পর্কিত পোস্ট