বড় বিজেপি হয়ে ওঠার দায় থেকেই রাহুলকে নিয়ে নোংরা মন্তব্য অসমের মুখ্যমন্ত্রীর

দ্য কোয়ারি ওয়েবডেস্কঃ অন্য দল থেকে বিজেপিতে গেলে সেই নেতাকে বোধহয় প্রতিমুহূর্তে প্রমাণ দিতে হয় তিনি অতি বড় বিজেপি! এই যেমন অর্জুন সিং প্রায় প্রতিদিন নিয়ম করে শিষ্টাচার না মেনে কদর্য ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করেন। এটাই বোধহয় বিজেপির নিয়ম। রাহুল গান্ধিকে নিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কদর্য ইঙ্গিতের পর এই ধারণা আরও বেশি বদ্ধমূল হচ্ছে।

উত্তরাখণ্ডে ভোট প্রচারে গিয়ে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাহুল গান্ধী যে সেনাবাহিনীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চাইছেন প্রতি মুহূর্তে, আমরা কি ওনার কাছে প্রমাণ চেয়েছি যে উনি রাজীব গান্ধির এই সন্তান!

এই নোংরা কথা একজন সাধারন মানুষ তাঁর প্রতিবেশীকেও বলতে পারে না। সেখানে রাহুল গান্ধির মতো দেশের বিরোধীপক্ষের শীর্ষস্থানীয় নেতার সম্বন্ধে একজন মুখ্যমন্ত্রী কি করে এই মন্তব্য করলেন তা সত্যিই বিস্ময়কর! হিমন্ত বিশ্ব শর্মা কি নিজের পদমর্যাদার কথা বিস্মৃত হয়েছেন?

অসমে কংগ্রেসের দাপুটে নেতা ছিলেন এই হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। সাংগঠনিক স্তরে তাঁর দক্ষতা থাকলেও তরুণ গগৈয়ের মতো জননেতা ও গান্ধিবাদীকে বাদ দিয়ে তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করতে চায়নি কংগ্রেস। কিন্তু দলীয় সংগঠনে, রাজ্য মন্ত্রিসভায় যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে।

তা সত্ত্বেও এই ক্ষমতালোভী নেতা যাবতীয় আদর্শকে জলাঞ্জলি দিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন। তাঁর বিদ্বেষের রাজনীতির উপর ভর করেই টানা দ্বিতীয়বার অসমের ক্ষমতা ধরে রাখে বিজেপি। কিন্তু সে রাজ্যে দ্বিতীয় বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েই হিমন্ত বিশ্ব শর্মা যেন সবচেয়ে বড় বিজেপি হয়ে ওঠার প্রতিযোগিতায় মেতে ওঠেন।

অসমের মুখ্যমন্ত্রী মূল বক্তব্য, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কাজ নিয়ে কেন প্রশ্ন তোলা হবে? আসলে এটা বিজেপির গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা। যাতে মানুষের আবেগকে পুঁজি করে তাদের রাজনীতি করার ছক ফাঁস না হয়ে যায়। ভারতীয় সেনাবাহিনীকে নিয়ে বিরোধীরা আজও পর্যন্ত একটিও প্রশ্ন তোলেনি।

পরীক্ষিত মুখেই ভরসা রাখলেন মমতা, ভিন রাজ্যের অপরীক্ষিত নেতারা ঠাঁই পেল না কর্মসমিতিতে

সেনাবাহিনীর প্রতি সকলের সমান শ্রদ্ধা ও সম্মান অটুট আছে। কিন্তু সেনাবাহিনীর নাম করে বিজেপি ভোটে যে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে সেইটার‌ই সত্যতা জানতে চাওয়া হয়েছে। রাহুল গান্ধি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নিয়ে সেই সত্যতাই জানতে চেয়েছেন সরকারের কাছে।

কারণ নরেন্দ্র মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর বারবার দেখা গিয়েছে সেনাবাহিনীর নামে মিথ্যাচার করে বিজেপি জাতীয়তাবাদের ভাবাবেগ উস্কে ভোটবাক্সে ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে।

নিজেদের কাছে উত্তর না থাকার অস্বস্তিতে ঢাকতেই হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্ভবত রাহুল গান্ধীর পিতৃপরিচয় নিয়ে এই কদর্য মন্তব্য করেছেন। ইতিমধ্যেই দেশের একাধিক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন। তবে ক্ষমতালোভী বিজেপি সেই দাবি শুনবে বলে মনে হয় না।

সম্পর্কিত পোস্ট