আগামী অধিবেশনেই বিধান পরিষদের বিল আনতে পারে মমতা, ঠাঁই পাচ্ছেন সম্ভাব্য যারা…
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্ক: আগামী ২ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে বিধানসভার বাজেট অধিবেশন। আগামী অধিবেশনে আলোচনা হতে পারে বিধানসভা বিল নিয়ে। বিধানসভা সূত্রে খবর, ক্ষমতায় আসার পরেই বিধান পরিষদ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়। এখন কুর্শি রক্ষার জন্যক তড়িঘড়ি বিল আনতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়।
মমতার মুখ্যমন্ত্রী মেয়াদের কথা ভেবেই দ্রুত বিধান পরিষদের বিল আনতে চাইছে রাজ্যের শাসক দল। কিন্তু সমস্যা এখানেও৷ কারণ, বিধানসভার পর বিল পাশ হতে গেলে রাজ্যপাল হয়ে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের প্রয়োজন৷ সেক্ষেত্রে লেগে যেতে পারে অনেকটা সময়। তাই বিধান পরিষদের ওপর নির্ভর করছে মমতার ভাগ্য। সেইসঙ্গে আটকে যেতে পারেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও।
নন্দীগ্রামে বিজেপি প্রার্থী শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়ে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হওয়ার কথা ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেজন্য রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় জয়ী হয়েও ভবানীপুর কেন্দ্রের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের অজুহাতে উপনির্বাচন এখন অতীত। তাই বিধান পরিষদের মাধ্যমে ঘুরপথে মুখ্যমন্ত্রী আসনে বসতে পারেন মমতা।
তৃতীয়বার সরকার গঠনের পর ১৭ মে মন্ত্রীসভার বৈঠকে বিধান পরিষদের প্রস্তাব পেশ হয়েছে। ওই তালিকায় বেশ কিছু তৃণমূলের পোড় খাওয়া নেতাদের নাম উঠে আসছে। বিশেষ করে যারা ২১ নির্বাচনের প্রার্থী হননি, যারা পরাজিত হয়েছেন তাঁদের বেশকিছু নাম নিয়ে জল্পনা দেখা দিয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছেন বর্ষীয়ান নেতা এবং মমতার বহুদিনের সাথী পুর্ণেন্দু বসু। কারণ, গত দু’দফায় মন্ত্রী হলেও বয়সের কারণে এবার টিকিট পাননি তিনি। তবে দলনেত্রীর কথায় বিধানসভায় পুর্ণেন্দু বসুর জন্য জায়গা বরাদ্দ করেছেন তিনি।
বন্ধ টালা ব্রিজ, কলকাতা স্টেশন লাগোয়া এলাকায় দুটি নতুন সেতুর উদ্যোগ KMDA-র
তালিকায় রয়েছেন অমিত মিত্র। দুই দফায় মমতার কেবিনেটে অর্থ মন্ত্রক সামলেছেন। অনেকেই মনে করেন, তাঁর মতো বিচক্ষণ মানুষের উপস্থিতির কারণেই দু’দফার পর তৃতীয় সরকার আসতে অনেকটা সাহায্য করেছে। তৃতীয় দফাতেও তিনিই অর্থমন্ত্রী। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা এবং বয়সের ভারে টিকিট নিতে চাননি খড়দার প্রাক্তন বিধায়ক। ২১ এর বিধানসভায় জয়ী প্রার্থী কাজল সিনহার মৃত্যুর পর ওই কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হতে পারেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়।
এই তালিকায় উত্তরবঙ্গ থেকে বেশ কিছু পরাজিত প্রার্থীদের নাম উঠে আসছে। বেশীরভাগ গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রাক্তন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম দেবকে নিয়েও। বিধান পরিষদে জায়গা হতে পারে প্রাক্তন মন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনের। পশ্চিমাঞ্চল থেকে জায়গা পেতে পারেন শান্তিরাম মাহাতো। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, প্রাক্তন মন্ত্রীদের পুনরায় বিধানসভায় আনতে চান মমতা।
নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্যের আইনসভার দুটি কক্ষ। তার মধ্যে বিধান পরিষদ হল উচ্চকক্ষ। নিম্ন কক্ষ হল বিধানসভা। বিধান পরিষদের সদস্যের সংখ্যা বিধানসভার সদস্যদের এক তৃতীয়াংশের বেশী হলে চলবে না। এই মুহুর্তে বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানায় রয়েছে বিধান পরিষদ। ১৯৬৯ সালে আগে অবধি পশ্চিমবঙ্গেও বিধান পরিষদ ছিল। কিন্তু বাংলা কংগ্রেস এবং বাম সরকারের যুক্তফ্রন্টের দ্বারা আইন করে তা বাতিল করা হয়। এখন নিজের আসন রক্ষার তাগিদে ফের বিধান পরিষদ গঠন করতে চাইছেন মমতা।