‘বিকাশ’-র মাধ্যমে টাকা আদানপ্রদান করে সংগঠনের কাজে লাগাত লালু
দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ হরিদেবপুরের তিন জেএমবি জঙ্গি গ্রেপ্তারের পর তদন্ত সূত্র ধরে বৃহস্পতিবার জঙ্গী সন্দেহে বারাসাতের মধুমুরালি থেকে গ্রেফতার করা হয় বছর ৩৮-র রাহুল সেন ওরফে লালুকে। এরপর তদন্তকারী অফিসাররা জানতে পারেন লালুর স্ত্রী বাংলাদেশের বাসিন্দা। পেশায় আইনজীবী। লালুর বাড়ি তল্লাশি করে দুটি ল্যাপটপ, একটি আইপ্যাড, দুটি মোবাইল ফোন এবং একাধিক নথি উদ্ধার করেছে তদন্তকারী অফিসাররা।
লালুকে জিজ্ঞেস করে জানা গিয়েছে হরিদেবপুরের তিন জঙ্গির পরিচয় পত্র তৈরি করা থেকে হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পয়সা দিয়ে সাহায্য করতেন তিনি। এরপরে লালুর কল লিস্ট চেক করে মিলল আর এক জঙ্গি সেলিম মুন্সি নম্বর।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে লালুই সেলিম মুন্সীকে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এছাড়াও লালুকে জেরা করে উঠে এসেছে একাধিক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছেন গোয়েন্দারা।
সেলিম মুন্সি মূলত বাকি ৩ জঙ্গির থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল। বাংলাদেশ থেকে টাকা তোলার কাজে সাহায্য করত। সেই সমস্ত টাকা ব্যবহার করা হতো সংগঠনের কাজে। জেলায় লালু স্বীকার করেছে, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শ্রমিকদের কাজের পাঠাতো সে। সেখানেই তাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ চলত। সেই ব্যবসা থেকে মোটা টাকা লভ্যাংশ পেত লালু।
সম্প্রতি হরিদেবপুর থেকে জেএমবির যে মডিউলকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার লিঙ্কম্যান হিসেবে লালু ছিল, তা জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। দ্রুত তিনজনকে জিজ্ঞাসা করে লালুর নাম উঠে আসার পরেই বারাসাত থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ওই তিনজন জানিয়েছে লালু তাদেরকে লজিস্টিক সাপোর্ট দিত। অর্থাৎ বিভিন্ন নথি জাল করে দেওয়ার ক্ষেত্রে লালুর ভূমিকা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। লালু গ্রেফতার করার পরেই বাংলাদেশের সঙ্গে লালুর সরাসরি যোগাযোগের কথা প্রমাণ হয়েছিল।
বামপন্থী উদীচী সংগঠনে বোমা হামলা, JMB জঙ্গির ফাঁসি বাংলাদেশে
জঙ্গী কার্যকলাপ চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় টাকা লেনদেন হত বাংলাদেশের মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস সংস্থা ‘বিকাশ’র মাধ্যমে। ওই মোবাইল সার্ভিস সংস্থার মাধ্যমে লালুর কাছে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় টাকা পাঠাত জামাতুল মুজাহিদিনের সদস্যরা। এরপর সেই টাকা যথাস্থানে পাঠিয়ে দিত লালু।
২০১৫ সালে বাংলাদেশ হিউম্যান ট্রাফিকিং-এ গ্রেফতার হন রাহুল। জেলেই তাঁর পরিচয় হয় আল আমিনের সঙ্গে। সেখানেই এই জঙ্গি সংগঠনের জন্য টাকা তোলার দায়িত্ব নিয়ে জেল থেকে বেরোয় রাহুল। বাইরে এসে পুরনো গাড়ি কেনাবেচার ব্যবসা শুরু করে রাহুল ও তার শাগরেদ হৃদয়।
সেখান থেকে যা আয় হত তা সংগঠনের কাজে ব্যবহার করা হত। আর এক ধৃত জঙ্গি নাজিউরকে আফগানিস্তানের পাঠানোর ব্যবস্থা করছিল এই রাহুল। ইতিমধ্যে নাজিউর পাসপোর্টও তৈরি করে ফেলেছিল। কিন্তু তার আগেই পুলিশের জালে ধরা পড়ে যান নাজিউর।